দ্বৈত
Verses
সেদিন ছিলে তুমি আলো-আঁধারের মাঝখানটিতে,
                 বিধাতার মানসলোকের
                      মর্ত্যসীমায় পা বাড়িয়ে
                        বিশ্বের রূপ-আঙিনার নাছদুয়ারে।
       যেমন ভোরবেলার একটুখানি ইশারা,
          শালবনের পাতার মধ্যে উসুখুসু,
              শেষরাত্রের গায়ে-কাঁটা-দেওয়া
                    আলোর আড়-চাহনি;
              উষা যখন আপন-ভোলা--
       যখন সে পায় নি আপন ডাক-নামটি পাখির ডাকে,
            পাহাড়ের চূড়ায়, মেঘের লিখনপত্রে।
       তার পরে সে নেমে আসে ধরাতলে,
               তার মুখের উপর থেকে
            অসীমের ছায়া-ঘোমটা খসে পড়ে
               উদয়-সাগরের অরুণরাঙা কিনারায়।
            পৃথিবী তাকে সাজিয়ে তোলে
              আপন সবুজ-সোনার কাঁচলি দিয়ে;
            পরায় তাকে আপন হাওয়ার চুনরি।
       তেমনি তুমি এনেছিলে তোমার ছবির তনুরেখাটুকু
              আমার হৃদয়ের দিক্‌প্রান্তপটে।
       আমি তোমার কারিগরের দোসর,
            কথা ছিল তোমার রূপের 'পরে মনের তুলি
আমিও দেব বুলিয়ে,
                   পুরিয়ে তুলব তোমার গড়নটিকে।
                        দিনে দিনে তোমাকে রাঙিয়েছি
                             আমার ভাবের রঙে।
                   আমার প্রাণের হাওয়া
            বইয়ে দিয়েছি তোমার চারি দিকে
                 কখনো ঝড়ের বেগে
                      কখনো মৃদুমৃদু দোলনে।
       একদিন আপন সহজ নিরালায় ছিলে তুমি অধরা,
              ছিলে তুমি একলা বিধাতার;
                   একের মধ্যে একঘরে।
          আমি বেঁধেছি তোমাকে দুয়ের গ্রন্থিতে,
       তোমার সৃষ্টি আজ তোমাতে আর আমাতে,
          তোমার বেদনায় আর আমার বেদনায়।
            আজ তুমি আপনাকে চিনেছ
                 আমার চেনা দিয়ে।
       আমার অবাক চোখ লাগিয়েছে সোনার কাঠির ছোঁওয়া,
                    জাগিয়েছে আনন্দরূপ
                        তোমার আপন চৈতন্যে।
আরো দেখুন
দুরাশা
Stories
দার্জিলিঙে গিয়া দেখিলাম, মেঘে বৃষ্টিতে দশ দিক আচ্ছন্ন। ঘরের বাহির হইতে ইচ্ছা হয় না, ঘরের মধ্যে থাকিতে আরো অনিচ্ছা জন্মে।
হোটেলে প্রাতঃকালের আহার সমাধা করিয়া পায়ে মোটা বুট এবং আপাদমস্তক ম্যাকিন্টশ পরিয়া বেড়াইতে বাহির হইয়াছি। ক্ষণে ক্ষণে টিপ্‌ টিপ্‌ করিয়া বৃষ্টি পড়িতেছে এবং সর্বত্র ঘন মেঘের কুজ্ঝটিকায় মনে হইতেছে, যেন বিধাতা হিমালয়পর্বতসুদ্ধ সমস্ত বিশ্বচিত্র রবার দিয়া ঘষিয়া ঘষিয়া মুছিয়া ফেলিবার উপক্রম করিয়াছেন।
আরো দেখুন
দেনাপাওনা
Stories
পাঁচ ছেলের পর যখন এক কন্যা জন্মিল তখন বাপমায়ে অনেক আদর করিয়া তাহার নাম রাখিল নিরুপমা। এ গোষ্ঠীতে এমন শৌখিন নাম ইতিপূর্বে কখনো শোনা যায় নাই। প্রায় ঠাকুরদেবতার নামই প্রচলিত ছিল-- গণেশ, কার্তিক, পার্বতী, তাহার উদাহরণ।
এখন নিরুপমার বিবাহের প্রস্তাব চলিতেছে। তাহার পিতা রামসুন্দর মিত্র অনেক খোঁজ করেন কিন্তু পাত্র কিছুতেই মনের মতন হয় না। অবশেষে মস্ত এক রায়বাহাদুরের ঘরের একমাত্র ছেলেকে সন্ধান করিয়া বাহির করিয়াছেন। উক্ত রায়বাহাদুরের পৈতৃক বিষয়-আশয় যদিও অনেক হ্রাস হইয়া আসিয়াছে কিন্তু বনেদি ঘর বটে।
আরো দেখুন
তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা
Songs
তুমি    সন্ধ্যার মেঘমালা, তুমি আমার সাধের সাধনা,
                   মম    শূন্যগগনবিহারী।
আমি    আপন মনের মাধুরী মিশায়ে তোমারে করেছি রচনা--
                   তুমি    আমারি, তুমি আমারি,
                   মম     অসীমগগনবিহারী॥
          মম    হৃদয়রক্তরাগে তব চরণ দিয়েছি রাঙিয়া,
                   অয়ি    সন্ধ্যাস্বপনবিহারী।
          তব    অধর এঁকেছি সুধাবিষে মিশে মম সুখদুখ ভাঙিয়া--
                   তুমি    আমারি, তুমি আমারি,
                   মম    বিজনজীবনবিহারী॥
মম      মোহের স্বপন-অঞ্জন তব নয়নে দিয়েছি পরায়ে,
                   অয়ি    মুগ্ধনয়নবিহারী
মম      সঙ্গীত তব অঙ্গে অঙ্গে দিয়েছি জড়ায়ে জড়ায়ে--
                   তুমি    আমারি, তুমি আমারি,
                   মম    জীবনমরণবিহারী॥
আরো দেখুন
The Parrot`s Training
Stories
ONCE UPON A time there was a bird. It was ignorant. It sang all right, but never recited scriptures. It hopped pretty frequently, but lacked manners.
Said the Raja to himself: ‘Ignorance is costly in the long run. For fools consume as much food as their betters, and yet give nothing in return.’
আরো দেখুন
যদি তোমার দেখা
Songs
যদি         তোমার দেখা না পাই প্রভু,
                             এবার এ জীবনে
তবে        তোমায় আমি পাই নি যেন
                          সে কথা রয় মনে।
যেন         ভুলে না যাই, বেদনা পাই
                          শয়নে স্বপনে।
                এ সংসারের হাটে
আমার         যতই দিবস কাটে,
আমার         যতই দু হাত ভরে ওঠে ধনে,
তবু            কিছুই আমি পাই নি যেন
                       সে কথা রয় মনে।
যেন           ভুলে না যাই, বেদনা পাই
                       শয়নে স্বপনে।
              যদি আলসভরে
আমি        বসি পথের 'পরে,
যদি         ধুলায় শয়ন পাতি সযতনে,
যেন         সকল পথই বাকি আছে
                     সে কথা রয় মনে।
যেন        ভুলে না যাই, বেদনা পাই
                     শয়নে স্বপনে।
              যতই উঠে হাসি,
ঘরে         যতই বাজে বাঁশি,
ওগো        যতই গৃহ সাজাই আয়োজনে,
যেন         তোমায় ঘরে হয় নি আনা
                     সে কথা রয় মনে।
যেন         ভুলে না যাই, বেদনা পাই
                      শয়নে স্বপনে॥
আরো দেখুন
কৃতঘ্ন শোক
Stories
ভোরবেলায় সে বিদায় নিলে।
আমার মন আমাকে বোঝাতে বসল, 'সবই মায়া।'
আরো দেখুন
182
Verses
I AM LIKE the road in the night listening to the footfalls of its memories in silence.
আরো দেখুন
চোরাই ধন
Stories
মহাকাব্যের যুগে স্ত্রীকে পেতে হত পৌরুষের জোরে; যে অধিকারী সেই লাভ করত রমণীরত্ন। আমি লাভ করেছি কাপুরুষতা দিয়ে, সে-কথা আমার স্ত্রীর জানতে বিলম্ব ঘটেছিল। কিন্তু, সাধনা করেছি বিবাহের পরে; যাকে ফাঁকি দিয়ে চুরি করে পেয়েছি তার মূল্য দিয়েছি দিনে দিনে।
দাম্পত্যের স্বত্ব সাব্যস্ত করতে হয় প্রতিদিনই নতুন করে, অধিকাংশ পুরুষ ভুলে থাকে এই কথাটা। তারা গোড়াতেই কাস্টম্‌ হৌসে মাল খালাস করে নিয়েছে সমাজের ছাড়চিঠি দেখিয়ে, তার পর থেকে আছে বেপরোয়া। যেন পেয়েছে পাহারাওয়ালার সরকারি প্রতাপ, উপরওয়ালার দেওয়া তকমার জোরে; উর্দিটা খুলে নিলেই অতি অভাজন তারা।
আরো দেখুন