দৃষ্টিদান
Stories
শুনিয়াছি, আজকাল অনেক বাঙালির মেয়েকে নিজের চেষ্টায় স্বামী সংগ্রহ করিতে হয়। আমিও তাই করিয়াছি, কিন্তু দেবতার সহায়তায়। আমি ছেলেবেলা হইতে অনেক ব্রত এবং অনেক শিবপূজা করিয়াছিলাম।
আমার আটবৎসর বয়স উত্তীর্ণ না হইতেই বিবাহ হইয়া গিয়াছিল। কিন্তু পূর্বজন্মের পাপবশত আমি আমার এমন স্বামী পাইয়াও সম্পূর্ণ পাইলাম না। মা ত্রিনয়নী আমার দুইচক্ষু লইলেন। জীবনের শেষমুহূর্ত পর্যন্ত স্বামীকে দেখিয়া লইবার সুখ দিলেন না।
আরো দেখুন
ভালোমানুষ
Stories
ছিঃ, আমি নেহাত ভালোমানুষ।
কুসমি বললে, কী যে তুমি বল তার ঠিক নেই। তুমি যে ভালোমানুষ সেও কি বলতে হবে। কে না জানে, তুমি ও পাড়ার লোটনগুণ্ডার দলের সর্দার নও। ভালোমানুষ তুমি বল কাকে।
আরো দেখুন
প্রশ্ন
Stories
শ্মাশান হতে বাপ ফিরে এল।
তখন সাত বছরের ছেলেটি-- গা খোলা, গলায় সোনার তাবিজ--একলা গলির উপরকার জানলার ধারে।
আরো দেখুন
বাচস্পতি
Stories
দাদামশায়, তুমি তোমার চার দিকে যেসব পাগলের দল জমিয়েছিলে, গুণ হিসেব ক'রে তাদের বুঝি সব নম্বর দিয়ে রেখেছিলে?
হ্যাঁ, তা করতে হয়েছে বই-কি। কম তো জমে নি।
আরো দেখুন
নামঞ্জুর গল্প
Stories
আমাদের আসর জমেছিল পোলিটিক্যাল লঙ্কাকাণ্ডের পালায়। হাল আমলের উত্তরকাণ্ডে আমরা সম্পূর্ণ ছুটি পাই নি বটে, কিন্তু গলা ভেঙেছে; তা ছাড়া সেই অগ্নিদাহের খেলা বন্ধ।
বঙ্গভঙ্গের রঙ্গভূমিতে বিদ্রোহীর অভিনয় শুরু হল। সবাই জানেন, এই নাট্যের পঞ্চম অঙ্কের দৃশ্য আলিপুর পেরিয়ে পৌঁছল আণ্ডামানের সমুদ্রকূলে। পারানির পাথেয় আমার যথেষ্ট ছিল, তবু গ্রহের গুণে এপারের হাজতেই আমার ভোগসমাপ্তি। সহযোগীদের মধ্যে ফাঁসিকাঠ পর্যন্ত যাদের সর্বোচ্চ প্রোমোশন হয়েছিল, তাদের প্রণাম করে আমি পশ্চিমের এক শহরের কোণে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় পসার জমিয়ে তুললেম।
আরো দেখুন
রীতিমত নভেল
Stories
'আল্লা হো আকবর' শব্দে রণভূমি প্রতিধ্বনিত হইয়া উঠিয়াছে। একদিকে তিনলক্ষ যবনসেনা, অন্যদিকে তিনসহস্র আর্যসৈন্য। বন্যার মধ্যে একাকী অশ্বত্থবৃক্ষের মতো হিন্দুবীরগণ সমস্ত রাত্রি এবং সমস্ত দিন যুদ্ধ করিয়া অটল দাঁড়াইয়া ছিল কিন্তু এইবার ভাঙিয়া পড়িবে, তাহার লক্ষণ দেখা যাইতেছে। এবং সেইসঙ্গে ভারতের জয়ধ্বজা ভূমিসাৎ হইবে এবং আজিকার ঐ অস্তাচলবর্তী সহস্ররশ্মির সহিত হিন্দুস্থানের গৌরবসূর্য চিরদিনের মতো অস্তমিত হইবে।
হর হর বোম্‌ বোম্‌! পাঠক বলিতে পার, কে ঐ দৃপ্ত যুবা পঁয়ত্রিশজন মাত্র অনুচর লইয়া মুক্ত অসি হস্তে অশ্বারোহণে ভারতের অধিষ্ঠাত্রী দেবীর করনিক্ষিপ্ত দীপ্ত বজ্রের ন্যায় শত্রুসৈন্যের উপরে আসিয়া পতিত হইল? বলিতে পার, কাহার প্রতাপে এই অগণিত যবনসৈন্য প্রচণ্ড বাত্যাহত অরণ্যানীর ন্যায় বিক্ষুব্ধ হইয়া উঠিল?-- কাহার বজ্রমন্দ্রিত 'হর হর বোম্‌ বোম্‌' শব্দে তিনলক্ষ ম্লেচ্ছকণ্ঠের 'আল্লা হো আকবর' ধ্বনি নিমগ্ন হইয়া গেল? কাহার উদ্যত অসির সম্মুখে ব্যাঘ্র-আক্রান্ত মেষষুথের ন্যায় শত্রুসৈন্য মুহূর্তের মধ্যে ঊর্ধ্বশ্বাসে পলায়নপর হইল? বলিতে পার, সেদিনকার আর্যস্থানের সূর্যদেব সহস্ররক্তকরস্পর্শে কাহার রক্তাক্ত তরবারিকে আশীর্বাদ করিয়া অস্তাচলে বিশ্রাম করিতে গেলেন? বলিতে পার কি পাঠক।
আরো দেখুন
ঢাকিরা ঢাক বাজায় খালে বিলে
Verses
                          পাকুড়তলির মাঠে
                   বামুনমারা দিঘির ঘাটে
               আদিবিশ্ব-ঠাকুরমায়ের আস্‌মানি এক চেলা
                          ঠিক দুক্ষুর বেলা
                       বেগ্‌নি-সোনা দিক্‌-আঙিনার কোণে
                   ব'সে ব'সে ভুঁইজোড়া এক চাটাই বোনে
                          হলদে রঙের শুকনো ঘাসে।
               সেখান থেকে ঝাপসা স্মৃতির কানে আসে
                   ঘুম-লাগা রোদ্‌দুরে
                       ঝিম্‌ঝিমিনি সুরে--
                   "ঢাকিরা ঢাক বাজায় খালে বিলে,
               সুন্দরীকে বিয়ে দিলেম ডাকাতদলের মেলে।"
                   সুদূর কালের দারুণ ছড়াটিকে
               স্পষ্ট করে দেখি নে আজ, ছবিটা তার ফিকে।
                   মনের মধ্যে বেঁধে না তার ছুরি,
               সময় তাহার ব্যথার মূল্য সব করেছে চুরি।
                   বিয়ের পথে ডাকাত এসে হরণ করলে মেয়ে,
               এই বারতা ধুলোয়-পড়া শুকনো পাতার চেয়ে
                   উত্তাপহীন, ঝেঁটিয়ে-ফেলা আবর্জনার মতো।
                       দুঃসহ দিন দুঃখেতে বিক্ষত
                   এই-কটা তার শব্দমাত্র দৈবে রইল বাকি,
                       আগুন-নেভা ছাইয়ের মতন ফাঁকি।
                          সেই মরা দিন কোন্‌ খবরের টানে
                              পড়ল এসে সজীব বর্তমানে।
               তপ্ত হাওয়ার বাজপাখি আজ বারে বারে
                              ছোঁ মেরে যায় ছড়াটারে,
               এলোমেলো ভাবনাগুলোর ফাঁকে ফাঁকে
                   টুক্‌রো করে ওড়ায় ধ্বনিটাকে।
               জাগা মনের কোন্‌ কুয়াশা স্বপ্নেতে যায় ব্যেপে,
                   ধোঁয়াটে এক কম্বলেতে ঘুমকে ধরে চেপে,
                       রক্তে নাচে ছড়ার ছন্দে মিলে--
                   "ঢাকিরা ঢাক বাজায় খালে বিলে।'
               জমিদারের বুড়ো হাতি হেলে দুলে চলেছে বাঁশতলায়,
                          ঢঙ্‌ঢঙিয়ে ঘন্টা দোলে গলায়।
               বিকেলবেলার চিকন আলোর আভাস লেগে
                   ঘোলা রঙের আলস ভেঙে উঠি জেগে।
                       হঠাৎ দেখি, বুকে বাজে টন্‌টনানি
                   পাঁজরগুলোর তলায় তলায় ব্যথা হানি।
                       চটকা ভাঙে যেন খোঁচা খেয়ে--
                   কই আমাদের পাড়ার কালো মেয়ে--
               ঝুড়ি ভ'রে মুড়ি আনত, আনত পাকা জাম,
                          সামান্য তার দাম,
                       ঘরের গাছের আম আনত কাঁচামিঠা,
                   আনির স্থলে দিতেম তাকে চার-আনিটা।
                       ওই যে অন্ধ কলুবুড়ির কান্না শুনি--
                    কদিন হল জানি নে কোন্‌ গোঁয়ার খুনি
                          সমত্থ তার নাতনিটিকে
                   কেড়ে নিয়ে ভেগেছে কোন্‌ দিকে।
               আজ সকালে শোনা গেল চৌকিদারের মুখে,
                   যৌবন তার দ'লে গেছে, জীবন গেছে চুকে।
                       বুক-ফাটানো এমন খবর জড়ায়
                          সেই সেকালের সামান্য এক ছড়ায়।
                   শাস্ত্রমানা আস্তিকতা ধুলোতে যায় উড়ে--
               "উপায় নাই রে, নাই প্রতিকার' বাজে আকাশ জুড়ে।
                   অনেক কালের শব্দ আসে ছড়ার ছন্দে মিলে--
                       "ঢাকিরা ঢাক বাজায় খালে বিলে।'
               জমিদারের বুড়ো হাতি হেলে দুলে চলেছে বাঁশতলায়,
                          ঢঙ্‌ঢঙিয়ে ঘন্টা দোলে গলায়।
আরো দেখুন
নিশীথে
Stories
'ডাক্তার! ডাক্তার!'
জ্বালাতন করিল! এই অর্ধেক রাত্রে--
আরো দেখুন