অসম্ভব কথা
Stories
এক যে ছিল রাজা।
তখন ইহার বেশি কিছু জানিবার আবশ্যক ছিল না। কোথাকার রাজা, রাজার নাম কী, এ সকল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিয়া গল্পের প্রবাহ রোধ করিতাম না। রাজার নাম শিলাদিত্য কি শালিবাহন, কাশী কাঞ্চি কনোজ কোশল অঙ্গ বঙ্গ কলিঙ্গের মধ্যে ঠিক কোন্‌খানটিতে তাঁহার রাজত্ব, এ সকল ইতিহাস-ভূগোলের তর্ক আমাদের কাছে নিতান্তই তুচ্ছ ছিল,-- আসল যে-কথাটি শুনিলে অন্তর পুলকিত হইয়া উঠিত এবং সমস্ত হৃদয় একমুহূর্তের মধ্যে বিদ্যুদ্বেগে চুম্বকের মতো আকৃষ্ট হইত সেটি হইতেছে-- এক যে ছিল রাজা।
আরো দেখুন
হৈমন্তী
Stories
কন্যার বাপ সবুর করিতে পারিতেন, কিন্তু বরের বাপ সবুর করিতে চাহিলেন না। তিনি দেখিলেন,মেয়েটির বিবাহের বয়স পার হইয়া গেছে, কিন্তু আর কিছুদিন গেলে সেটাকে ভদ্র বা অভদ্র কোনো রকমে চাপা দিবার সময়টাও পার হইয়া যাইবে। মেয়ের বয়স অবৈধ রকমে বাড়িয়া গেছে বটে, কিন্তু পণের টাকার আপেক্ষিক গুরুত্ব এখনো তাহার চেয়ে কিঞ্চিৎ উপরে আছে, সেইজন্যই তাড়া।
আমি ছিলাম বর। সুতরাং, বিবাহসম্বন্ধে আমার মত যাচাই করা অনাবশ্যক ছিল। আমার কাজ আমি করিয়াছি, এফ.এ. পাস করিয়া বৃত্তি পাইয়াছি। তাই প্রজাপতির দুই পক্ষ, কন্যাপক্ষ ও বরপক্ষ ঘন ঘন বিচলিত হইয়া উঠিল।
আরো দেখুন
প্রতিহিংসা
Stories
মুকুন্দবাবুদের ভূতপূর্ব দেওয়ানের পৌত্রী, বর্তমান ম্যানেজারের স্ত্রী ইন্দ্রাণী অশুভক্ষণে বাবুদের বাড়িতে তাঁহাদের দৌহিত্রের বিবাহে বউভাতের নিমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন।
তৎপূর্বকার ইতিহাস সংক্ষেপে বলিয়া রাখিলে কথাটা পরিষ্কার হইবে।
আরো দেখুন
দুরাশা
Stories
দার্জিলিঙে গিয়া দেখিলাম, মেঘে বৃষ্টিতে দশ দিক আচ্ছন্ন। ঘরের বাহির হইতে ইচ্ছা হয় না, ঘরের মধ্যে থাকিতে আরো অনিচ্ছা জন্মে।
হোটেলে প্রাতঃকালের আহার সমাধা করিয়া পায়ে মোটা বুট এবং আপাদমস্তক ম্যাকিন্টশ পরিয়া বেড়াইতে বাহির হইয়াছি। ক্ষণে ক্ষণে টিপ্‌ টিপ্‌ করিয়া বৃষ্টি পড়িতেছে এবং সর্বত্র ঘন মেঘের কুজ্ঝটিকায় মনে হইতেছে, যেন বিধাতা হিমালয়পর্বতসুদ্ধ সমস্ত বিশ্বচিত্র রবার দিয়া ঘষিয়া ঘষিয়া মুছিয়া ফেলিবার উপক্রম করিয়াছেন।
আরো দেখুন
131
Verses
    পরিচিত সীমানার
          বেড়া-ঘেরা থাকি ছেটো বিশ্বে;
    বিপুল অপরিচিত
          নিকটেই রয়েছে অদৃশ্যে।
    সেথাকার বাঁশিরবে
          অনামা ফুলের মৃদুগন্ধে
    জানা না-জানার মাঝে
          বাণী ফিরে ছায়াময় ছন্দে।
আরো দেখুন
পায়ে পড়ি শোনো
Songs
              পায়ে পড়ি শোনো ভাই গাইয়ে,
          মোদের     পাড়ার থোড়া   দূর দিয়ে যাইয়ে॥
হেথা     সা রে গা মা -গুলি     সদাই     করে চুলোচুলি,
              কড়ি কোমল কোথা   গেছে তলাইয়ে॥
                        হেথা আছে তাল-কাটা বাজিয়ে--
                             বাধাবে সে কাজিয়ে।
                                  চৌতালে ধামারে
                             কে কোথায় ঘা মারে--
           তেরে-কেটে মেরে-কেটে   ধাঁ-ধাঁ-ধাঁইয়ে॥
আরো দেখুন
মেঘ ও রৌদ্র
Stories
পূর্বদিনে বৃষ্টি হইয়া গিয়াছে। আজ ক্ষান্তবর্ষণ প্রাতঃকালে ম্লান রৌদ্র ও খণ্ড মেঘে মিলিয়া পরিপক্কপ্রায় আউশ ধানের ক্ষেত্রের উপর পর্যায়ক্রমে আপন আপন সুদীর্ঘ তুলি বুলাইয়া যাইতেছিল; সুবিস্তৃত শ্যাম চিত্রপট একবার আলোকের স্পর্শে উজ্জ্বল পাণ্ডুবর্ণ ধারণ করিতেছিল আবার পরক্ষণেই ছায়াপ্রলেপে গাঢ় স্নিগ্ধতায় অঙ্কিত হইতেছিল।
যখন সমস্ত আকাশরঙ্গভূমিতে মেঘ এবং রৌদ্র, দুইটি মাত্র অভিনেতা, আপন আপন অংশ অভিনয় করিতেছিল তখন নিম্নে সংসাররঙ্গভূমিতে কত স্থানে কত অভিনয় চলিতেছিল তাহার আর সংখ্যা নাই।
আরো দেখুন
অতিথি
Stories
কাঁঠালিয়ার জমিদার মতিলালবাবু নৌকা করিয়া সপরিবারে স্বদেশে যাইতেছিলেন। পথের মধ্যে মধ্যাহ্নে নদীতীরের এক গঞ্জের নিকট নৌকা বাঁধিয়া পাকের আয়োজন করিতেছেন এমন সময় এক ব্রাহ্মণবালক আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, 'বাবু, তোমরা যাচ্ছ কোথায়?'
প্রশ্নকর্তার বয়স পনেরো-ষোলোর অধিক হইবে না।
আরো দেখুন
শ্রাবণবরিষন পার হয়ে
Songs
শ্রাবণবরিষন পার হয়ে   কী বাণী আসে ওই রয়ে রয়ে।
     গোপন কেতকীর পরিমলে,   সিক্ত বকুলের বনতলে,
     দূরের আঁখিজল বয়ে বয়ে   কী বাণী আসে ওই রয়ে রয়ে॥
কবির হিয়াতলে ঘুরে ঘুরে   আঁচল ভরে লয় সুরে সুরে।
     বিজনে বিরহীর কানে কানে   সজল মল্লার-গানে-গানে
          কাহার নামখানি কয়ে কয়ে
              কী বাণী আসে ওই রয়ে রয়ে॥
আরো দেখুন
মধু -গন্ধে ভরা
Songs
মধু   -গন্ধে ভরা   মৃদু   -স্নিগ্ধছায়া   নীপ   -কুঞ্জতলে
শ্যাম   -কান্তিময়ী   কোন্‌   স্বপ্নমায়া   ফিরে   বৃষ্টিজলে॥
ফিরে   রক্ত-অলক্তক-ধৌত পায়ে   ধারা   -সিক্ত বায়ে,
মেঘ   -মুক্ত সহাস্য শশাঙ্ককলা   সিঁথি   -প্রান্তে জ্বলে॥
পিয়ে   উচ্ছল তরল প্রলয়মদিরা   উন্‌   -মুখর তরঙ্গিণী ধায় অধীরা,
কার   নির্ভীক মূর্তি তরঙ্গদোলে   কল   -মন্দ্ররোলে।
এই   তারাহারা নিঃসীম অন্ধকারে   কার   তরণী চলে॥
আরো দেখুন
চার অধ্যায়
Novels
এলার মনে পড়ে তার জীবনের প্রথম সূচনা বিদ্রোহের মধ্যে। তার মা মায়াময়ীর ছিল বাতিকের ধাত, তাঁর ব্যবহারটা বিচার-বিবেচনার প্রশস্ত পথ ধরে চলতে পারত না। বেহিসাবি মেজাজের অসংযত ঝাপটায় সংসারকে তিনি যখন-তখন ক্ষুব্ধ করে তুলতেন, শাসন করতেন অন্যায় করে, সন্দেহ করতেন অকারণে। মেয়ে যখন অপরাধ অস্বীকার করত, ফস করে বলতেন, মিথ্যে কথা বলছিস। অথচ অবিমিশ্র সত্যকথা বলা মেয়ের একটা ব্যসন বললেই হয়। এজন্যেই সে শাস্তি পেয়েছে সব-চেয়ে বেশি। সকল রকম অবিচারের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতা তার স্বভাবে প্রবল হয়ে উঠেছে। তার মার কাছে মনে হয়েছে, এইটেই স্ত্রীধর্মনীতির বিরুদ্ধ।
একটা কথা সে বাল্যকাল থেকে বুঝেছে যে, দুর্বলতা অত্যাচারের প্রধান বাহন। ওদের পরিবারে যে-সকল আশ্রিত অন্নজীবী ছিল, যারা পরের অনুগ্রহ-নিগ্রহের সংকীর্ণ বেড়া-দেওয়া ক্ষেত্রের মধ্যে নিঃসহায়ভাবে আবদ্ধ তারাই কলুষিত করেছে ওদের পরিবারের আবহাওয়াকে, তারাই ওর মায়ের অন্ধ প্রভুত্বচর্চাকে বাধাবিহীন করে তুলেছে। এই অস্বাস্থ্যকর অবস্থার প্রতিক্রিয়ারূপেই ওর মনে অল্পবয়স থেকেই স্বাধীনতার আকাঙক্ষা এত দুর্দাম হয়ে উঠেছিল।
প্রহরশেষের আলোয় রাঙা
সেদিন চৈত্রমাস,
তোমার চোখে দেখেছিলাম
আমার সর্বনাশ।"
Upwards
Towards the peaks,
Towards the stars,
Towards the vast silence."
আরো দেখুন
সুখে থাকো
Songs
              সুখে থাকো আর সুখী করো সবে,
              তোমাদের প্রেম ধন্য হোক ভবে॥
              মঙ্গলের পথে থেকো নিরন্তর,
              মহত্ত্বের 'পরে রাখিয়ো নির্ভর--
ধ্রুবসত্য তাঁরে ধ্রুবতারা কোরো   সংশয়নিশীথে সংসার-অর্ণবে॥
চিরসুধাময় প্রেমের মিলন   মধুর করিয়া রাখুক জীবন,
দুজনার বলে সবল দুজন   জীবনের কাজ সাধিয়ো নীরবে॥
              কত দুঃখ আছে, কত অশ্রুজল--
              প্রেমবলে তবু থাকিয়ো অটল।
তাঁহারি ইচ্ছা হউক সফল   বিপদে সম্পদে শোকে উৎসবে॥
আরো দেখুন