ঠাকুরদা
Stories
নয়নজোড়ের জমিদারেরা এককালে বাবু বলিয়া বিশেষ বিখ্যাত ছিলেন। তখনকার কালের বাবুয়ানার আদর্শ বড়ো সহজ ছিল না। এখন যেমন রাজা-রায়বাহাদুর খেতাব অর্জন করিতে অনেক খানা নাচ ঘোড়দৌড় এবং সেলাম-সুপারিশের শ্রাদ্ধ করিতে হয়, তখনো সাধারণের নিকট হইতে বাবু উপাধি লাভ করিতে বিস্তর দুঃসাধ্য তপশ্চরণ করিতে হইত।
আমাদের নয়নজোড়ের বাবুরা পাড় ছিঁড়িয়া ফেলিয়া ঢাকাই কাপড় পরিতেন, কারণ পাড়ের কর্কশতায় তাঁহাদের সুকোমল বাবুয়ানা ব্যথিত হইত। তাঁহারা লক্ষ টাকা দিয়া বিড়ালশাবকের বিবাহ দিতেন এবং কথিত আছে, একবার কোনো উৎসব উপলক্ষে রাত্রিকে দিন করিবার প্রতিজ্ঞা করিয়া অসংখ্য দীপ জ্বলাইয়া সূর্যকিরণের অনুকরণে তাঁহারা সাচ্চা রুপার জরি উপর হইতে বর্ষণ করিয়াছিলেন।
আরো দেখুন
দুই বোন
Novels
মেয়েরা দুই জাতের, কোনো কোনো পণ্ডিতের কাছে এমন কথা শুনেছি।
এক জাত প্রধানত মা, আর-এক জাত প্রিয়া।
আরো দেখুন
53
Verses
I.122. kaun murali sabd sun anand bhayo
WHAT IS THAT flute whose music thrills me with joy?
The flame burns without a lamp;
The lotus blossoms without a root;
Flowers bloom in clusters;
The moon-bird is devoted to the moon;
With all its heart the rain-bird longs for the shower of rain;
But upon whose love does the Lover concentrate His entire life?
আরো দেখুন
দুই বিঘা জমি
Verses
শুধু বিঘে দুই ছিল মোর ভুঁই   আর সবই গেছে ঋণে।
বাবু বলিলেন, "বুঝেছ উপেন,   এ জমি লইব কিনে।'
কহিলাম আমি, "তুমি ভূস্বামী,   ভূমির অন্ত নাই।
চেয়ে দেখো মোর আছে বড়ো-জোর   মরিবার মতো ঠাঁই।'
শুনি রাজা কহে, "বাপু, জানো তো হে, করেছি বাগানখান
পেলে দুই বিঘে প্রস্থে ও দিঘে   সমান হইবে টানা--
ওটা দিতে হবে।' কহিলাম তবে   বক্ষে জুড়িয়া পাণি
সজল চক্ষে, "করুণ বক্ষে   গরিবের ভিটেখানি।
সপ্ত পুরুষ যেথায় মানুষ   সে মাটি সোনার বাড়া,
দৈন্যের দায়ে বেচিব সে মায়ে   এমনি লক্ষ্মীছাড়া!'
আঁখি করি লাল রাজা ক্ষণকাল   রহিল মৌনভাবে,
কহিলেন শেষে ক্রূর হাসি হেসে,  "আচ্ছা, সে দেখা যাবে।'
পরে মাস দেড়ে ভিটে মাটি ছেড়ে   বাহির হইনু পথে--
করিল ডিক্রি, সকলই বিক্রি   মিথ্যা দেনার খতে।
এ জগতে, হায়, সেই বেশি চায়   আছে যার ভূরি ভূরি--
রাজার হস্ত করে সমস্ত   কাঙালের ধন চুরি।
মনে ভাবিলাম মোরে ভগবান   রাখিবে না মোহগর্তে,
তাই লিখি দিল বিশ্বনিখিল   দু বিঘার পরিবর্তে।
সন্ন্যাসীবেশে ফিরি দেশে দেশে   হইয়া সাধুর শিষ্য
কত হেরিলাম মনোহর ধাম, কত মনোরম দৃশ্য!
ভূধরে সাগরে বিজনে নগরে   যখন যেখানে ভ্রমি
তবু নিশিদিনে ভুলিতে পারি নে   সেই দুই বিঘা জমি।
হাটে মাঠে বাটে এই মতো কাটে   বছর পনেরো-ষোলো--
একদিন শেষে ফিরিবারে দেশে   বড়ই বাসনা হল।
নমোনমো নম সুন্দরী মম   জননী বঙ্গভূমি!
গঙ্গার তীর স্নিগ্ধ সমীর,   জীবন জুড়ালে তুমি।
অবারিত মাঠ, গগনললাট  চুমে তব পদধূলি,
ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড়   ছোটো ছোটো গ্রামগুলি।
পল্লবঘন আম্রকানন   রাখালের খেলাগেহ,
স্তব্ধ অতল দিঘি কালোজল--  নিশীথশীতল স্নেহ।
বুকভরা মধু বঙ্গের বধূ   জল লয়ে যায় ঘরে--
মা বলিতে প্রাণ করে আনচান,   চোখে আসে জল ভরে।
দুই দিন পরে দ্বিতীয় প্রহরে   প্রবেশিনু নিজগ্রামে--
কুমোরের বাড়ি দক্ষিণে ছাড়ি   রথতলা করি বামে,
রাখি হাটখোলা, নন্দীর গোলা, মন্দির করি পাছে
তৃষাতুর শেষে পঁহুছিনু এসে   আমার বাড়ির কাছে।
ধিক্‌ ধিক্‌ ওরে, শতধিক্‌ তোরে,   নিলাজ কুলটা ভূমি!
যখনি যাহার তখনি তাহার,   এই কি জননী তুমি!
সে কি মনে হবে একদিন যবে   ছিলে দরিদ্রমাতা
আঁচল ভরিয়া রাখিতে ধরিয়া   ফল ফুল শাক পাতা!
আজ কোন্‌ রীতে কারে ভুলাইতে   ধরেছ বিলাসবেশ--
পাঁচরঙা পাতা অঞ্চলে গাঁথা, পুষ্পে খচিত কেশ!
আমি তোর লাগি ফিরেছি বিবাগি   গৃহহারা সুখহীন--
তুই হেথা বসি ওরে রাক্ষসী,   হাসিয়া কাটাস দিন!
ধনীর আদরে গরব না ধরে !   এতই হয়েছ ভিন্ন
কোনোখানে লেশ নাহি অবশেষ   সেদিনের কোনো চিহ্ন!
কল্যাণময়ী ছিলে তুমি অয়ি,   ক্ষুধাহরা সুধারাশি!
যত হাসো আজ যত করো সাজ   ছিলে দেবী, হলে দাসী।
বিদীর্ণ হিয়া ফিরিয়া ফিরিয়া   চারি দিকে চেয়ে দেখি--
প্রাচীরের কাছে এখনো যে আছে,   সেই আমগাছ একি!
বসি তার তলে নয়নের জলে   শান্ত হইল ব্যথা,
একে একে মনে উদিল স্মরণে   বালক-কালের কথা।
সেই মনে পড়ে জ্যৈষ্ঠের ঝড়ে  রাত্রে নাহিকো ঘুম,
অতি ভোরে উঠি তাড়াতাড়ি ছুটি   আম কুড়াবার ধুম।
সেই সুমধুর স্তব্ধ দুপুর,   পাঠশালা-পলায়ন--
ভাবিলাম হায় আর কি কোথায়   ফিরে পাব সে জীবন!
সহসা বাতাস ফেলি গেল শ্বাস   শাখা দুলাইয়া গাছে,
দুটি পাকা ফল লভিল ভূতল   আমার কোলের কাছে।
ভাবিলাম মনে বুঝি এতখনে   আমারে চিনিল মাতা,
স্নেহের সে দানে বহু সম্মানে   বারেক ঠেকানু মাথা।
হেনকালে হায় যমদূত-প্রায়  কোথা হতে এল মালী,
ঝুঁটি-বাঁধা উড়ে সপ্তম সুরে   পাড়িতে লাগিল গালি।
কহিলাম তবে, "আমি তো নীরবে   দিয়েছি আমার সব--
দুটি ফল তার করি অধিকার,   এত তারি কলরব!'
চিনিল না মোরে, নিয়ে গেল ধরে  কাঁধে তুলি লাঠিগাছ--
বাবু ছিপ হাতে পারিষদ-সাথে   ধরিতেছিলেন মাছ।
শুনি বিবরণ ক্রোধে তিনি কন,   "মারিয়া করিব খুন!'
বাবু যত বলে পারিষদ-দলে   বলে তার শতগুণ।
আমি কহিলাম, "শুধু দুটি আম  ভিখ মাগি মহাশয়!'
বাবু কহে হেসে, "বেটা সাধুবেশে   পাকা চোর অতিশয়।'
আমি শুনে হাসি আঁখিজলে ভাসি,   এই ছিল মোর ঘটে--
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ,   আমি আজ চোর বটে!
আরো দেখুন
স্বর্গ-মর্ত
Stories
গান
মাটির প্রদীপখানি আছে
আরো দেখুন
মুক্তি
Stories
বিরহিণী তার ফুলবাগানের এক ধারে বেদী সাজিয়ে তার উপর মূর্তি গড়তে বসল। তার মনের মধ্যে যে মানুষটি ছিল বাইরে তারই প্রতিরূপ প্রতিদিন একটু একটু করে গড়ে, আর চেয়ে চেয়ে দেখে, আর ভাবে, আর চোখ দিয়ে জল পড়ে।
কিন্তু, যে রূপটি একদিন তার চিত্তপটে স্পষ্ট ছিল তার উপরে ক্রমে যেন ছায়া পড়ে আসছে। রাতের বেলাকার পদ্মের মতো স্মৃতির পাপড়িগুলি অল্প অল্প করে যেন মুদে এল।
আরো দেখুন
ধ্বংস
Stories
দিদি, তোমাকে একটা হালের খবর বলি।--
প্যারিস শহরের অল্প একটু দূরে ছিল তাঁর ছোটো বাসাটি। বাড়ির কর্তার নাম পিয়ের শোপ্যাঁ। তাঁর সারা জীবনের শখ ছিল গাছপালার জোড় মিলিয়ে, রেণু মিলিয়ে, তাদের চেহারা, তাদের রঙ, তাদের স্বাদ বদল ক'রে নতুন রকমের সৃষ্টি তৈরি করতে। তাতে কম সময় লাগত না। এক-একটি ফুলের ফলের স্বভাব বদলাতে বছরের পর বছর কেটে যেত। এ কাজে যেমন ছিল তাঁর আনন্দ তেমনি ছিল তাঁর ধৈর্য। বাগান নিয়ে তিনি যেন জাদু করতেন। লাল হত নীল, সাদা হত আলতার রঙ, আঁটি যেত উড়ে, খোসা যেত খ'সে। যেটা ফলতে লাগে ছ মাস তার মেয়াদ কমে হত দু মাস। ছিলেন গরিব, ব্যবসাতে সুবিধা করতে পারতেন না। যে করত তাঁর হাতের কাজের তারিফ তাকে দামি মাল অমনি দিতেন বিলিয়ে। যার মতলব ছিল দাম ফাঁকি দিতে সে এসে বলত, কী ফুল ফুটেছে আপনার সেই গাছটাতে, চার দিক থেকে লোক আসছে দেখতে, একেবারে তাক লেগে যাচ্ছে।
আরো দেখুন
তারাপ্রসন্নের কীর্তি
Stories
লেখকজাতির প্রকৃতি অনুসারে তারাপ্রসন্ন কিছু লাজুক এবং মুখচোরা ছিলেন। লোকের কাছে বাহির হইতে গেলে তাঁহার সর্বনাশ উপস্থিত হইত। ঘরে বসিয়া কলম চালাইয়া তাঁহার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ, পিঠ একটু কুঁজা, সংসারের অভিজ্ঞতা অতি অল্প। লৌকিকতার বাঁধি বোলসকল সহজে তাঁহার মুখে আসিত না, এইজন্য গৃহদুর্গের বাহিরে তিনি আপনাকে কিছুতেই নিরাপদ মনে করিতেন না।
লোকেও তাঁহাকে একটা উজবুক রকমের মনে করিত এবং লোকেরও দোষ দেওয়া যায় না। মনে করো, প্রথম পরিচয়ে একটি পরম ভদ্রলোক উচ্ছ্বসিত কন্ঠে তারাপ্রসন্নকে বলিলেন, "মহাশয়ের সহিত সাক্ষাৎ হয়ে যে কী পর্যন্ত আনন্দ লাভ করা গেল, তা একমুখে বলতে পারি নে"-- তারাপ্রসন্ন নিরুত্তর হইয়া নিজের দক্ষিণ করতল বিশেষ মনোযোগপূর্বক নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। হঠাৎ সে নীরবতার অর্থ এইরূপ মনে হয়, "তা, তোমার আনন্দ হয়েছে সেটা খুব সম্ভব বটে, কিন্তু আমার-যে আনন্দ হয়েছে এমন মিথ্যা কথাটা কী করে মুখে উচ্চারণ করব তাই ভাবছি।"
আরো দেখুন
বউ-ঠাকুরানীর হাট
Novels
অন্তর্বিষয়ী ভাবের কবিত্ব থেকে বহির্বিষয়ী কল্পনালোকে একসময়ে মন যে প্রবেশ করলে, ইতস্তত ঘুরে বেড়াতে লাগল, এ বোধ হয় কৌতূহল থেকে।
প্রাচীর-ঘেরা মন বেরিয়ে পড়ল বাইরে, তখন সংসারের বিচিত্র পথে তার যাতায়াত আরম্ভ হয়েছে। এই সময়টাতে তার লেখনী গদ্যরাজ্যে নূতন ছবি নূতন নূতন অভিজ্ঞতা খুঁজতে চাইলে। তারই প্রথম প্রয়াস দেখা দিল বউ-ঠাকুরানীর হাট গল্পে-- একটা রোমান্টিক ভূমিকায় মানবচরিত্র নিয়ে খেলার ব্যাপারে, সেও অল্পবয়সেরই খেলা। চরিত্রগুলির মধ্যে যেটুকু জীবনের লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে সেটা পুতুলের ধর্ম ছাড়িয়ে উঠতে পারে নি। তারা আপন চরিত্রবলে অনিবার্য পরিণামে চালিত নয়, তারা সাজানো জিনিস একটা নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে। আজও হয়তো এই গল্পটার দিকে ফিরে চাওয়া যেতে পারে। এ যেন অশিক্ষিত আঙুলের আঁকা ছবি; সুনিশ্চিত মনের পাকা হাতের চিহ্ন পড়ে নি তাতে। কিন্তু আর্টের খেলাঘরে ছেলেমানুষিরও একটা মূল্য আছে। বুদ্ধির বাধাহীন পথে তার খেয়াল যা-তা কাণ্ড করতে বসে, তার থেকে প্রাথমিক মনের একটা কিছু কারিগরি বেরিয়ে পড়ে।
"বঁধুয়া অসময়ে কেন হে প্রকাশ?
সকলি যে স্বপ্ন বলে হতেছে বিশ্বাস।
চন্দ্রাবলীর কুঞ্জে ছিলে,      সেথায় তো আদর মিলে?
এরি মধ্যে মিটিল কি প্রণয়েরি আশ?
এখনো তো রয়েছে রাত      এখনো হয় নি প্রভাত,
এখনো এ রাধিকার ফুরায় নি তো অশ্রুপাত।
চন্দ্রাবলীর কুসুমসাজ       এখনি কি শুকাল আজ?
চকোর হে, মিলাল কি সে চন্দ্রমুখের মধুর হাস?"
"আজ তোমারে দেখতে এলেম অনেক দিনের পরে।
ভয় নাইকো সুখে থাকো,
অধিক ক্ষণ থাকব নাকো।
আসিয়াছি দুদণ্ডেরি তরে।
দেখব শুধু মুখখানি
শুনব দুটি মধুর বাণী
আড়াল থেকে হাসি দেখে চলে যাব দেশান্তরে।"
"মলিন মুখে ফুটুক হাসি জুড়াক দু-নয়ন।"
"মলিন মুখে ফুটুক হাসি, জুড়াক দু-নয়ন।
মলিন বসন ছাড়ো সখী, পরো আভরণ।"
হাসিরে পায়ে ধরে রাখিবি কেমন করে,
হাসির সে প্রাণের সাধ ও অধরে খেলা করে।
"সারা বরষ দেখি নে মা, মা তুই আমার কেমনধারা,
নয়নতারা হারিয়ে আমার অন্ধ হল নয়নতারা।
এলি কি পাষাণী ওরে
দেখব তোরে আঁখি ভরে
কিছুতেই থামে না যে মা, পোড়া এ নয়নের ধারা।"
"কবরীতে ফুল শুকাল, কাননের ফুল ফুটল বনে,
দিনের আলো প্রকাশিল, মনের সাধ রহিল মনে।"
"ওরে, যেতে হবে, আর দেরি নাই,
পিছিয়ে পড়ে রবি কত, সঙ্গীরা তোর গেল সবাই।
আয় রে ভবের খেলা সেরে, আঁধার করে এসেছে রে,
(ওরে) পিছন ফিরে বারে বারে কাহার পানে চাহিস রে ভাই।
খেলতে এল ভবের নাটে, নতুন লোকে নতুন খেলা,
হেথা হতে আয় রে সরে, নইলে তোরে মারবে ঢেলা,
নামিয়ে দে রে প্রাণের বোঝা, আর এক দেশে চল্‌ রে সোজা,
(সেথা) নতুন করে বাঁধবি বাসা, নতুন খেলা খেলবি সে ঠাঁই।"
"আমার যাবার সময় হল,
আমায় কেন রাখিস ধরে,
চোখের জলের বাঁধন দিয়ে
বাঁধিস নে আর মায়াডোরে।
ফুরিয়েছে জীবনের ছুটি,
ফিরিয়ে নে তোর নয়ন দুটি,
নাম ধরে আর ডাকসি নে ভাই,
যেতে হবে ত্বরা করে।"
"ভিক্ষা যদি দিবে রাই,
(আমার) সোনা রুপায় কাজ নাই,
(আমি) প্রাণের দায়ে এসেছি হে,
মান রতন ভিক্ষা চাই।
আমিই শুধু রইনু বাকি।
যা ছিল তা গেল চলে, রইল যা তা কেবল ফাঁকি
আমার ব'লে ছিল যারা
আর তো তারা দেয় না সাড়া,
কোথায় তারা, কোথায় তারা? কেঁদে কেঁদে কারে ডাকি।
বল্‌ দেখি মা, শুধাই তোরে,
আমার কিছু রাখলি নে রে?
আমি কেবল আমায় নিয়ে কোন্‌ প্রাণেতে বেঁচে থাকি।
আমি শুধু রইনু বাকি।
যা ছিল তা গেল চলে,
রইল যা তা কেবল ফাঁকি।"
তাজবে তাজ নওবে নও।
আমি শুধু রইনু বাকি।
আর কি আমি ছাড়ব তোরে।
মন দিয়ে মন            নাই বা পেলেম
জোর করে রাখিব ধরে।
শূন্য করে হৃদয়-পুরী       প্রাণ যদি করিলে চুরি
তুমিই তবে থাকো সেথায়
শূন্য হৃদয় পূর্ণ করে।
আরো দেখুন
শেষ পুরস্কার
Stories
সেদিন আই.এ. এবং ম্যাট্রিক ক্লাসের পুরস্কারবিতরণের উৎসব। বিমলা ব'লে এক ছাত্রী ছিল, সুন্দরী ব'লে তার খ্যাতি। তারই হাতে পুরস্কারের ভার। চার দিকে তার ভিড় জমেছে আর তার মনে অহংকার জমে উঠেছে খুব প্রচুর পরিমাণে। একটি মুখচোরা ভালোমানুষ ছেলে কোণে দাঁড়িয়ে ছিল। সাহস করে একটু কাছে এল যেই, দেখা গেল তার পায়ে হয়েছে ঘা, ময়লা কাপড়ের ব্যাণ্ডেজ জড়ানো। তাকে দেখে বিমলা নাক তুলে বললে, 'ও এখানে কেন বাপু, ওর যাওয়া উচিত হাসপাতালে।'
ছেলেটি মন-মরা হয়ে আস্তে আস্তে চলে গেল। বাড়িতে গিয়ে তার স্কুলঘরের কোণে বসে কাঁদছে, জলখাবারের থালা হাতে তার দিদি এসে বললে, 'ও কী হচ্ছে জগদীশ, কাঁদছিস কেন।'
আরো দেখুন