পুনরাবৃত্তি
Stories
সেদিন যুদ্ধের খবর ভালো ছিল না। রাজা বিমর্ষ হয়ে বাগানে বেড়াতে গেলেন।
দেখতে পেলেন, প্রাচীরের কাছে গাছতলায় বসে খেলা করছে একটি ছোটো ছেলে আর একটি ছোটো মেয়ে।
আরো দেখুন
চার অধ্যায়
Novels
এলার মনে পড়ে তার জীবনের প্রথম সূচনা বিদ্রোহের মধ্যে। তার মা মায়াময়ীর ছিল বাতিকের ধাত, তাঁর ব্যবহারটা বিচার-বিবেচনার প্রশস্ত পথ ধরে চলতে পারত না। বেহিসাবি মেজাজের অসংযত ঝাপটায় সংসারকে তিনি যখন-তখন ক্ষুব্ধ করে তুলতেন, শাসন করতেন অন্যায় করে, সন্দেহ করতেন অকারণে। মেয়ে যখন অপরাধ অস্বীকার করত, ফস করে বলতেন, মিথ্যে কথা বলছিস। অথচ অবিমিশ্র সত্যকথা বলা মেয়ের একটা ব্যসন বললেই হয়। এজন্যেই সে শাস্তি পেয়েছে সব-চেয়ে বেশি। সকল রকম অবিচারের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতা তার স্বভাবে প্রবল হয়ে উঠেছে। তার মার কাছে মনে হয়েছে, এইটেই স্ত্রীধর্মনীতির বিরুদ্ধ।
একটা কথা সে বাল্যকাল থেকে বুঝেছে যে, দুর্বলতা অত্যাচারের প্রধান বাহন। ওদের পরিবারে যে-সকল আশ্রিত অন্নজীবী ছিল, যারা পরের অনুগ্রহ-নিগ্রহের সংকীর্ণ বেড়া-দেওয়া ক্ষেত্রের মধ্যে নিঃসহায়ভাবে আবদ্ধ তারাই কলুষিত করেছে ওদের পরিবারের আবহাওয়াকে, তারাই ওর মায়ের অন্ধ প্রভুত্বচর্চাকে বাধাবিহীন করে তুলেছে। এই অস্বাস্থ্যকর অবস্থার প্রতিক্রিয়ারূপেই ওর মনে অল্পবয়স থেকেই স্বাধীনতার আকাঙক্ষা এত দুর্দাম হয়ে উঠেছিল।
প্রহরশেষের আলোয় রাঙা
সেদিন চৈত্রমাস,
তোমার চোখে দেখেছিলাম
আমার সর্বনাশ।"
Upwards
Towards the peaks,
Towards the stars,
Towards the vast silence."
আরো দেখুন
দৃষ্টিদান
Stories
শুনিয়াছি, আজকাল অনেক বাঙালির মেয়েকে নিজের চেষ্টায় স্বামী সংগ্রহ করিতে হয়। আমিও তাই করিয়াছি, কিন্তু দেবতার সহায়তায়। আমি ছেলেবেলা হইতে অনেক ব্রত এবং অনেক শিবপূজা করিয়াছিলাম।
আমার আটবৎসর বয়স উত্তীর্ণ না হইতেই বিবাহ হইয়া গিয়াছিল। কিন্তু পূর্বজন্মের পাপবশত আমি আমার এমন স্বামী পাইয়াও সম্পূর্ণ পাইলাম না। মা ত্রিনয়নী আমার দুইচক্ষু লইলেন। জীবনের শেষমুহূর্ত পর্যন্ত স্বামীকে দেখিয়া লইবার সুখ দিলেন না।
আরো দেখুন
সতেরো বছর
Stories
আমি তার সতেরো বছরের জানা।
কত আসাযাওয়া, কত দেখাদেখি, কত বলাবলি; তারই আশেপাশে কত স্বপ্ন, কত অনুমান, কত ইশারা; তারই সঙ্গে সঙ্গে কখনো বা ভোরের ভাঙা ঘুমে শুকতারার আলো, কখনো বা আষাঢ়ের ভরসন্ধ্যায় চামেলিফুলের গন্ধ, কখনো বা বসন্তের শেষ প্রহরে ক্লান্ত নহবতের পিলুবারোয়াঁ; সতেরো বছর ধরে এই-সব গাঁথা পড়েছিল তার মনে।
আরো দেখুন
প্রজাপতির নির্বন্ধ
Novels
অক্ষয়কুমারের শ্বশুর হিন্দুসমাজে ছিলেন, কিন্তু তাঁহার চালচলন অত্যন্ত নব্য ছিল। মেয়েদের তিনি দীর্ঘকাল অবিবাহিত রাখিয়া লেখাপড়া শিখাইতেছিলেন। লোকে আপত্তি করিলে বলিতেন, আমরা কুলীন, আমাদের ঘরে তো চিরকালই এইরূপ প্রথা।
তাঁহার মৃত্যুর পর বিধবা জগত্তারিণীর ইচ্ছা, লেখাপড়া বন্ধ করিয়া মেয়েগুলির বিবাহ দিয়া নিশ্চিন্ত হন। কিন্তু তিনি ঢিলা প্রকৃতির স্ত্রীলোক, ইচ্ছা যাহা হয় তাহার উপায় অন্বেষণ করিয়া উঠিতে পারেন না। সময় যতই অতীত হইতে থাকে আর পাঁচজনের উপর দোষারোপ করিতে থাকেন।
কী জানি কী ভেবেছ মনে,
খুলে বলো ললনে!
কী কথা হায় ভেসে যায়
ওই ছলছল নয়নে!
পাছে চেয়ে বসে আমার মন
আমি তাই ভয়ে ভয়ে থাকি,
পাছে চোখে চোখে পড়ে বাঁধা
আমি তাই তো তুলি নে আঁখি।
বড়ো থাকি কাছাকাছি
তাই ভয়ে ভয়ে আছি।
নয়ন বচন কোথায় কখন বাজিলে বাঁচি না বাঁচি।
ওগো হৃদয়-বনের শিকারি!
মিছে তারে জালে ধরা যে তোমারি ভিখারি;
সহস্রবার পায়ের কাছে আপনি যে জন মরে আছে,
নয়নবাণের খোঁচা খেতে সে যে অনধিকারী।"
স্বয়ং বিশীর্ণদ্রুমপর্ণবৃত্তিতা
পরা হি কাষ্ঠা তপসস্তয়া পুনঃ।
তদপ্যপাকীর্ণমতঃ প্রিয়ংবদাং
বদন্ত্যপর্ণেতি চ তাং পুরাবিদঃ॥
আমি কেবল ফুল জোগাব
তোমার দুটি রাঙা হাতে,
বুদ্ধি আমার খেলে নাকো
পাহারা বা মন্ত্রণাতে।
দেখব কে তোর কাছে আসে!
তুই রবি একেশ্বরী, একলা আমি রইব পাশে।
তুমি আমায় করবে মস্ত লোক!
দেবে লিখে রাজার টিকে প্রসন্ন ওই চোখ!
অভয় দাও তো বলি আমার wish কী,
একটি ছটাক সোডার জলে পাকি তিন পোয়া হুইস্কি!
কত কাল রবে বলো ভারত রে
শুধু ডাল ভাত জল পথ্য করে।
দেশে অন্নজলের হল ঘোর অনটন,
ধরো হুইস্কি সোডা আর মুর্গিমটন।
যাও ঠাকুর চৈতন চুটকি নিয়া,
এসো দাড়ি নাড়ি কলিমদ্দি মিঞা!
যাও ঠাকুর চৈতন চুটকি নিয়া,
এসো দাড়ি নাড়ি কলিমদ্দি মিঞা!
চির-পুরানো চাঁদ!
চিরদিবস এমনি থেকো আমার এই সাধ।
পুরানো হাসি পুরানো সুধা, মিটায় মম পুরানো ক্ষুধা--
নূতন কোনো চকোর যেন পায় না পরসাদ!
কোপো যত্র ভ্রূকুটিরচনা নিগ্রহো যত্র মৌনং।
যত্রান্যোন্যস্মিতমনুনয় যত্র দৃষ্টিঃ প্রসাদঃ।
"পোড়া মনে শুধু পোড়া মুখখানি জাগে রে!
এত আছে লোক, তবু পোড়া চোখে
আর কেহ নাহি লাগে রে!
যারে মরণ দশায় ধরে
সে যে শতবার করে মরে।
পোড়া পতঙ্গ যত পোড়ে তত
আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
সকলি ভুলেছে ভোলা মন
ভোলে নি ভোলে নি শুধু ওই চন্দ্রানন।
গান। পরজ
স্বর্গে তোমায় নিয়ে যাবে উড়িয়ে,
পিছে পিছে আমি চলব খুঁড়িয়ে।
ইচ্ছা হবে টিকির ডগা ধরে
গান। কাফি
কার হাতে যে ধরা দেব প্রাণ;
তাই ভাবতে বেলা অবসান।
ডান দিকেতে তাকাই যখন, বাঁয়ের লাগি কাঁদে রে মন
বাঁয়ের লাগি ফিরলে তখন দক্ষিণেতে পড়ে টান।
বিরহ-যামিনী কেমনে যাপিবে,
বিচ্ছেদতাপে যখন তাপিবে
এপাশ ওপাশ বিছানা মাপিবে,
মকরকেতনে কেবলি শাপিবে--
(সাড়ম্বরে)বাষ্পীয় শকটে চড়ি নারীচূড়ামণি
পুরবালা চলি যবে গেলা কাশীধামে
বিকালে, কহ হে দেবী অমৃতভাষিণী
কোন্‌ বরাঙ্গনে বরি বরমাল্যদানে
যাপিলা বিচ্ছেদমাস শ্যালীত্রয়ীশালী
শ্রীঅক্ষয়!
তুমি জান আমার গাছে ফল কেন না ফলে!
যেমনি ফুলটি ফুটে ওঠে আনি চরণতলে।
মুগ্ধস্নিগ্ধবিদগ্ধমধুরৈর্লালৈঃ কটাক্ষৈরলং
চেতঃ সম্প্রতি চন্দ্রচূড়চরণধ্যানামৃতে বর্ততে।
ইয়মধিকমনোজ্ঞা চাপ্‌ কানেনাপি তন্বী।
কিমিব হি মধুরাণাং মণ্ডনং নাকৃতীনাম॥
গান। ভৈরবী
ওগো দয়াময়ী চোর, এত দয়া মনে তোর!
বড়ো দয়া করে কণ্ঠে আমার জড়াও মায়ার ডোর!
বড়ো দয়া করে চুরি করে লও শূন্য হৃদয় মোর!
গান। বাহার
চলেছে ছুটিয়া পলাতকা হিয়া,
বেগে বহে শিরা ধমনী--
হায় হায় হায়, ধরিবারে তায়
পিছে পিছে ধায় রমণী।
বায়ুবেগভরে উড়ে অঞ্চল,
লটপট বেণী দুলে চঞ্চল--
এ কী রে রঙ্গ, আকুল-অঙ্গ
ছুটে কুরঙ্গগমনী!
গান। সিন্ধুকাফি
মনোমন্দিরসুন্দরী,
মণিমঞ্জীরগুঞ্জরী,
স্খলদঞ্চলা চলচঞ্চলা
অয়ি মঞ্জুলা মঞ্জরী।
রোষারুণরাগরঞ্জিতা
বঙ্কিম-ভুরু-ভঞ্জিতা,
গোপনহাস্য -কুটিল-আস্য
কপটকলহগঞ্জিতা।
সংকোচনত-অঙ্গিণী,
ভয়ভঙ্গুরভঙ্গিনী,
চকিতচপল নবকুরঙ্গ
যৌবনবনরঙ্গিণী।
অয়ি খল, ছলগুন্ঠিতা,
মধুকরভরকুন্ঠিতা,
লুব্ধপবন -ক্ষুব্ধ-লোভন
মল্লিকা অবলুন্ঠিতা।
চুম্বনধনবঞ্চিনী,
দুরূহগর্বমঞ্চিনী
রুদ্ধকোরক -সঞ্চিত-মধু
কঠিনকনককঞ্জিনী।
অলিন্দে কালিন্দীকমলসুরভৌ কুঞ্জবসতের্‌-
বসন্তীং বাসন্তীনবপরিমলোদ্‌গারচিকুরাং।
ত্বদুৎসঙ্গে লীনাং মদমুকুলিতাক্ষীং পুনরিমাং
কদাহং সেবিষ্যে কিসলয়কলাপব্যজনিনী।
কুঞ্জকুটিরের স্নিগ্ধ অলিন্দের 'পর
কালিন্দীকমলগন্ধ ছুটিবে সুন্দর।
লীনা রবে মদিরাক্ষী তব অঙ্কতলে,
বহিবে বাসন্তীবাস ব্যাকুল কুন্তলে।
তাঁহারে করিব সেবা, কবে হবে হায়--
কিশলয়-পাখাখানি দোলাইব গায়?
বীথীষু বীথীষু বিলাসিনীনাং
মুখানি সংবীক্ষ্য শুচিস্মিতানি
জালেষু জালেষু করং প্রসার্য
লাবণ্যভিক্ষামটতীব চন্দ্রঃ।
কুঞ্জ পথে পথে চাঁদ উঁকি দেয় আসি,
দেখে বিলাসিনীদের মুখভরা হাসি,
কর প্রসারণ করি ফিরে সে জাগিয়া
বাতায়নে বাতায়নে লাবণ্য মাগিয়া।
দিন গেল রে, ডাক দিয়ে নে পারের খেয়া,
চুকিয়ে হিসেব মিটিয়ে দে তোর দেয়া নেয়া।
নিশি না পোহাতে জীবনপ্রদীপ
জ্বালাইয়া যাও প্রিয়া,
তোমার অনল দিয়া।
কবে যাবে তুমি সমুখের পথে
দীপ্ত শিখাটি বাহি
আছি তাই পথ চাহি!
পুড়িবে বলিয়া রয়েছে আশায়
আমার নীরব হিয়া
আপন আঁধার নিয়া।
নিশি না পোহাতে জীবনপ্রদীপ
জ্বালাইয়া যাও প্রিয়া!
নিশি না পোহাতে জীবনপ্রদীপ
জ্বালাইয়া যাও প্রিয়া!
নিশি না পোহাতে জীবনপ্রদীপ
জ্বালাইয়া যাও প্রিয়া!
নিশি না পোহাতে জীবনপ্রদীপ
জ্বালাইয়া যাও প্রিয়া!
নিশি না পোহাতে জীবনপ্রদীপ
জ্বালাইয়া যাও প্রিয়া!
ওরে সাবধানী পথিক, বারেক
পথ ভুলে মর্‌ ফিরে।
খোলা আঁখি দুটো অন্ধ করে দে
আকুল আঁখির নীরে।
সে ভোলা পথের প্রান্তে রয়েছে
হারানো হিয়ার কুঞ্জ,
ঝরে পড়ে আছে কাঁটাতরুতলে
রক্তকুসুমপুঞ্জ--
সেথা দুই বেলা ভাঙা-গড়া খেলা
অকূলসিন্ধুতীরে।
ওরে সাবধানী পথিক, বারেক
পথ ভুলে মর্‌ ফিরে।
বরমসৌ দিবসো ন পুনর্নিশা
ননু নিশৈব বরং ন পুনর্দিনম্‌।
উভয়মেতদুপৈত্বথবা ক্ষয়ং
প্রিয়জনেন ন যত্র সমাগমঃ।
আসে তো আসুক রাতি, আসুক বা দিবা,
যায় যদি যাক নিরবধি।
তাহাদের যাতায়াতে আসে যায় কিবা
প্রিয় মোর নাহি আসে যদি।
মন্দং নিধেহি চরণৌ পরিধেহি নীলং
বাসঃ পিধেহি বলয়াবলিমঞ্চলেন।
মা জল্প সাহসিনি শারদচন্দ্রকান্ত-
দন্তাংশবস্তব তমাংসি সমাপয়ন্তি।
ধীরে ধীরে চলো তন্বী, পরো নীলাম্বর,
অঞ্চলে বাঁধিয়া রাখো কঙ্কণ মুখর।
কথাটি কোয়ো না, তব দন্ত-অংশুরুচি
পথের তিমিররাশি পাছে ফেলে মুছি।
কবীন্দ্রাণাং চেতঃকমলবনমালাতপরুচিং
ভজন্তে যে সন্তঃ কতিচিদরুণামেব ভবতীং
বিরিঞ্চিপ্রেয়স্যাস্তরুণতরশৃঙ্গারলহরীং
গভীরাভির্বাগ্‌ভির্বিদধাতি সভারঞ্জনময়ীম্‌।
In such a night as this,
When the sweet wind did gently kiss the trees,
And they did make no noise, in such a night
Troilus methinks mounted the Troyan walls
and sighed his soul toward the Grecian tents,
Where Cressid lay that night.
অপসরতি ন চক্ষুষো মৃগাক্ষী
রজনিরিয়ং চ ন যাতি নৈতি নিদ্রা।
চক্ষু'পরে মৃগাক্ষীর চিত্রখানি ভাসে--
রজনীও নাহি যায়, নিদ্রাও না আসে।
নিঃসীমশোভাসৌভাগ্যং নতাঙ্গ্যা নয়নদ্বয়ং
অন্যোহন্যালোকনানন্দবিরহাদিব চঞ্চলং--
আনতাঙ্গী বালিকার শোভাসৌভাগ্যের সার নয়নযুগল
না দেখিয়া পরস্পরে তাই কি বিরহভরে হয়েছে চঞ্চল?
প্রিয়চক্ষু-দেখাদেখি যে আনন্দ তাই সে কি খুঁজিছে চঞ্চল?
প্রিয়চক্ষু-দেখাদেখি যে আনন্দ তাই সে কি খুঁজিছে চঞ্চল?
হত্বা লোচনবিশিখৈর্গত্বা কতিচিৎ পদানি পদ্মাক্ষী
জীবতি যুবা ন বা কিং ভূয়ো ভূয়ো বিলোকয়তি।
বিঁধিয়া দিয়া আঁখিবাণে
যায় সে চলি গৃহপানে,
জনমে অনুশোচনা--
বাঁচিল কি না দেখিবারে
চায় সে ফিরে বারে বারে
কমলবরলোচনা!
লোচনে হরিণগর্বমোচনে
মা বিদূষয় নতাঙ্গি কজ্জলৈঃ।
সায়কঃ সপদি জীবহারকঃ
কিং পুনর্হি গরলেন লেপিতঃ?
হরিণগর্বমোচন লোচনে
কাজল দিয়ো না সরলে!
এমনি তো বাণ নাশ করে প্রাণ,
কী কাজ লেপিয়া গরলে?
তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়
কোন্‌ পাথারে কোন্‌ পাষাণের ঘায়।
নবীন তরী নতুন চলে,
দিই নি পাড়ি অগাধ জলে,
বাহি তারে খেলার ছলে কিনার-কিনারায়।
তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়।
ভেসেছিল স্রোতের ভরে,
একা ছিলেন কর্ণ ধ'রে--
লেগেছিল পালের 'পরে মধুর মৃদু বায়।
সুখে ছিলেম আপন মনে,
মেঘ ছিল না গগনকোণে--
লাগবে তরী কুসুমবনে ছিলেন সে আশায়।
তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়।
তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়
কোন্‌ পাথারে কোন্‌ পাষাণের ঘায়।
গান। পিলু
বিরহে মরিব বলে ছিল মনে পণ।
কে তোরা বাহুতে বাঁধি করিলি বারণ?
ভেবেছিনু অশ্রুজলে, ডুবিব অকূল তলে,
কাহার সোনার তরী করিল তারণ?
গান
অলকে কুসুম না দিয়ো,
শুধু শিথিলকবরী বাঁধিয়ো।
কাজলবিহীন সজলনয়নে
হৃদয়দুয়ারে ঘা দিয়ো।
আকুল আঁচলে পথিকচরণে
মরণের ফাঁদ ফাঁদিয়ো।
না করিয়া বাদ মনে যাহা সাধ
নিদয়া নীরবে সাধিয়ো।
কেন সারাদিন ধীরে ধীরে
বালু নিয়ে শুধু খেল তীরে!
চলে গেল বেলা, রেখে মিছে খেলা
ঝাঁপ দিয়ে পড়ো কালো নীরে।
অকূল ছানিয়ে যা পাস তা নিয়ে
হেসে কেঁদে চলো ঘরে ফিরে।
নাহি জানি মনে কী বাসিয়া
পথে বসে আছে কে আসিয়া।
কী কুসুমবাসে ফাগুনবাতাসে
হৃদয় দিতেছে উদাসিয়া।
চল্‌ ওরে এই খেপা বাতাসেই
সাথে নিয়ে সেই উদাসীরে।
সখা, কী মোর করমে লেখি!
তপত বলিয়া তপনে ডরিনু,
চাঁদের কিরণ দেখি!
গান
ভুলে ভুলে আজ ভুলময়!
ভুলের লতায় বাতাসের ভুলে
ফুলে ফুলে হোক ফুলময়!
আনন্দ-ঢেউ ভুলের সাগরে
উছলিয়া হোক কূলময়।
গতং তদ্‌গাম্ভীর্যং তটমপি চিতং জালিকশতৈঃ।
সখে হংসোত্তিষ্ঠ, ত্বরিতমমুতো গচ্ছ সরসঃ॥
সে গাম্ভীর্য গেল কোথা, নদীতটে হেরো হোথা
জালিকেরা জালে ফেলে ঘিরে--
সখে হংস, ওঠো ওঠো, সময় থাকিতে ছোটো
হেথা হতে মানসের তীরে।
অয়ি কুরঙ্গ তপোবনবিভ্রমাৎ
উপগতাসি কিরাতপুরীমিমাম্॥
সর্বস্তরতু দুর্গাণি সর্বো ভদ্রাণি পশ্যতু।
সর্বঃ কামানবাপ্নোতু সর্বঃ সর্বত্র নন্দতু॥
আরো দেখুন
ঘরে বাইরে
Novels
মা গো, আজ মনে পড়ছে তোমার সেই সিঁথের সিঁদুর, চওড়া সেই লাল-পেড়ে শাড়ি, সেই তোমার দুটি চোখ-- শান্ত, স্নিগ্ধ, গভীর। সে যে দেখেছি আমার চিত্তাকাশে ভোরবেলাকার অরুণরাগরেখার মতো। আমার জীবনের দিন যে সেই সোনার পাথেয় নিয়ে যাত্রা করে বেরিয়েছিল। তার পরে? পথে কালো মেঘ কি ডাকাতের মতো ছুটে এল? সেই আমার আলোর সম্বল কি এক কণাও রাখল না? কিন্তু জীবনের ব্রাহ্মমুহূর্তে সেই-যে উষাসতীর দান, দুর্যোগে সে ঢাকা পড়ে, তবু সে কি নষ্ট হবার?
আমাদের দেশে তাকেই বলে সুন্দর যার বর্ণ গৌর। কিন্তু যে আকাশ আলো দেয় সে যে নীল। আমার মায়ের বর্ণ ছিল শামলা, তাঁর দীপ্তি ছিল পুণ্যের। তাঁর রূপ রূপের গর্বকে লজ্জা দিত।
এসো পাপ, এসো সুন্দরী!
তব চুম্বন-অগ্নি-মদিরা রক্তে ফিরুক সঞ্চরি।
অকল্যাণের বাজুক শঙ্খ,
ললাটে, লেপিয়া দাও কলঙ্ক,
নির্লাজ কালো কলুষপঙ্ক
    বুকে দাও প্রলয়ংকরী!
      রাই আমার    চলে যেতে ঢলে পড়ে।
               অগাধ জলের মকর যেমন,
                         ও তার    চিটে চিনি জ্ঞান নেই!
ভরা বাদর, মাহ ভাদর,
শূন্য মন্দির মোর!
ভরা বাদর, মাহ ভাদর,
শূন্য মন্দির মোর!
ভরা বাদর, মাহ ভাদর,
শূন্য মন্দির মোর!
ভরা বাদর, মাহ ভাদর,
শূন্য মন্দির মোর!
বিদ্যাপতি কহে কৈসে গোয়াঁয়বি
হরি বিনে দিনরাতিয়া?
আমার নিকড়িয়া রসের রসিক কানন ঘুরে ঘুরে
      নিকড়িয়া বাঁশের বাঁশি বাজায় মোহন সুরে।
আমার ঘর বলে, তুই কোথায় যাবি,
বাইরে গিয়ে সব খোয়াবি--
আমার প্রাণ বলে, তোর যা আছে সব
যাক-না উড়ে পুড়ে।
ওগো,যায় যদি তো যাক-না চুকে,
সব হারাব হাসিমুখে,
আমি এই চলেছি মরণসুধা
নিতে পরান পূরে।
ওগো, আপন যারা কাছে টানে
এ রস তারা কেই বা জানে,
আমার বাঁকা পথের বাঁকা সে যে
ডাক দিয়েছে দূরে।
এবার বাঁকার টানে সোজার বোঝা
পড়ুক ভেঙে-চুরে।
যখন দেখা দাও নি, রাধা, তখন বেজেছিল বাঁশি।
এখন চোখে চোখে চেয়ে সুর যে আমার গেল ভাসি।
তখন নানা তানের ছলে
ডাক ফিরেছে জলে স্থলে,
এখন আমার সকল কাঁদা রাধার রূপে উঠল হাসি।
বঁধুর লাগি কেশে আমি পরব এমন ফুল
স্বর্গে মর্তে তিন ভুবনে নাইকো যাহার মূল।
বাঁশির ধ্বনি হাওয়ায় ভাসে,
সবার কানে বাজবে না সে--
দেখ্‌ লো চেয়ে যমুনা ওই ছাপিয়ে গেল কূল।
She should never have looked at me,
If she meant I should not love her!
There are plenty... men you call such,
I suppose... she may discover
All her soul to, if she pleases,
And yet leave much as she found them:
But I'm not so, and she knew it
When she fixed me, glancing round them.
আমায় ভালো বাসবে না সে এই যদি তার ছিল জানা,
তবে কি তার উচিত ছিল আমার-পানে দৃষ্টি হানা?
তেমন-তেমন অনেক মানুষ আছে তো এই ধরাধামে
(যদিচ ভাই, আমি তাদের গণি নেকো মানুষ নামে)--
যাদের কাছে সে যদি তার খুলে দিত প্রাণের ঢাকা,
তবু তারা রইত খাড়া যেমন ছিল তেমনি ফাঁকা।
আমি তো নই তাদের মতন সে কথা সে জানত মনে
যখন মোরে বাঁধল ধ'রে বিদ্ধ ক'রে নয়নকোণে।
মধুঋতু নিত্য হয়ে রইল তোমার মধুর দেশে।
যাওয়া-আসার কান্নাহাসি হাওয়ায় সেথা বেড়ায় ভেসে।
যার যে জনা সেই শুধু যায়, ফুল ফোটা তো ফুরোয় না হায়--
ঝরবে যে ফুল সেই কেবলি ঝরে পড়ে বেলাশেষে।
যখন আমি ছিলেম কাছে তখন কত দিয়েছি গান;
এখন আমার দূরে যাওয়া, এরও কি গো নাই কোনো দান?
পুষ্পবনের ছায়ায় ঢেকে এই আশা তাই গেলেম রেখে--
আগুন-ভরা ফাগুনকে তোর কাঁদায় যেন আষাঢ় এসে॥
আরো দেখুন
61
Verses
THOU HAST given us to live.
Let us uphold this honour with all our strength and will;
For thy glory rests upon the glory that we are.
Therefore in thy name we oppose the power that would plant its
banner upon our soul.
Let us know that thy light grows dim in the heart that bears its
insult of bondage.
That the life, when it becomes feeble, timidly yields thy throne to untruth.
For weakness is the traitor who betrays our soul.
Let this be our prayer to thee
Give us power to resist pleasure where it enslaves us.
To lift our sorrow up to thee as the summer holds its midday sun.
Make us strong that our worship may flower in love, and bear
fruit in work.
Make us strong that we may not insult the weak and the fallen,
That we may hold our love high where all things around us are
wooing the dust.
They fight and kill for self-love, giving it thy name.
They fight for hunger that thrives on brothers' flesh,
They fight against thine anger and die.
But let us stand firm and suffer with strength
for the True, for the Good, for the Eternal in man,
for thy Kingdom which is in the union of hearts,
for the freedom which is of the Soul.
আরো দেখুন
আপদ
Stories
সন্ধ্যার দিকে ঝড় ক্রমশ প্রবল হইতে লাগিল। বৃষ্টির ঝাপট, বজ্রের শব্দ এবং বিদ্যুতের ঝিকমিকিতে আকাশে যেন সুরাসুরের যুদ্ধ বাধিয়া গেল। কালো কালো মেঘগুলো মহাপ্রলয়ের জয়পতাকার মতো দিগ্‌বিদিকে উড়িতে আরম্ভ করিল, গঙ্গার এপারে ওপারে বিদ্রোহী ঢেউগুলো কলশব্দে নৃত্য জুড়িয়া দিল, এবং বাগানের বড়ো বড়ো গাছগুলো সমস্ত শাখা ঝট্‌পট্‌ করিয়া হাহুতাশ সহকারে দক্ষিণে বামে লুটোপুটি করিতে লাগিল।
তখন চন্দননগরের বাগানবাড়িতে একটি দীপালোকিত রুদ্ধকক্ষে খাটের সম্মুখবর্তী নীচের বিছানায় বসিয়া স্ত্রী-পুরুষে কথাবার্তা চলিতেছিল।
আরো দেখুন
ভারত রে, তোর কলঙ্কিত পরমাণুরাশি
Songs
              ভারত রে, তোর কলঙ্কিত পরমাণুরাশি
        যত দিন সিন্ধু না ফেলিবে গ্রাসি  তত দিন তুই কাঁদ্‌ রে ।
        এই হিমগিরি স্পর্শিয়া আকাশ  প্রাচীন হিন্দুর কীর্তি-ইতিহাস
        যত দিন তোর শিয়রে দাঁড়ায়ে  অশ্রুজলে তোর বক্ষ ভাসাইবে
                    তত দিন তুই কাঁদ্‌ রে ।।
        যে দিন তোমার গিয়াছে চলিয়া  সে দিন তো আর আসিবে না ।
        যে রবি পশ্চিমে পড়েছে ঢলিয়া  সে আর পুরবে উঠিবে না ।
        এমনি সকল নীচ হীনপ্রাণ  জনমেছে তোর কলঙ্কী সন্তান
        একটি বিন্দু অশ্রুও কেহ  তোমার তরে দেয় না ঢালি ।
      যে দিন তোমার তরে শোণিত ঢালিত  সে দিন যখন গিয়াছে চলি
                    তখন, ভারত, কাঁদ্‌ রে ।।
        তবে বিধি কেন এত অলঙ্কারে  রেখেছ সাজায়ে ভারতকায় ।
        ভারতের বনে পাখি গায় গান,  স্বর্ণমেঘ-মাখা ভারতবিমান—
        হেথাকার লতা ফুলে ফুলে ভরা,  স্বর্ণশস্যময়ী হেথাকার ধরা—
                    প্রফুল্ল তটিনী বহিয়ে যায় ।
        কেন লজ্জাহীনা অলঙ্কার পরি    রোগশুষ্কমুখে হাসিরাশি ভরি
                    রূপের গরব করিস্‌ হায় ।
                যে দিন গিয়াছে সে তো ফিরিবে না,
                    তবে, রে ভারত, কাঁদ্‌ রে ।।
        ভারত, তোর এ কলঙ্ক দেখিয়া  শরমে মলিন মুখ লুকাইয়া
        আমরা যে কবি বিজনে কাঁদিব,  বিজনে বিষাদে বীণা ঝঙ্কারিব,
                    তাতেও যখন স্বাধীনতা নাই
                           তখন, ভারত, কাঁদ্‌ রে ।।
আরো দেখুন
The Parrot`s Training
Stories
ONCE UPON A time there was a bird. It was ignorant. It sang all right, but never recited scriptures. It hopped pretty frequently, but lacked manners.
Said the Raja to himself: ‘Ignorance is costly in the long run. For fools consume as much food as their betters, and yet give nothing in return.’
আরো দেখুন
137
Verses
     পুষ্পের মুকুল
নিয়ে আসে অরণ্যের
     আশ্বাস বিপুল।
আরো দেখুন
মাস্টারমশায়
Stories
রাত্রি তখন প্রায় দুটা। কলিকাতার নিস্তব্ধ শব্দসমুদ্রে একটুখানি ঢেউ তুলিয়া একটা বড়ো জুড়িগাড়ি ভবানীপুরের দিক হইতে আসিয়া বির্জিতলাওয়ের মোড়ের কাছে থামিল। সেখানে একটা ঠিকাগাড়ি দেখিয়া, আরোহী বাবু তাহাকে ডাকিয়া আনাইলেন। তাহার পাশে একটি কোট-হ্যাট-পরা বাঙালি বিলাতফের্তা যুবা সম্মুখের আসনে দুই পা তুলিয়া দিয়া একটু মদমত্ত অবস্থায় ঘাড় নামাইয়া ঘুমাইতেছিল। এই যুবকটি নূতন বিলাত হইতে আসিয়াছে। ইহারই অভ্যর্থনা উপলক্ষে বন্ধুমহলে একটা খানা হইয়া গেছে। সেই খানা হইতে ফিরিবার পথে একজন বন্ধু তাহাকে কিছুদূর অগ্রসর করিবার জন্য নিজের গাড়িতে তুলিয়া লইয়াছেন। তিনি ইহাকে দু-তিনবার ঠেলা দিয়া জাগাইয়া কহিলেন, 'মজুমদার, গাড়ি পাওয়া গেছে, বাড়ি যাও।'
মজুমদার সচকিত হইয়া একটা বিলাতি দিব্য গালিয়া ভাড়াটে গাড়িতে উঠিয়া পড়িল। তাহার গাড়োয়ানকে ভালো করিয়া ঠিকানা বাতলাইয়া দিয়া ব্রুহাম গাড়ির আরোহী নিজের গম্যপথে চলিয়া গেলেন।
আরো দেখুন
সম্পাদক
Stories
আমার স্ত্রী-বর্তমানে প্রভা সম্বন্ধে আমার কোনো চিন্তা ছিল না। তখন প্রভা অপেক্ষা প্রভার মাতাকে লইয়া কিছু অধিক ব্যস্ত ছিলাম।
তখন কেবল প্রভার খেলাটুকু হাসিটুকু দেখিয়া, তাহার আধো আধো কথা শুনিয়া এবং আদরটুকু লইয়াই তৃপ্ত থাকিতাম; যতক্ষণ ভালো লাগিত নাড়াচাড়া করিতাম, কান্না আরম্ভ করিলেই তাহার মার কোলে সমর্পণ করিয়া সত্বর অব্যাহতি লইতাম। তাহাকে যে বহু চিন্তা ও চেষ্টায় মানুষ করিয়া তুলিতে হইবে, এ-কথা আমার মনে আসে নাই।
আরো দেখুন