সেই ভালো সেই
Songs
     সেই ভালো সেই ভালো,     আমারে নাহয় না জানো।
     দূরে গিয়ে নয় দুঃখ দেবে,    কাছে কেন লাজে লাজানো ॥
মোর বসন্তে লেগেছে তো সুর,       বেণুবনছায়া হয়েছে মধুর--
          থাক-না এমনি গন্ধে-বিধুর মিলনকুঞ্জ সাজানো।
     গোপনে দেখেছি তোমার ব্যাকুল    নয়নে ভাবের খেলা।
     উতল আঁচল, এলোথেলো চুল,    দেখেছি ঝড়ের বেলা।
তোমাতে আমাতে হয় নি যে কথা      মর্মে আমার আছে সে বারতা--
          না বলা বাণীর নিয়ে আকুলতা    আমার বাঁশিটি বাজানো ॥
আরো দেখুন
ব্যবধান
Stories
সম্পর্ক মিলাইয়া দেখিতে গেলে বনমালী এবং হিমাংশুমালী উভয়ে মামাতো পিসতুতো ভাই; সেও অনেক হিসাব করিয়া দেখিলে তবে মেলে। কিন্তু ইহাদের দুই পরিবার বহুকাল হইতে প্রতিবেশী, মাঝে কেবল একটা বাগানের ব্যবধান, এইজন্য ইহাদের সম্পর্ক নিতান্ত নিকট না হইলেও ঘনিষ্ঠতার অভাব নাই।
বনমালী হিমাংশুর চেয়ে অনেক বড়ো। হিমাংশুর যখন দন্ত এবং বাক্যস্ফূর্তি হয় নাই, তখন বনমালী তাহাকে কোলে করিয়া এই বাগানে সকালে সন্ধ্যায় হাওয়া খাওয়াইয়াছে, খেলা করিয়াছে, কান্না থামাইয়াছে, ঘুম পাড়াইয়াছে এবং শিশুর মনোরঞ্জন করিবার জন্য পরিণতবুদ্ধি বয়স্ক লোকদিগকে সবেগে শিরশ্চালন, তারস্বরে প্রলাপভাষণ প্রভৃতি যে-সকল বয়সানুচিত চাপল্য এবং উৎকট উদ্যম প্রকাশ করিতে হয়, বনমালী তাহাও করিতে ত্রুটি করে নাই।
আরো দেখুন
বাদল-বাউল বাজায় রে
Songs
          বাদল-বাউল বাজায় রে একতারা--
     সারা   বেলা ধ'রে ঝরোঝরো ঝরো ধারা ॥
জামের বনে ধানের ক্ষেতে   আপন তানে আপনি মেতে
              নেচে নেচে হল সারা ॥
     ঘন জটার ঘটা ঘনায় আঁধার আকাশ-মাঝে,
     পাতায় পাতায় টুপুর টুপুর নূপুর মধুর বাজে।
ঘর-ছাড়ানো আকুল সুরে    উদাস হয়ে বেড়ায় ঘুরে
              পুবে হাওয়া গৃহহারা ॥
আরো দেখুন
কর্মফল
Stories
আজ সতীশের মাসি সুকুমারী এবং মেসোমশায় শশধরবাবু আসিয়াছেন-- সতীশের মা বিধুমুখী ব্যস্তসমস্তভাবে তাঁহাদের অভ্যর্থনায় নিযুক্ত। 'এসো দিদি, বোসো। আজ কোন্‌ পুণ্যে রায়মশায়ের দেখা পাওয়া গেল! দিদি না আসলে তোমার আর দেখা পাবার জো নেই।'
শশধর। এতেই বুঝবে তোমার দিদির শাসন কিরকম কড়া। দিনরাত্রি চোখে চোখে রাখেন।
আরো দেখুন
হিন্দী: মধ্যযুগ
Verses
            ১
গুরুচরণনকী আশা।
গুরুকৃপা ভব নিশা সিরাণী।
     দীপত জ্ঞান উজালা।
কারী কমরিয়া গুরু মোহি দীনী,
     নাম জপনকো মালা।
জল পীবন কো তুম্বী দীনী
     আসন্‌ চরণন পাসা।
     গুরুচরণনকী আশা।
                        --গোরখনাথের অন্যতম শিষ্য
               ১
গুরু, আমায় মুক্তিধনের
     দেখাও দিশা।
কম্বল মোর সম্বল হোক
     দিবানিশা।
সম্পদ হোক জপের মালা
নামমণির দীপ্তি -জ্বালা।
তুম্বীতে পান করব যে জল
     মিটবে তাহে বিষয়-তৃষা।
              ২
করবোঁ মৈঁ কবন বহানা
     গবন হমরো নিয়রানা।
সব সখিয়নমেঁ চুনরী মোরী মৈলী--
     দুজে পিয়া ঘর জানা।
এক লাজ মোহী শাস ননদকী--
     দুজে পিয়া মারে তানা।
পিয়াকে পগিয়া রঙ্গী জোনা রঙ্গমে
     হমরো চুনরিয়া রঙ্গানা॥
                                    --কবীর
              ২
     চূড়াটি তোমার
   যে রঙে রাঙালে, প্রিয়,
     সে রঙে আমার
   চুনরি রাঙিয়ে দিয়ো।
          পাঠান্তর
তোমার ঐ   মাথার চূড়ায়
     যে রঙ আছে উজ্জ্বলি
সে রঙ দিয়ে   রাঙাও আমার
     বুকের কাঁচলি।
আরো দেখুন
রান্নার সব ঠিক
Verses
রান্নার সব ঠিক,
     পেয়েছি তো নুনটা--
অল্প অভাব আছে,
     পাইনি বেগুনটা।
পরিবেষণের তরে
     আছি মোরা সব ভাই,
যাদের আসার কথা
     অনাগত সব্বাই।
পান পেলে পুরো হয়,
     জুটিয়েছি চুনটা--
একটু-আধটু বাকি,
     নাই তাহে কুণ্ঠা।
আরো দেখুন
হৈমন্তী
Stories
কন্যার বাপ সবুর করিতে পারিতেন, কিন্তু বরের বাপ সবুর করিতে চাহিলেন না। তিনি দেখিলেন,মেয়েটির বিবাহের বয়স পার হইয়া গেছে, কিন্তু আর কিছুদিন গেলে সেটাকে ভদ্র বা অভদ্র কোনো রকমে চাপা দিবার সময়টাও পার হইয়া যাইবে। মেয়ের বয়স অবৈধ রকমে বাড়িয়া গেছে বটে, কিন্তু পণের টাকার আপেক্ষিক গুরুত্ব এখনো তাহার চেয়ে কিঞ্চিৎ উপরে আছে, সেইজন্যই তাড়া।
আমি ছিলাম বর। সুতরাং, বিবাহসম্বন্ধে আমার মত যাচাই করা অনাবশ্যক ছিল। আমার কাজ আমি করিয়াছি, এফ.এ. পাস করিয়া বৃত্তি পাইয়াছি। তাই প্রজাপতির দুই পক্ষ, কন্যাপক্ষ ও বরপক্ষ ঘন ঘন বিচলিত হইয়া উঠিল।
আরো দেখুন
যাই যাই, ছেড়ে দাও
Songs
যাই যাই, ছেড়ে দাও--স্রোতের মুখে ভেসে যাই।
যা হবার তা হবে আমার, ভেসেছি তো ভেসে যাই॥
ছিল যত সহিবার         সহেছি তো অনিবার--
এখন কিসের আশা আর।        ভেসেছি তো ভেসে যাই॥
আরো দেখুন
সুখদুঃখ
Verses
শ্রাবণের মোটা ফোঁটা বাজিল যূথীরে--
কহিল, মরিনু হায় কার মৃত্যুতীরে!
বৃষ্টি কহে, শুভ আমি নামি মর্তমাঝে,
কারে সুখরূপে লাগে কারে দুঃখ বাজে।
আরো দেখুন
বদনাম
Stories
ক্রিং ক্রিং ক্রিং সাইকেলের আওয়াজ; সদর দরজার কাছে লাফ দিয়ে নেমে পড়লেন ইন্‌স্‌পেক্টার বিজয়বাবু। গায়ে ছাঁটা কোর্তা, কোমরে কোমরবন্ধ, হাফ-প্যাণ্টপরা, চলনে কেজো লোকের দাপট। দরজার কড়া নাড়া দিতেই গিন্নি এসে খুলে দিলেন।
ইন্‌স্‌পেক্টার ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই ঝংকার দিয়ে উঠলেন--'এমন করে তো আর পারি নে, রাত্তিরের পর রাত্তির খাবার আগলে রাখি! তুমি কত চোর ডাকাত ধরলে, সাধু সজ্জনও বাদ গেল না, আর ঐ একটা লোক অনিল মিত্তিরের পিছন পিছন তাড়া করে বেড়াচ্ছ, সে থেকে থেকে তোমার সামনে এসে নাকের উপর বুড়ো আঙুল নাড়া দিয়ে কোথায় দৌড় মারে তার ঠিকানা নেই। দেশসুদ্ধ লোক তোমার এই দশা দেখে হেসে খুন, এ যেন সার্কাসের খেলা হচ্ছে।'
আরো দেখুন
দানপ্রতিদান
Stories
বড়োগিন্নি যে কথাগুলা বলিয়া গেলেন, তাহার ধার যেমন তাহার বিষও তেমনি। যে-হতভাগিনীর উপর প্রয়োগ করিয়া গেলেন, তাহার চিত্তপুত্তলি একেবারে জ্বলিয়া জ্বলিয়া লুটিতে লাগিল।
বিশেষত, কথাগুলা তাহার স্বামীর উপর লক্ষ্য করিয়া বলা-- এবং স্বামী রাধামুকুন্দ তখন রাত্রের আহার সমাপন করিয়া অনতিদূরে বসিয়া তাম্বুলের সহিত তাম্রকূটধূম সংযোগ করিয়া খাদ্যপরিপাকে প্রবৃত্ত ছিলেন। কথাগুলো শ্রুতিপথে প্রবেশ করিয়া তাঁহার পরিপাকের যে বিশেষ ব্যাঘাত করিল, এমন বোধ হইল না। অবিচলিত গাম্ভীর্যের সহিত তাম্রকূট নিঃশেষ করিয়া অভ্যাসমত যথাকালে শয়ন করিতে গেলেন।
আরো দেখুন
125
Verses
THE GREAT is a born child; when he dies he gives his great childhood to the world.
আরো দেখুন