২
ফাগুনপূর্ণিমায় আচার্যের প্রধান শিষ্য কুমারসেন গুরুর পায়ে একটি আমের মঞ্জরী রেখে প্রণাম করলে। বললে, 'মাধবীর হৃদয় পেয়েছি, এখন প্রভুর যদি সম্মতি পাই তা হলে দুজনে মিলে আপনার চরণসেবা করি।' আচার্যের চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগল। বললেন, 'আনো দেখি আমার তম্বুরা। আর, তোমরা দুইজনে রাজার মতো, রানীর মতো, আমার সামনে এসে বসো।' তম্বুরা নিয়ে আচার্য গান গাইতে বসলেন। দুলহা-দুলহীর গান, সাহানার সুরে। বললেন, 'আজ আমার জীবনের শেষ গান গাব।' এক পদ গাইলেন। গান আর এগোয় না। বৃষ্টির ফোঁটায় ভেরে-ওঠা জুঁইফুলটির মতো হাওয়ায় কাঁপতে কাঁপতে খসে পড়ে। শেষে তম্বুরাটি কুমারসেনের হাতে দিয়ে বললেন, 'বৎস, এই লও আমার যন্ত্র।' তার পরে মাধবীর হাতখানি তার হাতে তুলে দিয়ে বললেন, 'এই লও আমার প্রাণ।' তার পরে বললেন, 'আমার গানটি দুজনে মিলে শেষ করে দাও, আমি শুনি।' মাধবী আর কুমার গান ধরলে-- সে যেন আকাশ আর পূর্ণচাঁদের কণ্ঠ মিলিয়ে গাওয়া। |