১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৪


 

সুসময় (susomoy)


বৈশাখী ঝড় যতই আঘাত হানে

      সন্ধ্যা-সোনার ভাণ্ডারদ্বার-পানে,

           দস্যুর বেশে যতই করে সে দাবি

           কুণ্ঠিত মেঘ হারায় সোনার চাবি,

      গগন সঘন অবগুন্ঠন টানে।

      "খোলো খোলো মুখ' বনলক্ষ্মীরে ডাকে,

      নিবিড় ধুলায় আপনি তাহারে ঢাকে।

           "আলো দাও' হাঁকে, পায় না কাহারো সাড়া,

           আঁধার বাড়ায়ে বেড়ায় লক্ষ্মীছাড়া,

      পথ সে হারায় আপন ঘূর্ণিপাকে।

      তার পরে যবে শিউলিফুলের বাসে

      শরৎলক্ষ্মী শুভ্র আলোয় ভাসে,

           নদীর ধারায় নাই মিছে মত্ততা,

           কুন্দকলির স্নিগ্ধশীতল কথা,

      মৃদু উচ্ছ্বাস মর্মরে ঘাসে ঘাসে, --

      শিশির যখন বেণুর পাতার আগে

      রবির প্রসাদ নীরব চাওয়ায় মাগে,

           সবুজ খেতের নবীন ধানের শিষে

           ঢেউ খেলে যায় আলোকছায়ায় মিশে,

      গগনসীমায় কাশের কাঁপন লাগে, --

      হঠাৎ তখন সূর্যডোবার কালে

      দীপ্তি লাগায় দিক্‌ললনার ভালে;

           মেঘ ছেঁড়ে তার পর্দা আঁধার-কালো,

           কোথায় সে পায় স্বর্গলোকের আলো,

      চরম খনের পরম প্রদীপ জ্বালে।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •