১১ চৈত্র, ১৩৩৮


 

ছন্দোমাধুরী (chhondomadhuri)


পাষাণে-বাঁধা কঠোর পথ

চলেছে তাহে কালের রথ,

          ঘুরিছে তার মমতাহীন চাকা।

বিরোধ উঠে ঘর্ঘরিয়া,

বাতাস উঠে জর্জরিয়া

          তৃষ্ণাভরা তপ্তবালু-ঢাকা।

নিঠুর লোভ জগৎ ব্যেপে

দুর্বলেরে মারিছে চেপে,

          মথিয়া তুলে হিংসাহলাহল।

অর্থহীন কিসের তরে

এ কাড়াকাড়ি ধুলার 'পরে

          লজ্জাহীন বেসুর কোলাহল!

                   হতাশ হয়ে যেদিকে চাহি

       কোথাও কোনো উপায় নাহি,

                 মানুষরূপে দাঁড়ায় বিভীষিকা।

করুণাহীন দারুণ ঝড়ে

দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে

          অন্যায়ের প্রলয়ানলশিখা।

সহসা দেখি, সুন্দর হে,

কে দূতী তব বারতা বহে

          ব্যাঘাত-মাঝে অকালে অস্থানে।

ছুটিয়া আসে গহন হতে

আত্মহারা উছল স্রোতে

          রসের ধারা মরুভূমির পানে।

ছন্দোভাঙা হাটের মাঝে

তরল তালে নূপুর বাজে,

          বাতাসে যেন আকাশবাণী ফুটে।

কর্কশেরে নৃত্য হানি

ছন্দোময়ী মূর্তিখানি

          ঘূর্ণিবেগে আবর্তিয়া উঠে।

ভরিয়া ঘট অমৃত আনে,

সে কথা সে কি আপনি জানে--

          এনেছে বহি সীমাহীনের ভাষা।

প্রবল এই মিথ্যারাশি,

তারেও ঠেলি উঠেছে হাসি

          অবলারূপে চিরকালের আশা।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •