প্রয়াগ, ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৫


 

পরিণয়মঙ্গল (porinoymongol)


তোমাদের বিয়ে হল ফাগুনের চৌঠা,

অক্ষয় হয়ে থাক্‌ সিঁদুরের কৌটা।

      সাত চড়ে তবু যেন কথা মুখে না ফোটে,

      নাসিকার ডগা ছেড়ে ঘোমটাও না ওঠে;

শাশুড়ি না বলে যেন "কী বেহায়া বৌটা'।

 

"পাক প্রণালী'র মতে কোরো তুমি রন্ধন,

জেনো ইহা প্রণয়ের সব-সেরা বন্ধন।

      চামড়ার মতো যেন না দেখায় লুচিটা,

      স্বরচিত ব'লে দাবি নাহি করে মুচিটা;

পাতে বসে পতি যেন নাহি করে ক্রন্দন।

 

যা-ই কেন বলুক-না প্রতিবেশী নিন্দুক

খুব ক'ষে আঁটা যেন থাকে তব সিন্দুক।

      বন্ধুরা ধার চায়, দাম চায় দোকানি,

      চাকর-বাকর চায় মাসহারা-চোকানি--

ত্রিভুবনে এই আছে অতি বড়ো তিন দুখ।

 

বই-কেনা শখটারে দিয়ো নাকো প্রশ্রয়;

ধার নিয়ে ফিরিয়ো না, তাতে নাহি দোষ রয়।

      বোঝ আর না-ই বোঝ কাছে রেখো গীতাটি,

      মাঝে মাঝে উলটিয়ো মনুসংহিতাটি;

"স্ত্রী স্বামীর ছায়াসম' মনে যেন হোঁশ রয়।

 

যদি কোনো শুভদিনে ভর্তা না ভর্ৎসে,

বেশি ব্যয় হয় পড়ে পাকা রুই মৎস্যে,

      কালিয়ার সৌরভে প্রাণ যবে উতলায়,

      ভোজনে দুজনে শুধু বসিবে কি দু'তলায়।

লোভী এ কবির নাম মনে রেখো, বৎসে।

 

দ্রুত উন্নতিবেগে স্বামীর অদৃষ্ট

দারোগাগিরিতে এসে শেষে পাক্‌ ইষ্ট।

      বহু পুণ্যের ফল যদি তার থাকে রে,

      রায়বাহাদুর-খ্যাতি পাবে তবে আখেরে;

তার পরে আরো কী বা রবে অবশিষ্ট।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •