যাত্রী আমি ওরে
যাত্রী আমি ওরে,
পারবে না কেউ আমায় রাখতে ধরে।।
দুঃখসুখের বাঁধন সবই মিছে, বাঁধা এ ঘর রইবে কোথায় পিছে,
বিষয়বোঝা টানে আমায় নীচে– ছিন্ন হয়ে ছড়িয়ে যাবে পড়ে।।
যাত্রী আমি ওরে,
চলতে পথে গান গাহি প্রাণ ভ’রে।
দেহদুর্গে খুলবে সকল দ্বার, ছিন্ন হবে শিকল বাসনার,
ভালো মন্দ কাটিয়ে হব পার– চলতে রব লোকে লোকান্তরে।।
যাত্রী আমি ওরে,
যা-কিছু ভার যাবে সকল সরে।
আকাশ আমায় ডাকে দূরের পানে ভাষাবিহীন অজানিতের গানে,
সকাল-সাঁঝে আমার পরান টানে কাহার বাঁশি এমন গভীর স্বরে।।
যাত্রী আমি ওরে,
বাহির হলেম না জানি কোন্ ভোরে।
তখন কোথাও গায় নি কোনো পাখি, কী জানি রাত কতই ছিল বাকি,
নিমেষহারা শুধু একটি আঁখি জেগে ছিল অন্ধকারের প’রে।।
যাত্রী আমি ওরে,
কোন্ দিনান্তে পৌঁছব কোন্ ঘরে।
কোন্ তারকা দীপ জ্বালে সেইখানে, বাতাস কাঁদে কোন্ কুসুমের ঘ্রাণে,
কে গো সেথায় স্নিগ্ধ দু’নয়ানে অনাদিকাল চাহে আমার তরে।।
রাগ : বাউল
তাল : দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ) : ২৬ আষাঢ়, ১৩১৭
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ) : 1910
রচনাস্থান : গোরাই নদী বক্ষে
স্বরলিপিকার: 1910