১৩ মাঘ, ১৩৩৯


 

চিঠিপত্র (chithipotro 9)

শ্রীদিলীপকুমার রায়কে লিখিত - ৫


ছন্দ সম্বন্ধে তুমি অতিমাত্র সচেতন হয়ে উঠেছ। শুধু তাই নয়, কোনোমতে নতুন ছন্দ তৈরি  করাকে তুমি বিশেষ সার্থকতা বলে কল্পনা কর। আশা করি, এই অবস্থা একদিন তুমি কাটিয়ে উঠবে এবং ছন্দ সম্বন্ধে একেবারেই সহজ হবে তোমার মন। আজ তুমি ভাগবিভাগ করে ছন্দ যাচাই করছ, প্রাণের পরীক্ষা চলছে দেহ-ব্যবচ্ছেদ করে। যারা ছান্দসিক তাদের উপর এই কাটাছেঁড়ার ভার দাও, তুমি যদি ছন্দরসিক হও তবে ছুরিকাঁচি ফেলে দিয়ে কানের পথ খোলসা রাখো যেখান দিয়ে বাঁশি মরমে প্রবেশ করে। গীতার একটা শ্লোকের আরম্ভ এই --

 

                             অপরং ভবতো জন্ম,

 

 

ঠিক তার পরবর্তী শ্লোক --

 

                             বহূনি মে ব্যতীতানি।

 

 

দ্বিতীয়টির সমান ওজনে প্রথমটি যদি লিখতে হয় তাহলে লেখা উচিত "অপারং ভাবতো জন্ম'। কিন্তু, যাঁরা এই ছন্দ বানিয়েছিলেন তাঁরা ছান্দসিকের হাটে গিয়ে নিক্তি নিয়ে বসেন নি। আমি যখন "পঞ্জাব সিন্ধু গুজরাট মরাঠা' লিখেছিলুম তখন জানতুম, কোনো কবির কানে খটকা লাগবে না, ছান্দসিকের কথা মনে ছিল না।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •