১০ আশ্বিন, ১৩২৮


 

   জ্যোতিষী (jyotishi)


            ঐ যে রাতের তারা

                      জানিস কি, মা, কারা?

সারাটিখন ঘুম না জানে

চেয়ে থাকে মাটির পানে

          যেন কেমনধারা!

আমার যেমন নেইকো ডানা,

আকাশপানে উড়তে মানা,

          মনটা কেমন করে,

তেমনি ওদের পা নেই বলে

পারে না যে আসতে চলে

          এই পৃথিবীর 'পরে।

সকালে যে নদীর বাঁকে

জল নিতে যাস কলসী কাঁখে

          শজনেতলার ঘাটে

সেথায় ওদের আকাশ থেকে

আপন ছায়া দেখে দেখে

          সারা পহর কাটে।

ভাবে ওরা চেয়ে চেয়ে,

হতেম যদি গাঁয়ের মেয়ে

          তবে সকালসাঁজে

কলসীখানি ধরে বুকে

সাঁতরে নিতেম মনের সুখে

          ভরা নদীর মাঝে।

আর আমাদের ছাতের কোণে

তাকায়, যেথা গভীর বনে

          রাক্ষসদের ঘরে

রাজকন্যা ঘুমিয়ে থাকে,

সোনার কাঠি ছুঁইয়ে তাকে

          জাগাই শয্যা 'পরে।

ভাবে ওরা, আকাশ ফেলে

হত যদি তোমার ছেলে,

          এইখানে এই ছাতে

দিন কাটাত খেলায় খেলায়

তার পরে সেই রাতের বেলায়

          ঘুমোত তোর সাথে।

যেদিন আমি নিষুত রাতে

হঠাৎ উঠি বিছানাতে

          স্বপন থেকে জেগে'

জানলা দিয়ে দেখি চেয়ে

তারাগুলি আকাশ ছেয়ে

          ঝাপসা আছে মেঘে!

বসে বসে ক্ষণে ক্ষণে

সেদিন আমার হয় যে মনে

          ওদের স্বপ্ন বলে।

অন্ধকারের ঘুম লাগে যেই

ওরা আসে সেই পহরেই,

          ভোর বেলা যায় চলে।

আঁধার রাতি অন্ধ ও যে,

দেখতে না পায়, আলো খোঁজে,

          সবই হারিয়ে ফেলে।

তাই আকাশে মাদুর পেতে

সমস্তখন স্বপনেতে

          দেখা-দেখা খেলে।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •