ফাল্গুন ?, ১৩৩৮


 

মানী (mani)


উচ্চপ্রাচীরে রুদ্ধ তোমার

                 ক্ষুদ্র ভুবনখানি

           হে মানী, হে অভিমানী।

           মন্দিরবাসী দেবতার মতো

                 সম্মানশৃঙ্খলে

           বন্দী রয়েছে পূজার আসনতলে।

      সাধারণজন-পরশ এড়ায়ে

           নিজেরে পৃথক করি

      আছ দিনরাত গৌরবগুরু

            কঠিন মূর্তি ধরি।

          সবার যেখানে ঠাঁই

      বিপুল তোমার মর্যাদা নিয়ে

           সেথায় প্রবেশ নাই।

               অনেক উপাধি তব,

      মানুষ-উপাধি হারায়েছ শুধু

          সে ক্ষতি কাহারে কব।

            ভক্তেরা মন্দিরে

      পূজারির কৃপা বহু-দামে কিনে

           পূজা দিয়ে যায় ফিরে

      ঝিল্লিমুখর বেণুবীথিকার ছায়ে

           আপন নিভৃত গাঁয়ে।

      তখন একাকী বৃথা বিচিত্র

           পাষাণভিত্তি-মাঝে

      দেবতার বুকে জান সে কী ব্যথা বাজে।

           বেদির বাঁধন করি ধূলিসাৎ

                 অচলেরে দিয়ে নাড়া

      মানুষের মাঝে সে-যে পেতে চায় ছাড়া।

      হে রাজা, তোমার পূজাঘেরা মন

           আপনারে নাহি জানে।

          প্রাণহীন সম্মানে

      উজ্জ্বল রঙে রঙকরা তুমি ঢেলা ড্ড

      তোমার জীবন সাজানো পুতুল

           স্থূল মিথ্যার খেলা।

      আপনি রয়েছ আড়ষ্ট হয়ে

         আপনার অভিশাপে,

           নিশ্চল তুমি নিজ গর্বের চাপে।

          সহজ প্রাণের মান নিয়ে যারা

           মুক্ত ভুবনে ফিরে

          মরিবার আগে তাদের পরশ

           লাগুক তোমার শিরে।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •