৪ মাঘ, ১৩৩৮


 

        মরণমাতা (moronmata)


   মরণমাতা, এই যে কচি প্রাণ,

          বুকের এ যে দুলাল তব, তোমারই এ যে দান।

                   ধুলায় যবে নয়ন আঁধা,

                   জড়ের স্তূপে বিপুল বাধা,

তখন দেখি তোমারই কোলে নবীন শোভমান।

        নবদিনের জাগরণের ধন,

গোপনে তারে লালন করে তিমির-আবরণ।

          পরদাঢাকা তোমার রথে

          বহিয়া আনো প্রকাশপথে

নূতন আশা, নূতন ভাষা, নূতন আয়োজন।

        চলে যে যায় চাহে না আর পিছু,

তোমারই হাতে সঁপিয়া যায় যা ছিল তার কিছু।

          তাহাই লয়ে মন্ত্র পড়ি

          নূতন যুগ তোলো যে গড়ি--

নূতন ভালোমন্দ কত, নূতন উঁচুনিচু।

        রোধিয়া পথ আমি না রব থামি;

প্রাণের স্রোত অবাধে চলে তোমারই অনুগামী।

                   নিখিলধারা সে স্রোত বাহি

          ভাঙিয়া সীমা চলিতে চাহি,

অচলরূপে রব না বাঁধা অবিচলিত আমি।

        সহজে আমি মানিব অবসান,

ভাবী শিশুর জনমমাঝে নিজেরে দিব দান।

          আজি রাতের যে-ফুলগুলি

          জীবনে মম উঠিল দুলি

ঝরুক তারা কালি প্রাতের ফুলেরে দিতে প্রাণ।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •