১ জুন, ১৯৩৫


 

মিষ্টান্বিতা (mishtanwita)


যে মিষ্টান্ন সাজিয়ে দিলে হাঁড়ির মধ্যে

      শুধুই কেবল ছিল কি তায় শিষ্টতা।

যত্ন করে নিলেম তুলে গাড়ির মধ্যে,

      দূরের থেকেই বুঝেছি তার মিষ্টতা।

সে মিষ্টতা নয় তো কেবল চিনির সৃষ্টি,

      রহস্য তার প্রকাশ পায় যে অন্তরে

তাহার সঙ্গে অদৃশ্য কার মধুর দৃষ্টি

      মিশিয়ে গেছে অশ্রুত কোন্‌ মন্তরে।

বাকি কিছুই রইল না তার ভোজন-অন্তে,

      বহুত তবু রইল বাকি মনটাতে--

এমনি করেই দেব্‌তা পাঠান ভাগ্যবন্তে

      অসীম প্রসাদ সসীম ঘরের কোণটাতে।

সে বর তাঁহার বহন করল যাদের হস্ত

      হঠাৎ তাদের দর্শন পাই সুক্ষণেই--

রঙিন করে তারা প্রাণের উদয় অস্ত,

      দুঃখ যদি দেয় তবুও দুঃখ নেই।

হেন গুমর নেইকো আমার, স্তুতির বাক্যে

      ভোলাব মন ভবিষ্যতের প্রত্যাশায়,

জানি নে তো কোন্‌ খেয়ালের ক্রূর কটাক্ষে

      কখন বজ্র হানতে পার অত্যাশায়।

দ্বিতীয়বার মিষ্ট হাতের মিষ্ট অন্নে

      ভাগ্য আমার হয় যদি হোক বঞ্চিত,

নিরতিশয় করব না শোক তাহার জন্যে

      ধ্যানের মধ্যে রইল যে ধন সঞ্চিত।

আজ বাদে কাল আদর যত্ন না হয় কমল,

      গাছ মরে যায় থাকে তাহার টবটা তো।

জোয়ারবেলায় কানায় কানায় যে জল জমল

      ভাঁটার বেলায় শুকোয় না তার সবটা তো।

অনেক হারাই, তবু যা পাই জীবনযাত্রা

      তাই নিয়ে তো পেরোয় হাজার বিস্মৃতি।

রইল আশা, থাকবে ভরা খুশির মাত্রা

      যখন হবে চরম শ্বাসের নিঃসৃতি।

বলবে তুমি, "বালাই! কেন বকছ মিথ্যে,

      প্রাণ গেলেও যত্নে রবে অকুণ্ঠা।'

বুঝি সেটা, সংশয় মোর নেইকো চিত্তে,

      মিথ্যে খোঁটায় খোঁচাই তবু আগুনটা।

অকল্যাণের কথা কিছু লিখনু অত্র,

      বানিয়ে-লেখা ওটা মিথ্যে দুষ্টুমি।

তদুত্তরে তুমিও যখন লিখবে পত্র

      বানিয়ে তখন কোরো মিথ্যে রুষ্টুমি।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •