কালিম্পঙ, ২২ জুন, ১৯৩৮


 

মায়া (maya)


আজ এ মনের কোন্‌ সীমানায়

          যুগান্তরের প্রিয়া।

দূরে-উড়ে-যাওয়া মেঘের ছিদ্র দিয়া

          কখনো আসিছে রৌদ্র কখনো ছায়া,

        আমার জীবনে তুমি আজ শুধু মায়া;

সহজে তোমায় তাই তো মিলাই সুরে,

        সহজেই ডাকি সহজেই রাখি দূরে।

               স্বপ্নরূপিণী তুমি

আকুলিয়া আছ পথ-খোওয়া মোর

               প্রাণের স্বর্গভূমি।

        নাই কোনো ভার, নাই বেদনার তাপ,

ধূলির ধরায় পড়ে না পায়ের ছাপ।

        তাই তো আমার ছন্দে

          সহসা তোমার চুলের ফুলের গন্ধে

        জাগে নির্জন রাতের দীর্ঘশ্বাস,

          জাগে প্রভাতের পেলব তারায়

               বিদায়ের স্মিত হাস।

        তাই পথে যেতে কাশের বনেতে

               মর্মর দেয় আনি

        পাশ-দিয়ে-চলা ধানী-রঙ-করা

               শাড়ির পরশখানি।

        যদি জীবনের বর্তমানের তীরে

           আস কভু তুমি ফিরে

               স্পষ্ট আলোয়, তবে

        জানি না তোমার মায়ার সঙ্গে

               কায়ার কি মিল হবে।

            বিরহস্বর্গলোকে

        সে-জাগরণের রূঢ় আলোয়

          চিনিব কি চোখে-চোখে।

        সন্ধ্যাবেলায় যে-দ্বারে দিয়েছ

               বিরহকরুণ নাড়া,

        মিলনের ঘায়ে সে-দ্বার খুলিলে

          কাহারো কি পাবে সাড়া।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •