সমুখে শান্তিপারাবার–
                    ভাসাও তরণী হে কর্ণধার । 
            তুমি হবে চিরসাথি,  লও লও হে ক্রোড় পাতি–
              অসীমের পথে জ্বলিবে জ্যোতি ধ্রুবতারকার ।। 
                    মুক্তিদাতা, তোমার ক্ষমা তোমার দয়া
                       হবে চিরপাথেয় চিরযাত্রার । 
            হয় যেন মর্তের বন্ধনক্ষয়,  বিরাট বিশ্ব বাহু মেলি লয়–
              পায় অন্তরে নির্ভয় পরিচয় মহা-অজানার।।

          তুমি কি এসেছ মোর দ্বারে
          খুঁজিতে আমার আপনারে?।
                   তোমারি যে ডাকে
কুসুম গোপন হতে বাহিরায় নগ্ন শাখে শাখে,
          সেই ডাকে ডাকো আজি তারে ॥
          তোমারি সে ডাকে বাধা ভোলে,
শ্যামল গোপন প্রাণ ধূলি-অবগুণ্ঠন খোলে
                   সে ডাকে তোমারি
সহসা নবীন উষা আসে হাতে আলোকের ঝারি,
          দেয় সাড়া ঘন অন্ধকারে ॥

   আমি   শ্রাবণ-আকাশে ওই দিয়েছি পাতি
          মম   জল-ছলো-ছলো আঁখি মেঘে মেঘে।
বিরহদিগন্ত পারায়ে সারা রাতি   অনিমেষে আছে জেগে॥
যে   গিয়েছে দেখার বাহিরে   আছে তারি উদ্দেশে চাহি রে,
     স্বপ্নে উড়িছে তারি কেশরাশি   পুরবপবনবেগে॥
                   শ্যামল তমালবনে
যে পথে সে চলে গিয়েছিল   বিদায়গোধূলি-খনে
     বেদনা জড়ায়ে আছে তারি ঘাসে,   কাঁপে নিশ্বাসে--
সেই   বারে বারে ফিরে ফিরে চাওয়া   ছায়ায় রয়েছে লেগে॥