ঝড়ে যায় উড়ে যায় গো আমার মুখের আঁচলখানি। ঢাকা থাকে না হায় গো, তারে রাখতে নারি টানি॥ আমার রইল না লাজলজ্জা, আমার ঘুচল গো সাজসজ্জা-- তুমি দেখলে আমারে এমন প্রলয়-মাঝে আনি আমায় এমন মরণ হানি॥ হঠাৎ আকাশ উজলি কারে খুঁজে কে ওই চলে, চমক লাগায় বিজুলি আমার আঁধার ঘরের তলে। তবে নিশীথগগন জুড়ে আমার যাক সকলই উড়ে, এই দারুণ কল্লোলে বাজুক আমার প্রাণের বাণী কোনো বাঁধন নাহি মানি॥
বিধি ডাগর আঁখি যদি দিয়েছিল সে কি আমারি পানে ভুলে পড়িবে না॥ দুটি অতুল পদতলে রাতুল শতদল জানি না কী লাগিয়া পরশে ধরাতল, মাটির 'পরে তার করুণা মাটি হল--সে পদ মোর পথে চলিবে না? তব কণ্ঠ 'পরে হয়ে দিশাহারা বিধি অনেক ঢেলেছিল মধুধারা। যদি ও মুখ মনোরম শ্রবণে রাখি মম নীরবে অতি ধীরে ভ্রমরগীতিসম দু কথা বল যদি 'প্রিয়' বা 'প্রিয়তম', তাহে তো কণা মধু ফুরাবে না। হাসিতে সুধানদী উছলে নিরবধি, নয়নে ভরি উঠেঅমৃতমহোদধি-- এত সুধা কেন সৃজিল বিধি, যদিআমারি তৃষাটুকু পুরাবে না॥
জীবনের কিছু হল না হায়-- হল না গো হল না হায় হায়। গহনে গহনে কত আর ভ্রমিব,নিরাশার এ আঁধারে। শূন্য হৃদয় আর বহিতে যে পারি না, পারি না গো পারি না আর। কী লয়ে এখন ধরিব জীবন,দিবস-রজনী চলিয়া যায়-- দিবস-রজনী চলিয়া যায়-- কত কী করিব বলি উঠে বাসনা, কী করিব জানি না গো। সহচর ছিল যারা,ত্যেজিয়া গেল তারা;ধনুর্বাণ ত্যেজেছি, কোনো আর নাহি কাজ-- কী করি কী করি বলি, হাহা করি ভ্রমি গো-- কী করিব জানি না যে!