যেয়ো না, যেয়ো না, যেয়ো না ফিরে, দাঁড়াও, চরণদুটি বাড়াও হৃদয়-আসনে। চঞ্চল সমীর সম ফিরিছ কেন, তুমি রঙিন মেঘমালা যেন ফাগুনসমীরে। কে ডাকে! আমি কভু ফিরে নাহি চাই– আমি কভু ফিরে নাহি চাই। তোমায় ধরিতে চাহি, ধরিতে পারি নে- তুমি গঠিত যেন স্বপনে। মোরে রেখো না, রেখো না তব চঞ্চল লীলা হতে রেখো না বাহিরে। কে ডাকে। আমি কভু ফিরে নাহি চাই। কত ফুল ফুটে উঠে, কত ফুল যায় টুটে, আমি শুধু বহে চলে যাই। পরশ পুলকরস-ভরা রেখে যাই, নাহি দিই ধরা। উড়ে আসে ফুলবাস, লতাপাতা ফেলে শ্বাস, বনে বনে উঠে হাহুতাশ- চকিতে শুনিতে শুধু পাই- চলে যাই। আমি কভু ফিরে নাহি চাই।
আজি কোন্ সুরে বাঁধিব দিন-অবসান-বেলারে দীর্ঘ ধূসর অবকাশে সঙ্গীজনবিহীন শূন্য ভবনে।-- সে কি মূক বিরহস্মৃতি গুঞ্জরণে তন্দ্রাহারা ঝিল্লিরবে। সে কি বিচ্ছেদরজনীর যাত্রী বিহঙ্গের পক্ষধ্বনিতে। সে কি অবগুণ্ঠিত প্রেমের কুণ্ঠিত বেদনায় সম্বৃত দীর্ঘশ্বাসে। সে কি উদ্ধত অভিমানে উদ্যত উপেক্ষায় গর্বিত মঞ্জীরঝঙ্কারে॥
শুক্নো পাতা কে যে ছড়ায় ওই দূরে উদাস-করা কোন্ সুরে॥ ঘরছাড়া ওই কে বৈরাগী জানি না যে কাহার লাগি ক্ষণে ক্ষণে শূন্য বনে যায় ঘুরে॥ চিনি চিনি হেন ওরে হয় মনে, ফিরে ফিরে যেন দেখা ওর সনে। ছদ্মবেশে কেন খেলো, জীর্ণ এ বাস ফেলো ফেলো-- প্রকাশ করো চিরনূতন বন্ধুরে॥