আমি  সংসারে মন দিয়েছিনু, তুমি আপনি সে মন নিয়েছ।
  আমি  সুখ ব’লে দুখ চেয়েছিনু, তুমি দুখ ব’লে সুখ দিয়েছ।
           ( দয়া ক’রে দুখ দিলে আমায়, দয়া ক’রে। )
       হৃদয় যাহার শতখানে ছিল শত স্বার্থের সাধনে 
       তাহারে কেমনে কুড়ায়ে আনিলে, বাঁধিলে ভক্তিবাঁধনে।
          ( কুড়ায়ে এনে, শতখান হতে কুড়ায়ে এনে,
               ধুলা হতে তারে কুড়ায়ে এনে। ) 
       সুখ সুখ ক’রে দ্বারে দ্বারে মোরে কত দিকে কত খোঁজালে,
       তুমি যে আমার কত আপনার এবার সে কথা বোঝালে। 
          ( বুঝায়ে দিলে, হৃদয়ে আসি বুঝায়ে দিলে,
               তুমি কে হও আমার বুঝায়ে দিলে। ) 
       করুণা তোমার কোন্‌ পথ দিয়ে কোথা নিয়ে যায় কাহারে,
       সহসা দেখিনু নয়ন মেলিয়ে–এনেছ তোমারি দুয়ারে।
       ( আমি না জানিতে, কোথা দিয়ে আমায় এনেছ
                       আমি না জানিতে। )

              কাঁপিছে দেহলতা থরথর,
              চোখের জলে আঁখি ভরভর॥
দোদুল তমালেরই বনছায়া   তোমারি নীল বাসে নিল কায়া,
              বাদল-নিশীথেরই ঝরঝর
              তোমারি আঁখি-'পরে ভরভর॥
              যে কথা ছিল তব মনে মনে
              চমকে অধরের কোণে কোণে।
নীরব হিয়া তব দিল ভরি   কী মায়া স্বপনে যে, মরি মরি,
              আঁধার কাননের মরমর
              বাদল-নিশীথের ঝরঝর॥

          লহো লহো তুলে লহো নীরব বীণাখানি।
তোমার নন্দননিকুঞ্জ হতে সুর দেহো তায় আনি
                   ওহে    সুন্দর হে সুন্দর ॥
আমি    আঁধার বিছায়ে আছি রাতের আকাশে
                        তোমারি আশ্বাসে।
          তারায় তারায় জাগাও তোমার আলোক-ভরা বাণী
                   ওহে    সুন্দর হে সুন্দর ॥
          পাষাণ আমার কঠিন দুখে তোমায় কেঁদে বলে,
          "পরশ দিয়ে সরস করো, ভাসাও অশ্রুজলে,
                   ওহে    সুন্দর হে সুন্দর।'
          শুষ্ক যে এই নগ্ন মরু নিত্য মরে লাজে
                        আমার চিত্তমাঝে,
          শ্যামল রসের আঁচল তাহার বক্ষে দেহো টানি
                   ওহে    সুন্দর হে সুন্দর ॥