জীবনের কিছু হল না হায়-- হল না গো হল না হায় হায়। গহনে গহনে কত আর ভ্রমিব,নিরাশার এ আঁধারে। শূন্য হৃদয় আর বহিতে যে পারি না, পারি না গো পারি না আর। কী লয়ে এখন ধরিব জীবন,দিবস-রজনী চলিয়া যায়-- দিবস-রজনী চলিয়া যায়-- কত কী করিব বলি উঠে বাসনা, কী করিব জানি না গো। সহচর ছিল যারা,ত্যেজিয়া গেল তারা;ধনুর্বাণ ত্যেজেছি, কোনো আর নাহি কাজ-- কী করি কী করি বলি, হাহা করি ভ্রমি গো-- কী করিব জানি না যে!
আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল, শুধাইল না কেহ। সে তো এল না, যারে সঁপিলাম এই প্রাণ মন দেহ। সে কি মোর তরে পথ চাহে, সে কি বিরহ-গীত গাহে, যার বাঁশরি-ধ্বনি শুনিয়ে আমি ত্যজিলাম গেহ।
যেয়ো না, যেয়ো না, যেয়ো না ফিরে, দাঁড়াও, চরণদুটি বাড়াও হৃদয়-আসনে। চঞ্চল সমীর সম ফিরিছ কেন, তুমি রঙিন মেঘমালা যেন ফাগুনসমীরে। কে ডাকে! আমি কভু ফিরে নাহি চাই– আমি কভু ফিরে নাহি চাই। তোমায় ধরিতে চাহি, ধরিতে পারি নে- তুমি গঠিত যেন স্বপনে। মোরে রেখো না, রেখো না তব চঞ্চল লীলা হতে রেখো না বাহিরে। কে ডাকে। আমি কভু ফিরে নাহি চাই। কত ফুল ফুটে উঠে, কত ফুল যায় টুটে, আমি শুধু বহে চলে যাই। পরশ পুলকরস-ভরা রেখে যাই, নাহি দিই ধরা। উড়ে আসে ফুলবাস, লতাপাতা ফেলে শ্বাস, বনে বনে উঠে হাহুতাশ- চকিতে শুনিতে শুধু পাই- চলে যাই। আমি কভু ফিরে নাহি চাই।