ছায়া ঘনাইছে বনে বনে,   গগনে গগনে ডাকে দেয়া।
কবে নবঘন-বরিষনে     গোপনে গোপনে এলি কেয়া ॥
     পুরবে নীরব ইশারাতে   একদা নিদ্রাহীন রাতে
          হাওয়াতে কী পথে দিলি খেয়া--
              আষাঢ়ের খেয়ালের কোন্‌ খেয়া ॥
যে মধু হৃদয়ে ছিল মাখা   কাঁটাতে কী ভয়ে দিলি ঢাকা।
     বুঝি এলি যার অভিসারে   মনে মনে দেখা হল তারে,
          আড়ালে আড়ালে দেয়া-নেয়া--
              আপনায় লুকায়ে দেয়া-নেয়া ॥

আমার   ভুবন তো আজ হল কাঙাল, কিছু তো নাই বাকি,
     ওগো নিঠুর, দেখতে পেলে তা কি॥
তার         সব ঝরেছে, সব মরেছে,   জীর্ণ বসন ওই পরেছে--
     প্রেমের দানে নগ্ন প্রাণের লজ্জা দেহো ঢাকি॥
কুঞ্জে তাহার গান যা ছিল কোথায় গেল ভাসি।
এবার তাহার শূন্য হিয়ায় বাজাও তোমার বাঁশি।
তার   দীপের আলো কে নিভালো,   তারে তুমি জ্বালো জ্বালো--
     আমার আপন আঁধার আমার আঁখিরে দেয় ফাঁকি॥

শুভমিলনলগনে বাজুক বাঁশি,
মেঘমুক্ত গগনে জাগুক হাসি।
কত দুখে কত দূরে দূরে আঁধারসাগর ঘুরে ঘুরে
সোনার তরী তীরে এল ভাসি।
ওগো পুরবালা,আনো সাজিয়ে বরণডালা।
যুগলমিলনমহোৎসবে শুভ শঙ্খরবে
বসন্তের আনন্দ দাও উচ্ছ্বাসি॥