কার যেন এই মনের বেদন চৈত্রমাসের উতল হাওয়ায়, ঝুমকোলতার চিকন পাতা কাঁপে রে কার চম্কে-চাওয়ায়॥ হারিয়ে-যাওয়া কার সে বাণী কার সোহাগের স্মরণখানি আমের বোলের গন্ধে মিশে কাননকে আজ কান্না পাওয়ায়॥ কাঁকন-দুটির রিনিঝিনি কার বা এখন মনে আছে। সেই কাঁকনের ঝিকিমিকি পিয়ালবনের শাখায় নাচে। যার চোখের ওই আভাস দোলে নদী-ঢেউয়ের কোলে কোলে তার সাথে মোর দেখা ছিল সেই সেকালের তরী-বাওয়ায়॥
এ কি স্বপ্ন! এ কি মায়া! এ কি প্রমদা! এ কি প্রমদার ছায়া! আহা কে গো তুমি মলিন-বয়নে, আধ-নিমীলিত নলিন-নয়নে, যেন আপনারি হৃদয়-শয়নে আপনি রয়েছ লীন। তোমা তরে সবে রয়েছে চাহিয়া, তোমা লাগি পিক উঠিছে গাহিয়া, ভিখারি সমীর কানন বাহিয়া ফিরিতেছে সারা দিন। এ কি স্বপ্ন! এ কি মায়া! এ কি প্রমদা! এ কি প্রমদার ছায়া! যেন শরতের মেঘখানি ভেসে, চাঁদের সভাতে দাঁড়ায়েছ এসে, এখনি মিলাবে ম্লান হাসি হেসে, কাঁদিয়া পড়িবে ঝরি। জাগিছে পূর্ণিমা পূর্ণ নীলাম্বরে, কাননে চামেলি ফুটে থরে থরে, হাসিটি কখন ফুটিবে অধরে রয়েছি তিয়াষ ধরি। এ কি স্বপ্ন! এ কি মায়া! এ কি প্রমদা! এ কি প্রমদার ছায়া!