হে সন্ন্যাসী,
     হিমগিরি ফেলে   নীচে নেমে এলে   কিসের জন্য।
     কুন্দমালতী   করিছে মিনতি,   হও প্রসন্ন॥
          যাহা-কিছু ম্লান বিরস জীর্ণ   দিকে দিকে দিলে করি বিকীর্ণ।
          বিচ্ছেদভারে   বনচ্ছায়ারে   করে বিষণ্ন-- হও প্রসন্ন॥
     সাজাবে কি ডালা, গাঁথিবে কি মালা   মরণসত্রে!
     তাই উত্তরী   নিলে ভরি ভরি   শুকানো পত্রে?
          ধরণী যে তব তাণ্ডবে সাথি   প্রলয়বেদনা নিল বুকে পাতি।
          রুদ্র, এবারে বরবেশে তারে   করো গো ধন্য-- হও প্রসন্ন॥

        প্রেম এসেছিল নিঃশব্দচরণে।
তাই    স্বপ্ন মনে হল তারে--
        দিই নি তাহারে আসন।
বিদায় নিল যবে, শব্দ পেয়ে      গেনু ধেয়ে।
        সে তখন স্বপ্ন কায়াবিহীন
            নিশীথতিমিরে বিলীন--
দূরপথে দীপশিখা        রক্তিম মরীচিকা॥

          ওই-যে ঝড়ের মেঘের কোলে
বৃষ্টি আসে মুক্তকেশে আঁচলখানি দোলে॥
ওরই গানের তালে তালে   আমে জামে শিরীষ শালে
                   নাচন লাগে পাতায় পাতায় আকুল কল্লোলে॥
                             আমার  দুই আঁখি ওই সুরে
          যায় হারিয়ে সজল ধারায়   ওই ছায়াময় দূরে।
ভিজে হাওয়ায় থেকে থেকে   কোন্‌ সাথি মোর যায় যে ডেকে,
          একলা দিনের বুকের ভিতর ব্যথার তুফান তোলে॥