এ অন্ধকার ডুবাও তোমার অতল অন্ধকারে
          ওহে    অন্ধকারের স্বামী।
এসো নিবিড়, এসো গভীর, এসো জীবন-পারে
          আমার চিত্তে এসো নামি।
এ দেহ মন মিলায়ে যাক, হইয়া যাক হারা
          ওহে    অন্ধকারের স্বামী।
বাসনা মোর, বিকৃতি মোর, আমার ইচ্ছাধারা
          ওই      চরণে যাক থামি।
নির্বাসনে বাঁধা আছি দুর্বাসনার ডোরে
          ওহে    অন্ধকারের স্বামী।
সব বাঁধনে তোমার সাথে বন্দী করো মোরে--
          ওহে,   আমি বাঁধন-কামী।
আমার প্রিয়, আমার শ্রেয়, আমার হে পরম,
          ওহে    অন্ধকারের স্বামী,
সকল ঝ'রে সকল ভ'রে আসুক সে চরম--
          ওগো, মরুক-না এই আমি ॥

রূপসাগরে ডুব দিয়েছি অরূপ রতন আশা করি,
ঘাটে ঘাটে ঘুরব না আর ভাসিয়ে আমার জীর্ণ তরী॥
    সময় যেন হয় রে এবার    ঢেউ খাওয়া সব চুকিয়ে দেবার,
        সুধায় এবার তলিয়ে গিয়ে অমর হয়ে রব মরি।
যে গান কানে যায় না শোনা সে গান সেথায় নিত্য বাজে
প্রাণের বীণা নিয়ে যাব সেই অতলের সভামাঝে।
    চিরদিনের সুরটি বেঁধে    শেষ গানে তার কান্না কেঁদে
        নীরব যিনি তাঁহার পায়ে নীরব বীণা দিব ধরি॥

আর নহে, আর নহে--
     বসন্তবাতাস কেন আর শুষ্ক ফুলে বহে॥
              লগ্ন গেল বয়ে   সকল আশা লয়ে,
          এ কোন্‌ প্রদীপ জ্বালো   এ যে বক্ষ আমার দহে॥
     কানন মরু হল,
আজ এই সন্ধ্যা-অন্ধকারে সেথায় কী ফুল তোলো।
              কাহার ভাগ্য হতে বরণমালা হরণ করো,
                        ভাঙা ডালি ভরো--
          মিলনমালার কণ্টকভার কণ্ঠে কি আর সহে॥