মোদের যেমন খেলা তেমনি যে কাজ জানিস নে কি ভাই। তাই কাজকে কভু আমরা না ডরাই॥ খেলা মোদের লড়াই করা, খেলা মোদের বাঁচা মরা, খেলা ছাড়া কিছুই কোথাও নাই॥ খেলতে খেলতে ফুটেছে ফুল, খেলতে খেলতে ফল যে ফলে, খেলারই ঢেউ জলে স্থলে। ভয়ের ভীষণ রক্তরাগে খেলার আগুন যখন লাগে ভাঙাচোরা জ্ব'লে যে হয় ছাই॥
ওগো এত প্রেম-আশা, প্রাণের তিয়াষা কেমনে আছে সে পাশরি। তবে সেথা কি হাসে না চাঁদিনী যামিনী, সেথা কি বাজে না বাঁশরি॥ সখী, হেথা সমীরণ লুটে ফুলবন, সেথা কি পবন বহে না। সে যে তার কথা মোরে কহে অনুক্ষণ, মোর কথা তারে কহে না! যদি আমারে আজি সে ভুলিবে সজনী, আমারে ভুলালে কেন সে। ওগো এ চিরজীবন করিব রোদন, এই ছিল তার মানসে! যবে কুসুমশয়নে নয়নে নয়নে কেটেছিল সুখরাতি রে, তবে কে জানিত তার বিরহ আমার হবে জীবনের সাথি রে। যদি মনে নাহি রাখে, সুখে যদি থাকে, তোরা একবার দেখে আয়-- এই নয়নের তৃষা, পরানের আশা, চরণের তলে রেখে আয়। আর নিয়ে যা রাধার বিরহের ভার, কত আর ঢেকে রাখি বল্। আর পারিস যদি তো আনিস হরিয়ে এক-ফোঁটা তার আঁখিজল। না না, এত প্রেম, সখী, ভুলিতে যে পারে তারে আর কেহ সেধো না। আমি কথা নাহি কব, দুখ লয়ে রব, মনে মনে স'ব বেদনা। ওগো মিছে মিছে, সখী, মিছে এই প্রেম, মিছে পরানের বাসনা। ওগো সুখদিন হায় যবে চলে যায় আর ফিরে আর আসে না ॥
ও আমার ধ্যানেরই ধন, তোমার হৃদয়ে দোলায় যে হাসি রোদন॥ আসে বসন্ত, ফোটে বকুল, কুঞ্জে পূর্ণিমাচাঁদ হেসে আকুল-- তারা তোমায় খুঁজে না পায়, প্রাণের মাঝে আছ গোপন স্বপন॥ আঁখিরে ফাঁকি দাও, একি ধারা! অশ্রুজলে তারে কর সারা। গন্ধ আসে, কেন দেখি নে মালা পায়ের ধ্বনি শুনি, পথ নিরালা। বেলা যে যায়, ফুল যে শুকায়-- অনাথ হয়ে আছে আমার ভুবন॥