আমায় দাও গো ব'লে
সে কি            তুমি আমায় দাও দোলা অশান্তিদোলে।
দেখতে না পাই পিছে থেকে   আঘাত দিয়ে হৃদয়ে কে
                   ঢেউ যে তোলে ॥
মুখ দেখি নে তাই লাগে ভয়-- জানি না যে, এ কিছু নয়।
মুছব আঁখি, উঠব হেসে-- দোলা যে দেয় যখন এসে
                   ধরবে কোলে ॥

     আমারে     কে নিবি ভাই, সঁপিতে চাই আপনারে।
আমার এই   মন গলিয়ে কাজ ভুলিয়ে সঙ্গে তোদের নিয়ে যা রে ॥
     তোরা কোন্‌   রূপের হাটে   চলেছিস   ভবের বাটে,
          পিছিয়ে   আছি আমি   আপন ভারে--
     তোদের ওই   হাশিখুশি   দিবানিশি   দেখে মন   কেমন করে ॥
     আমার এই   বাঁধা টুটে   নিয়ে যা   লুটেপুটে--
     পড়ে থাক্‌   মনের বোঝা ঘরের দ্বারে--
          যেমন ওই এক নিমেষে   বন্যা এসে
                   ভাসিয়ে নে যায় পারাবারে ॥
     এত যে   আনাগোনা   কে আছে   জানাশোনা,
          কে আছে   নাম ধ'রে মোর ডাকতে পারে?
     যদি সে   বারেক এসে   দাঁড়ায় হেসে
                   চিনতে পারি দেখে তারে ॥

          ওগো,   তোমরা সবাই ভালো--
যার অদৃষ্টে যেমনি জুটেছে, সেই আমাদের ভালো--
আমাদের এই আঁধার ঘরে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বালো ॥
     কেউ বা অতি জ্বলো-জ্বলো,   কেউ বা ম্লান' ছলো-ছলো,
     কেউ বা কিছু দহন করে,   কেউ বা স্নিগ্ধ আলো ॥
নূতন প্রেমে নূতন বধূ   আগাগোড়া কেবল মধু,
পুরাতনে অম্ল-মধুর   একটুকু ঝাঁঝালো।
     বাক্য যখন বিদায় করে   চক্ষু এসে পায়ে ধরে,
     রাগের সঙ্গে অনুরাগে সমান ভাগে ঢালো ॥
আমরা তৃষ্ঞা, তোমরা সুধা-- তোমরা তৃপ্তি, আমরা ক্ষুধা--
তোমার কথা বলতে কবির কথা ফুরালো।
     যে মূর্তি নয়নে জাগে   সবই আমার ভালো লাগে--
     কেউ বা দিব্যি গৌরবরন,   কেউ বা দিব্যি কালো ॥