চাহনি তাহার, সব কোলাহল হ'লে সারা সন্ধ্যার তিমিরে ভাসা তারা। মৌনখানি সুমধুর মিনতিরে লতায়ে লতায়ে যেন মনের চৌদিকে দেয় ঘিরে; নির্বাক চাহিয়া থাকে, নাহি পায় ভেবে কেমন করিয়া কী-যে দেবে। দুয়ার বাহিরে আসে ধীরে, ক্ষণেক নীরব থেকে চলে যায় ফিরে। নাও যদি কয় কথা মনে যেন ভরি দেয় সুস্নিগ্ধ মমতা। পায়ের চলায় কিছু যেন দান করে ধূলির তলায়। তারে কিছু করিলে জিজ্ঞাসা কিছু বলে, কিছু তবু বাকি থাকে ভাষা। নিঃশব্দে খুলিয়া দ্বার অঞ্চলে আড়াল করি সে যেন কাহার আনিয়াছে সৌভাগ্যের থালি-- নাম কি পিয়ালী।
মেঘ্লা শ্রাবণের বাদ্লা রাতি, বাহিরে ঝড় বাতাস, জান্লা রুধি ঘরে জ্বালায়ে বাতি বন্ধু মিলি খেলে তাস। বন্ধু পাঁচ জনে বসিয়া গৃহকোণে চিত্ত বড়োই উদাস, কর্ম হাতে নাই, কভু বা উঠে হাই কভু বা করে হা-হুতাশ। বিরস ম্লান-মুখো, মেজাজ বড়ো রুখো, শেষে বা বাধে হাতাহাতি! আকাশ ঢাকা মেঘে, বাতাস রেগেমেগে বাহিরে করে মাতামাতি। অবন বলে ভাই তর্কে কাজ নাই প্রমারা হোক এক বাজি -- সমর মুদি চোখ বলিল তাই হোক সত্য কহে আছি রাজি। বজ্র দিক জুড়ি করিছে হুড়োমুড়ি হরিশ ভয়ে হত-বুলি, গগন এক ধারে কিছু না বলি কারে পলকে ছবি নিল তুলি।