দেহের মধ্যে বন্দী প্রাণের ব্যাকুল চঞ্চলতা দেহের দেহলীতে জাগায় দেহের অতীত কথা। খাঁচার পাখি যে বাণী কয় সে তো কেবল খাঁচারি নয়, তারি মধ্যে করুণ ভাষায় সুদূর অগোচর বিস্মরণের ছায়ায় আনে অরণ্য মর্মর। চোখের দেখা নয় তো কেবল দেখারি জালবোনা কোন্ অলক্ষ্যে ছাড়িয়ে সে যায় সকল দেখাশোনা। শীতের রৌদ্রে মাঠের শেষে দেশ-হারানো কোন্ সে দেশে বসুন্ধরা তাকিয়ে থাকে নিমেষ-হারা চোখে দিগ্বলয়ের ইঙ্গিত-লীন উধাও কল্পলোকে। ভালোমন্দে বিকীর্ণ এই দীর্ঘ পথের বুকে রাত্র-দিনের যাত্রা চলে কত দুঃখে সুখে। পথের লক্ষ্য পথ-চলাতেই শেষ হবে কি? আর কিছু নেই? দিগন্তে যার স্বর্ণ লিখন, সংগীতের আহ্বান, নিরর্থকের গহ্বরে তার হঠাৎ অবসান? নানা ঋতুর ডাক পড়ে যেই মাটির গহন তলে চৈত্রতাপে, মাঘের হিমে, শ্রাবণ বৃষ্টিজলে স্বপ্ন দেখে বীজ সেখানে অভাবিতের গভীর টানে, অন্ধকারে এই যে ধেয়ান স্বপ্নে কি তার শেষ? উষার আলোয় ফুলের প্রকাশ, নাই কি সে উদ্দেশ?