যে চৈতন্যজ্যোতি প্রদীপ্ত রয়েছে মোর অন্তরগগনে নহে আকস্মিক বন্দী প্রাণের সংকীর্ণ সীমানায়, আদি যার শূন্যময়, অন্তে যার মৃত্যু নিরর্থক, মাঝখানে কিছুক্ষণ যাহা-কিছু আছে তার অর্থ যাহা করে উদ্ভাসিত। এ চৈতন্য বিরাজিত আকাশে আকাশে আনন্দ-অমৃতরূপে-- আজি প্রভাতের জাগরণে এ বাণী উঠিল বাজি মর্মে মর্মে মোর, এ বাণী গাঁথিয়া চলে সূর্য গ্রহ তারা অস্খলিত ছন্দসূত্রে অনিঃশেষ সৃষ্টির উৎসবে।
আমার প্রাণের 'পরে চলে গেল কে বসন্তের বাতাসটুকুর মতো। সে যে ছুঁয়ে গেল নুয়ে গেল রে ফুল ফুটিয়ে গেল শত শত। সে চলে গেল, বলে গেল না, সে কোথায় গেল ফিরে এল না, সে যেতে যেতে চেয়ে গেল, কী যেন গেয়ে গেল তাই আপন মনে বসে আছি কুসুম-বনেতে। সে ঢেউয়ের মতো ভেসে গেছে, চঁদের আলোর দেশে গেছে, যেখান দিয়ে হেসে গেছে হাসি তার রেখে গেছে রে। মনে হল আঁখির কোণে আমায় যেন ডেকে গেছে সে। আমি কোথায় যাব কোথায় যাব, ভাবতেছি তাই একলা বসে। সে চাঁদের চোখে বুলিয়ে গেল ঘুমের ঘোর। সে প্রাণের কোথা দুলিয়ে গেল ফুলের ডোর। সে কুসুম-বনের উপর দিয়ে কী কথা যে বলে গেল, ফুলের গন্ধ পাগল হয়ে সঙ্গে তারি চলে গেল। হৃদয় আমার আকুল হল, নয়ন আমার মুদে এল, কোথা দিয়ে কোথায় গেল সে!