১০ (ke go tumi bideshi)
কে গো তুমি বিদেশী।
সাপ-খেলানো বাঁশি তোমার
বাজাল সুর কী দেশী।
নৃত্য তোমার দুলে দুলে,
কুন্তলপাশ পড়ছে খুলে
কাঁপছে ধরা চরণে,ঘুরে ঘুরে আকাশ জুড়ে
উত্তরী যে যাচ্ছে উড়ে
ইন্দ্রধনুর বরনে।
আজকে তো আর ঘুমায় না কেউ,
জলের 'পরে লেগেছে ঢেউ,
শাখায় জাগে পাখিতে।
গোপন গুহার মাঝখানে যে
তোমার বাঁশি উঠছে বেজে
ধৈর্য নারি রাখিতে।
মিশিয়ে দিয়ে উঁচু নিচু
সুর ছুটেছে সবার পিছু,
রয় না কিছুই গোপনে।
ডুবিয়ে দিয়ে সূর্যচন্দ্রে
অন্ধকারের রন্ধে# রন্ধে#
পশিছে সুর স্বপনে।
নাটের লীলা হায় গো এ কী,
পুলক জাগে আজকে দেখি
নিদ্রা-ঢাকা পাতালে।
তোমার বাঁশি কেমন বাজে,
নিবিড় ঘন মেঘের মাঝে
বিদ্যুতেরে মাতালে।
লুকিয়ে রবে কে গো মিছে,
ছুটেছে ডাক মাটির নীচে
ফুটায়ে ভুঁইচাঁপারে।
রুদ্ধঘরের ছিদ্রে ফাঁকে
শূন্য ভরে তোমার ডাকে,
রইতে যে কেউ না পারে।
কত কালের আঁধার ছেড়ে
বাহির হয়ে এল যে রে
হৃদয়-গুহার নাগিনী,
নত মাথায় লুটিয়ে আছে,
ডাকো তারে পায়ের কাছে
বাজিয়ে তোমার রাগিণী।
তোমার এই আনন্দ-নাচে
আছে গো ঠাঁই তারো আছে,
লও গো তারে ভুলায়ে;
কালোতে তার পড়বে আলো,
তারো শোভা লাগবে ভালো,
নাচবে ফণা দুলায়ে।
মিলবে সে আজ ঢেউয়ের সনে,
মিলবে দখিন-সমীরণে,
মিলবে আলোয় আকাশে।
তোমার বাঁশির বশ মেনেছে,
বিশ্বনাচের রস জেনেছে,
রবে না আর ঢাকা সে।