তোমার স্বপ্নের দ্বারে আমি আছি বসে তোমার সুপ্তির প্রান্তে, নিভৃত প্রদোষে প্রথম প্রভাততারা যবে বাতায়নে দেখা দিল। চেয়ে আমি থাকি একমনে তোমার মুখের 'পরে। স্তম্ভিত সমীরে রাত্রির প্রহরশেষে সমু্দ্রের তীরে সন্ন্যাসী যেমন থাকে ধ্যানাবিষ্ট চোখে চেয়ে পূর্বতট-পানে, প্রথম আলোকে স্পর্শস্নান হবে তার, এই আশা ধরি অনিদ্র আনন্দে কাটে দীর্ঘ বিভাবরী। তব নবজাগরণী প্রথম যে-হাসি কনকচাঁপার মতো উঠিবে বিকাশি আধোখোলা অধরেতে, নয়নের কোণে, চয়ন করিব তাই, এই আছে মনে।
যে দিল ঝাঁপ ভবসাগর-মাঝখানে-- কূলের কথা ভাবে না সে, চায় না কভু তরীর আশে, আপন সুখে সাঁতার-কাটা সেই জানে ভবসাগর-মাঝখানে। রক্ত যে তার মেতে ওঠে মহাসাগর-কল্লোলে, ওঠা-পড়ার ছন্দে হৃদয় ঢেউয়ের সাথে ঢেউ তোলে। অরুণ-আলোর আশিস লয়ে অস্তরবির আদেশ বয়ে আপন সুখে যায় যে চলে কার পানে ভবসাগর-মাঝখানে।