চাহনি তাহার, সব কোলাহল হ'লে সারা সন্ধ্যার তিমিরে ভাসা তারা। মৌনখানি সুমধুর মিনতিরে লতায়ে লতায়ে যেন মনের চৌদিকে দেয় ঘিরে; নির্বাক চাহিয়া থাকে, নাহি পায় ভেবে কেমন করিয়া কী-যে দেবে। দুয়ার বাহিরে আসে ধীরে, ক্ষণেক নীরব থেকে চলে যায় ফিরে। নাও যদি কয় কথা মনে যেন ভরি দেয় সুস্নিগ্ধ মমতা। পায়ের চলায় কিছু যেন দান করে ধূলির তলায়। তারে কিছু করিলে জিজ্ঞাসা কিছু বলে, কিছু তবু বাকি থাকে ভাষা। নিঃশব্দে খুলিয়া দ্বার অঞ্চলে আড়াল করি সে যেন কাহার আনিয়াছে সৌভাগ্যের থালি-- নাম কি পিয়ালী।
ভৈরবী । রূপক কে এসে যায় ফিরে ফিরে আকুল নয়নের নীরে? কে বৃথা আশাভরে চাহিছে মুখ-'পরে? সে যে আমার জননী রে! কাহার সুধাময়ী বাণী মিলায় অনাদর মানি? কাহার ভাষা হায় ভুলিতে সবে চায়? সে যে আমার জননী রে! ক্ষণেক স্নেহকোল ছাড়ি চিনিতে আর নাহি পারি। আপন সন্তান করিছে অপমান-- সে যে আমার জননী রে! পুণ্য কুটিরে বিষণ্ণ কে ব'সে সাজাইয়া অন্ন? সে স্নেহ-উপহার রুচে না মুখে আর! সে যে আমার জননী রে!