আমার প্রাণের মাঝে যেমন করে নাচে তোমার প্রাণ আমার প্রেমে তেমনি তোমার প্রেমের বহুক-না তুফান। রসের বরিষনে তারে মিলাও সবার সনে, অঞ্জলি মোর ছাপিয়ে দিয়ে হোক সে তোমার দান। আমার হৃদয় সদা আমার মাঝে বন্দী হয়ে থাকে। তোমার আপন পাশে নিয়ে তুমি মুক্ত করো তাকে। যেমন তোমার তারা, তোমার ফুলটি যেমন ধারা, তেমনি তারে তোমার করো যেমন তোমার গান।
মনে হয় কী একটি শেষ কথা আছে, সে কথা হইলে বলা সব বলা হয়। কল্পনা কাঁদিয়া ফিরে তারি পাছে পাছে, তারি তরে চেয়ে আছে সমস্ত হৃদয়। শত গান উঠিতেছে তারি অন্বেষণে, পাখির মতন ধায় চরাচরময়। শত গান ম'রে গিয়ে, নূতন জীবনে একটি কথায় চাহে হইতে বিলয়। সে কথা হইলে বলা নীরব বাঁশরি, আর বাজাব না বীণা চিরদিন-তরে। সে কথা শুনিতে সবে আছে আশা করি, মানব এখনো তাই ফিরিছে না ঘরে। সে কথায় আপনারে পাইব জানিতে, আপনি কৃতার্থ হব আপন বাণীতে।
লিখি কিছু সাধ্য কী! যে দশা এ অভাগার লিখিতে সে বাধ্য কি। মশা-বুড়ি মরেছিল চাপড়ের যুদ্ধে সে-- পরলোকগত তার আত্মার উদ্দেশে আমারি লেখার ঘরে আজি তার শ্রাদ্ধ কি! যেখানে যে কেহ ছিল আত্মীয় পরিজন অভিজাতবংশীয় কেহ, কেহ হরিজন-- আমারি চরণজাত তাহাদের খাদ্য কি! বাঁশি নেই, কাঁসি নেই, নাহি দেয় হাঁক সে, পিঠেতে কাঁপাতে থাকে এক-জোড়া পাখ সে-- দেখিতে যেমনি হোক তুচ্ছ সে বাদ্য কি। আশ্রয় নিতে চাই মেলে যদি ড়বনরঢ়নক্ষ, এক ফোঁটা বাকি নেই নেবুঘাস-তেলটার-- মশারি দিনের বেলা কভু আচ্ছাদ্য কি! গাল তারে মিছে দিই অতি অশ্রাব্য, হাতে পিঠ চাপড়াব সেটা যে অভাব্য-- এ কাজে লাগাব শেষে চটি-জোড়া পাদ্য কি। পুজোর বাজারে আজি যদি লেখা না জোটাই, দুটো লাইনেরো মতো কলমটা না ছোটাই-- সম্পাদকের সাথে রবে সৌহার্দ্য কি।