দুঃখের বরষায় চক্ষের জল যেই নামল বক্ষের দরজায় বন্ধুর রথ সেই থামল। মিলনের পাত্রটি পূর্ণ যে বিচ্ছেদে বেদনায়; অর্পিনু হাতে তাঁর, খেদ নাই, আর মোর খেদ নাই। বহুদিন-বঞ্চিত অন্তরে সঞ্চিত কী আশা, চক্ষের নিমেষেই মিটল সে পরশের তিয়াষা। এতদিনে জানলেম যে কাঁদন কাঁদলেম সে কাহার জন্য। ধন্য এ জাগরণ, ধন্য এ ক্রন্দন, ধন্য রে ধন্য।
আমায় যদি মনটি দেবে দিয়ো, দিয়ো মন-- মনের মধ্যে ভাবনা কিন্তু রেখো সারাক্ষণ। খোলা আমার দুয়ারখানা, ভোলা আমার প্রাণ-- কখন যে কার আনাগোনা নইকো সাবধান। পথের ধারে বাড়ি আমার, থাকি গানের ঝোঁকে-- বিদেশী সব পথিক এসে যেথা-সেথাই ঢোকে। ভাঙে কতক, হারায় কতক যা আছে মোর দামি-- এমনি ক'রে একে একে সর্বস্বান্ত আমি। আমায় যদি মনটি দেবে দিয়ো, দিয়ো মন-- মনের মধ্যে ভাবনা কিন্তু রেখো সারাক্ষণ। আমায় যদি মনটি দেবে নিষেধ তাহে নাই, কিছুর তরে আমায় কিন্তু কোরো না কেউ দায়ী। ভুলে যদি শপথ ক'রে বলি কিছু কবে, সেটা পালন না করি তো মাপ করিতেই হবে। ফাগুন মাসে পূর্ণিমাতে যে নিয়মটা চলে রাগ কোরো না চৈত্র মাসে সেটা ভন্গ হলে। কোনো দিন বা পূজার সাজি কুসুমে হয় ভরা, কোনো দিন বা শূন্য থাকে-- মিথ্যা সে দোষ ধরা। আমায় যদি মনটি দেবে নিষেধ তাহে নাই, কিছুর তরে আমায় কিন্তু কোরো না কেউ দায়ী। আমায় যদি মনটি দেবে রাখিয়া যাও তবে, দিয়েছ যে সেটা কিন্তু ভুলে থাকতে হবে। দুটি চক্ষে বাজবে তোমার নবরাগের বাঁশি, কণ্ঠে তোমার উচ্ছ্বসিয়া উঠবে হাসিরাশি। প্রশ্ন যদি শুধাও কভু মুখটি রাখি বুকে, মিথ্যা কোনো জবাব পেলে হেসো সকৌতুকে। যে দুয়ারটা বন্ধ থাকে বন্ধ থাকতে দিয়ো, আপনি যাহা এসে পড়ে তাহাই হেসে নিয়ো। আমায় যদি মনটি দেবে, রাখিয়া যাও তবে-- দিয়েছ যে সেটা কিন্তু ভুলে থাকতে হবে।