না গণি মনের ক্ষতি ধনের ক্ষতিতে হে বরেণ্য, এই বর দেহো মোর চিতে। যে ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ তোমার ভুবন এই তৃণভূমি হতে সুদূর গগন যে আলোকে, যে সংগীতে, যে সৌন্দর্যধনে, তার মূল্য নিত্য যেন থাকে মোর মনে স্বাধীন সবল শান্ত সরল সন্তোষ। অদৃষ্টেরে কভু যেন নাহি দিই দোষ কোনো দুঃখ কোনো ক্ষতি অভাবের তরে। বিস্বাদ না জন্মে যেন বিশ্বচরাচরে ক্ষুদ্র খন্ড হারাইয়া। ধনীর সমাজে না হয় না হোক স্থান, জগতের মাঝে আমার আসন যেন রহে সর্ব ঠাঁই, হে দেব, একান্তচিত্তে এই বর চাই।
"ওগো পথিক দিনের শেষে যাত্রা তোমার সে কোন্ দেশে, এ পথ গেছে কোন্খানে?" "কে জানে ভাই, কে জানে। চন্দ্রসূর্য-গ্রহতারার আলোক দিয়ে প্রাচীর-ঘেরা আছে যে এক নিকুঞ্জবন নিভৃতে, চরাচরের হিয়ার কাছে তারি গোপন দুয়ার আছে সেইখানে ভাই, করব গমন নিশীথে।" "ওগো পথিক, দিনের শেষে চলেছ যে এমন বেশে কে আছে বা সেইখানে?" "কে জানে ভাই, কে জানে। বুকের কাছে প্রাণের সেতার গুঞ্জরি নাম কহে যে তার, শুনেছিলাম জোৎস্নারাতের স্বপনে। অপূর্ব তার চোখের চাওয়া, অপূর্ব তার গায়ের হাওয়া, অপূর্ব তার আসা-যাওয়া গোপনে।" "ওগো পথিক, দিনের শেষে চলেছ যে এমন হেসে, কিসের বিলাস সেইখানে?" "কে জানে ভাই, কে জানে। জগৎজোড়া সেই সে ঘরে কেবল দুটি মানুষ ধরে আর সেখানে ঠাঁই নাহি তো কিছুরি; সেথা মেঘের কোণে কোণে কেবলি দেখি ক্ষণে ক্ষণে একটি নাচে আনন্দময় বিজুরি।" "ওগো পথিক, দিনের শেষে চলেছ যে,কেই বা এসে, পথ দেখাবে সেইখানে?" "কে জানে গো, কে জানে। শুনেছি সেই একটি বাণী পথ দেখাবার মন্ত্রখানি, লেখা আছে সকল আকাশ-মাঝে গো; সে মন্ত্র এই প্রাণের পারে অনাহত বীণার তারে গভীর সুরে বাজে সকাল-সাঁঝে গো।"