কোন্ বাণী মোর জাগল, যাহা রাখবে স্মরণে-- পলে-পলে দলিত সে কালের চরণে। যায় সে কেবল ভেঙে চুরে, ছড়িয়ে পড়ে কাছে দূরে-- জীবনবাণীর অখণ্ড রূপ মিলবে মরণে।
ক্ষণে ক্ষণে পাগল হাওয়ায় ঘূর্ণিধূলিতে প্রাণের দোলে এলোমেলো রয় সে দুলিতে। বৈতরণীর অগাধ নদী পেরিয়ে আবার ফেরে যদি উল্টো স্রোতের সে দান, ডালায় পারবে তুলিতে।
কোন্ বাণী মোর জাগল, যাহা রাখবে স্মরণে, টিঁকবে যাহা নিমেষগুলির পূরণ-হরণে। তারে নিয়ে সারা বেলা চলেছে হার-জিতের খেলা, খেলার শেষে বাঁচল যা তাই বাঁচবে মরণে।
যেখানে এসেছি আমি, আমি সেথাকার, দরিদ্র সন্তান আমি দীন ধরণীর। জন্মাবধি যা পেয়েছি সুখদুঃখভার বহু ভাগ্য বলে তাই করিয়াছি স্থির। অসীম ঐশ্বর্যরাশি নাই তোর হাতে, হে শ্যামলা সর্বসহা জননী মৃন্ময়ী। সকলের মুখে অন্ন চাহিস জোগাতে, পারিস নে কত বার-- কই অন্ন কই' কাঁদে তোর সন্তানেরা ম্লান শুষ্ক মুখ। জানি মা গো, তোর হাতে অসম্পূর্ণ সুখ-- যা কিছু গড়িয়া দিস ভেঙে ভেঙে যায়, সব-তাতে হাত দেয় মৃত্যু সর্বভুক, সব আশা মিটাইতে পারিস নে হায় তা বলে কি ছেড়ে যাব তোর তপ্ত বুক!