মুক্তি (mukti)
ভোরের পাখি নবীন আঁখিদুটি
পুরানো মোর স্বপনডোর
ছিঁড়িল কুটিকুটি।
রুদ্ধ মন গগনে গেল খুলি,
বিজুলি হানি দৈববাণী
বক্ষে উঠে দুলি।
ঘাসের ছোঁওয়া তৃণশয়নছায়ে
মাটির যেন মর্মকথা বুলায়ে দিল গায়ে;
আমের বোল, ঝাউয়ের দোল,
ঢেউয়ের লুটিপুটি
মিলি সকলে কী কোলাহলে
বক্ষে এল জুটি।
ভোরের পাখি নবীন আঁখিদুটি
গুহাবিহারী ভাবনা যত
নিমেষে নিল লুটি।
কী ইঙ্গিতে আচম্বিতে
ডাকিল লীলাভরে
দুয়ারখোলা পুরানো খেলাঘরে--
যেখানে ব 'সে সবার কাছাকাছি
অজানা ভাবে অবুঝ গান
একদা গাহিয়াছি।
প্রাণের মাঝে ছুটে-চলার
খেপামি এল ছুটি,
লাভের লোভ, ক্ষতির ক্ষোভ
সকলি গেল টুটি।
ভোরের পাখি নবীন আঁখিদুটি
শুকতারাকে যেমনি ডাকে
প্রাণে সে উঠে ফুটি।
অরুণরাঙা চেতনা জাগে চিতে--
ঝুমকোলতা জানায় কথা
রঙিন রাগিণীতে।
মনের 'পরে খেলায় বায়ুবেগে
কত-যে মায়া-রঙের ছায়া
খেয়ালে-পাওয়া মেঘে;
বুলায় বুকে ম্যাগ্নোলিয়া
কৌতূহলী মুঠি,
অতি বিপুল ব্যাকুলতায়
নিখিলে জেগে উঠি।