দূর মন্দিরে সিন্ধুকিনারে পথে চলিয়াছ তুমি। আমি তরু মোর ছায়া দিয়ে তারে মৃত্তিকা তার চুমি। হে তীর্থগামী, তব সাধনার অংশ কিছু-বা রহিল আমার, পথপাশে আমি তব যাত্রার রহিব সাক্ষীরূপে। তোমার পূজায় মোর কিছু যায় ফুলের গন্ধধূপে। তব আহ্বানে বরণ করিয়া নিয়েছি দুর্গমেরে। ক্লান্তি কিছু-বা নিলাম হরিয়া মোর অঞ্চল-ঘেরে। যা ছিল কঠোর, যাহা নিষ্ঠুর তার সাথে কিছু মিলাই মধুর, যা ছিল অজানা, যাহা ছিল দূর আমি তারি মাঝে থেকে দিনু পথ-'পরে শ্যাম অক্ষরে জানার চিহ্ন এঁকে। মোর পরিচয়ে তোমার পথের কিছু রহে পরিচয়। তব রচনায় তব ভকতের কিছু বাণী মিশে রয়। তোমার মধ্যদিবসের তাপে আমার স্নিগ্ধ কিশলয় কাঁপে, মোর পল্লব সে মন্ত্র জাপে গভীর যা তব মনে, মোর ফলভার মিলানু তোমার সাধনফলের সনে। বেলা চলে যাবে, একদা যখন ফুরাবে যাত্রা তব, শেষ হবে যবে মোর প্রয়োজন হেথাই দাঁড়ায়ে রব। এই পথখানি রবে মোর প্রিয়, এই হবে মোর চিরবরণীয়, তোমারি স্মরণে রব স্মরণীয়, না মানিব পরাভব। তব উদ্দেশে অর্পিব হেসে যা-কিছু আমার সব।