১৯ জুলাই, ১৯৩২


 

আঘাত (aghat)


সোঁদালের ডালের ডগায়

      মাঝে মাঝে পোকাধরা পাতাগুলি

           কুঁকড়ে গিয়েছে ;

                 বিলিতি নিমের

                       বাকলে লেগেছে উই;

      কুরচির গুঁড়িটাতে পড়েছে ছুরির ক্ষত,

                       কে নিয়েছে ছাল কেটে;

                              চারা অশোকের

                       নীচেকার দুয়েকটা ডালে

      শুকিয়ে পাতার আগা কালো হয়ে গেছে।

           কত ক্ষত, কত ছোটো মলিন লাঞ্ছনা,

                 তারি মাঝে অরণ্যের অক্ষুণ্ন মর্যাদা

                       শ্যামল সম্পদে

      তুলেছে আকাশ-পানে পরিপূর্ণ পূজার অঞ্জলি।

           কদর্যের কদাঘাতে

      দিয়ে যায় কালিমার মসীরেখা,

           সে সকলি অধঃসাৎ ক'রে

                 শান্ত প্রসন্নতা

           ধরণীরে ধন্য করে পূর্ণের প্রকাশে।

ফুটিয়েছে ফুল সে যে,

      ফলিয়েছে ফলভার,

           বিছিয়েছে ছায়া-আস্তরণ,

                পাখিরে দিয়েছে বাসা,

           মৌমাছিরে জুগিয়েছে মধু,

                 বাজিয়েছে পল্লবমর্মর।

           পেয়েছে সে প্রভাতের পুণ্য আলো,

                 শ্রাবণের অভিষেক,

           বসন্তের বাতাসের আনন্দমিতালি,--

           পেয়েছে সে ধরণীর প্রাণরস,

                 সুগভীর সুবিপুল আয়ু,

           পেয়েছে সে আকাশের নিত্য আশীর্বাদ।

                 পেয়েছে সে কীটের দংশন।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •