বুয়েনোস এয়ারিস,  ২৪ ডিসেম্বর, ১৯২৪


 

না-পাওয়া (na paoya)


ওগো মোর না-পাওয়া গো, ভোরের অরুণ-আভাসনে

ঘুমে ছুঁয়ে যাও মোর পাওয়ার পাখিরে ক্ষণে ক্ষণে।

            সহসা স্বপন টুটে

            তাই সে যে গেয়ে উঠে

                 কিছু তার বুঝি নাহি বুঝি।

            তাই সে যে পাখা মেলে

            উড়ে যায় ঘর ফেলে,

                 ফিরে আসে কারে খুঁজি খুঁজি।

 

ওগো মোর না-পাওয়া গো, সায়াহ্নের করুণ কিরণে

পূরবীতে ডাক দাও আমার পাওয়ারে ক্ষণে ক্ষণে।

            হিয়া তাই ওঠে কেঁদে,

            রাখিতে পারি না বেঁধে,

                 অকারণে দূরে থাকে চেয়ে--

            মলিন আকাশতলে

            যেন কোন্‌ খেয়া চলে,

                 কে যে যায় সারিগান গেয়ে।

 

ওগো মোর না-পাওয়া গো, বসন্তনিশীথসমীরণে

অভিসারে আসিতেছ আমার পাওয়ার কুঞ্জবনে।

            কে জানালো সে কথা যে

            গোপন হৃদয়মাঝে

                 আজও তাহা বুঝিতে পারি নি।

            মনে হল পলে পলে

            দূর পথে বেজে চলে

                 ঝিল্লিরবে তাহার কিঙ্কিণী।

 

ওগো মোর না-পাওয়া গো, কখন আসিয়া সংগোপনে

আমার পাওয়ার বীণা কাঁপাও অঙ্গুলিপরশনে।

            কার গানে কার সুর

            মিলে গেছে সুমধুর

                 ভাগ করে কে লইবে চিনে।

            ওরা এসে বলে, "এ কী,

            বুঝাইয়া বলো দেখি।'

                 আমি বলি বুঝাতে পারি নে।

 

ওগো মোর না-পাওয়া গো, শ্রাবণের অশান্ত পবনে

কদম্ববনের গন্ধে জড়িত বৃষ্টির বরিষনে

            আমার পাওয়ার কানে

            জানি নে তো মোর গানে

                 কার কথা বলি আমি কারে।

            "কী কহ' সে যবে পুছে

            তখন সন্দেহ ঘুচে--

                 আমার বন্দনা না-পাওয়ারে।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •