সন্ধ্যা (sondhya)
চলেছিল সারাপ্রহর
আমায় নিয়ে দূরে
যাত্রী-বোঝাই দিনের নৌকো
অনেক ঘাটে ঘুরে।
দূর কেবলই বেড়ে ওঠে
সামনে যতই চাই|
অন্ত যে তার নাই
দূর ছড়িয়ে রইল দিকে দিকে,
আকাশ থেকে দূর চেয়ে রয় নির্নিমিখে।
দিনের রৌদ্রে বাজতে থাকে
যাত্রাপথের সুর,
অনেক দূর-যে অনেক অনেক দূর।
ওগো সন্ধ্যা শেষপ্রহরের নেয়ে,
ভাসাও খেয়া ভাঁটার গঙ্গা বেয়ে।
পৌঁছিয়ে দাও কূলে
যেথায় আছ অতি-কাছের
দুয়ারখানি খুলে।
ওই-যে তোমার সন্ধ্যাতারা
মনকে ছুঁয়ে আছে,
ছায়ায় ঢাকা আম্লকী-বন
এগিয়ে এল কাছে।
দিনের আলো সবার আলো
লাগিয়েছিল ধাঁদা--
অনেক সেথায় নিবিড় হয়ে
দিল অনেক বাধা।
নানান-কিছু ছুঁয়ে ছুঁয়ে
হারানো আর পাওয়ায়
নানান দিকে ধাওয়ায়।
সন্ধ্যা ওগো কাছের তুমি,
ঘনিয়ে এসো প্রাণে--
আমার মধ্যে তারে জাগাও
কেউ যারে না জানে।
ধীরে ধীরে দাও আঙিনায় আনি
একলারই দীপখানি,
মুখোমুখি চাওয়ার সে দীপ,
কাছাকাছি বসার,
অতি-দেখার আবরণটি খসার।
সব-কিছুরে সরিয়ে করো
একটু-কিছুর ঠাঁই--
যার চেয়ে আর নাই।