বৃষ্টি কোথায় নুকিয়ে বেড়ায় উড়ো মেঘের দল হয়ে, যেই দেখা দেয় আর-এক ধারায় শ্রাবণ-ধারার জল হয়ে। আমি ভাবি চুপটি করে মোর দশা হয় ঐ যদি! কেই বা জানে আমি আবার আর-একজনও হই যদি! একজনারেই তোমরা চেন আর-এক আমি কারোই না। কেমনতরো ভাবখানা তার মনে আনতে পারই না। হয়তো বা ঐ মেঘের মতোই নতুন নতুন রূপ ধরে কখন যে সে ডাক দিয়ে যায়, কখন থাকে চুপ করে। কখন বা সে পুবের কোণে আলো-নদীর বাঁধ বাঁধে, কখন বা সে আধেক রাতে চাঁদকে ধরার ফাঁদ ফাঁদে। শেষে তোমার ঘরের কথা মনেতে তার যেই আসে, আমার মতন হয়ে আবার তোমার কাছে সেই আসে। আমার ভিতর লুকিয়ে আছে দুই রকমের দুই খেলা, একটা সে ঐ আকাশ-ওড়া, আরেকটা এই ভুঁই-খেলা।
হে ধরণী, জীবের জননী, শুনেছি যে মা তোমায় বলে, তবে কেন তোর কোলে সবে কেঁদে আসে, কেঁদে যায় চলে। তবে কেন তোর কোলে এসে সন্তানের মেটে না পিয়াসা। কেন চায়, কেন কাঁদে সবে, কেন কেঁদে পায় না ভালোবাসা। কেন হেথা পাষাণ-পরান, কেন সবে নীরস নিষ্ঠুর, কেঁদে কেঁদে দুয়ারে যে আসে কেন তারে করে দেয় দূর। কাঁদিয়া যে ফিরে চলে যায় তার তরে কাঁদিস নে কেহ, এই কি মা, জননীর প্রাণ, এই কি মা, জননীর স্নেহ!