ফুল ছিঁড়ে লয় হাওয়া, সে পাওয়া মিথ্যে পাওয়া-- আনমনে তার পুষ্পের ভার ধুলায় ছড়িয়ে যাওয়া। যে সেই ধুলার ফুলে হার গেঁথে লয় তুলে হেলায় সে ধন হয় যে ভূষণ তাহারি মাথার চুলে। শুধায়ো না মোর গান কারে করেছিনু দান-- পথধুলা-'পরে আছে তারি তরে যার কাছে পাবে মান।
অন্ধ মোহবন্ধ তব দাও মুক্ত করি-- রেখো না বসায়ে দ্বারে জাগ্রত প্রহরী হে জননী, আপনার স্নেহ-কারাগারে সন্তানেরে চিরজন্ম বন্দী রাখিবারে। বেষ্টন করিয়া তারে আগ্রহ-পরশে, জীর্ণ করি দিয়া তারে লালনের রসে, মনুষ্যত্ব-স্বাধীনতা করিয়া শোষণ আপন ক্ষুধিত চিত্ত করিবে পোষণ? দীর্ঘ গর্ভবাস হতে জন্ম দিলে যার স্নেহগর্ভে গ্রাসিয়া কি রাখিবে আবার? চলিবে সে এ সংসারে তব পিছু-পিছু? সে কি শুধু অংশ তব, আর নহে কিছু? নিজের সে, বিশ্বের সে, বিশ্বদেবতার-- সন্তান নহে, গো মাতঃ, সম্পত্তি তোমার।