কী কথা বলিব বলে বাহিরে এলেম চলে, দাঁড়ালেম দুয়ারে তোমার-- ঊর্ধ্বমুখে উচ্চরবে বলিতে গেলেম যবে কথা নাহি আর। যে কথা বলিতে চাহে প্রাণ সে শুধু হইয়া উঠে গান। নিজে না বুঝিতে পারি, তোমারে বুঝাতে নারি, চেয়ে থাকি উৎসুক-নয়ান। তবে কিছু শুধায়ো না-- শুনে যাও আনমনা, যাহা বোঝ, যাহা নাই বোঝ। সন্ধ্যার আঁধার-পরে মুখে আর কণ্ঠস্বরে বাকিটুকু খোঁজো। কথায় কিছু না যায় বলা, গান সেও উন্মত্ত উতলা। তুমি যদি মোর সুরে নিজ কথা দাও পুরে গীতি মোর হবে না বিফলা।
আজ জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে বসন্তের এই মাতাল সমীরণে। যাব না গো যাব না যে, থাকব পড়ে ঘরের মাঝে, এই নিরালায় রব আপন কোণে। যাব না এই মাতাল সমীরণে। আমার এ ঘর বহু যতন ক'রে ধুতে হবে মুছতে হবে মোরে। আমারে যে জাগতে হবে, কী জানি সে আসবে কবে যদি আমায় পড়ে তাহার মনে। যাব না এই মাতাল সমীরণে।
তুমি এবার আমায় লহো হে নাথ,লহো। এবার তুমি ফিরো না হে-- হৃদয় কেড়ে নিয়ে রহো। যে দিন গেছে তোমা বিনা তারে আর ফিরে চাহি না, যাক সে ধুলাতে। এখন তোমার আলোয় জীবন মেলে যেন জাগি অহরহ। কী আবেশে কিসের কথায় ফিরেছি হে যথায় তথায় পথে প্রান্তরে, এবার বুকের কাছে ও মুখ রেখে তোমার আপন বাণী কহো। কত কলুষ কত ফাঁকি এখনো যে আছে বাকি মনের গোপনে, আমায় তার লাগি আর ফিরায়ো না, তারে আগুন দিয়ে দহো।