কাঁচড়াপাড়াতে এক ছিল রাজপুত্তর, রাজকন্যারে লিখে পায় না সে উত্তর। টিকিটের দাম দিয়ে রাজ্য বিকাবে কি এ, রেগেমেগে শেষকালে বলে ওঠে--দুত্তোর! ডাকবাবুটিকে দিল মুখে ডালকুত্তোর।
ব্যঙ্গসুনিপুণা, শ্লেষবাণসন্ধানদারুণা! অনুগ্রহবর্ষণের মাঝে বিদ্রূপবিদ্যুৎঘাত অকস্মাৎ মর্মে এসে বাজে। সে যেন তুফান যাহারে চঞ্চল করে সে তরীকে করে খানখান অট্টহাস্য আঘাতিয়া এপাশে ওপাশে; প্রশ্রয়ের বীথিকায় ঘাসে ঘাসে রেখেছে সে কণ্টক-অঙ্কুর বুনে বুনে; অদৃশ্য আগুনে কুঞ্জ তার বেড়িয়াছে; যারা আসে কাছে সব থেকে তারা দূরে রয়; মোহমন্ত্রে যে হৃদয় করে জয় তারি 'পরে অবজ্ঞায় দারুণ নির্দয়। আপন তপস্যা লয়ে যে পুরুষ নিশ্চল সদাই, যে উহারে ফিরে চাহে নাই, জানি সেই উদাসীন একদিন জিনিয়াছে ওরে; জ্বালাময়ী তারি পায়ে দীপ্ত দীপ দিল অর্ঘ্য ভরে। বিদুষী নিয়েছে বিদ্যা শুধু চিত্তে নয়, আপন রূপের সাথে ছন্দ তারে দিল অঙ্গময়; বুদ্ধি তার ললাটিকা, চক্ষুর তারায় বুদ্ধি জ্বলে দীপশিখা; বিদ্যা দিয়ে রচে নাই পণ্ডিতের স্থূল অহংকার, বিদ্যারে করেছে অলংকার। প্রসাধনসাধনে চতুরা-- জানে সে ঢালিতে সুরা ভূষণভঙ্গিতে, অলক্তের আরক্ত ইঙ্গিতে। জাদুকরী বচনে চলনে; গোপন সে নাহি করে আপন ছলনে; অকপট মিথ্যারে সে নানা রসে করিয়া মধুর নিন্দা তার করি দেয় দূর; জ্যোৎস্নার মতন গোপনেও নহে সে গোপন। আঁধার আলোরি কোলে রয়েছে জাগরি-- নাম কি নাগরী।