যখনি যেমনি হোক জিতেনের মর্জি কথায় কথায় তার লাগে আশ্চর্যি। অডিটর ছিল জিতু হিসাবেতে টঙ্ক, আপিসে মেলাতেছিল বজেটের অঙ্ক; শুনলে সে, গেছে দেশে রামদীন দর্জি, শুনতে না-শুনতেই বলে 'আশ্চর্যি'। যে দোকানি গাড়ি তাকে করেছিল বিক্রি কিছুতে দাম না পেয়ে করেছে সে ডিক্রি, বিস্তর ভেবে জিতু উঠল সে গর্জি-- 'ভারি আশ্চর্যি'। শুনলে, জামাইবাড়ি ছিল বুড়ি ঝিনাদায়, ছ বছর মেলেরিয়া ভুগে ভুগে চিনা দায়, সেদিন মরেছে শেষে পুরোনো সে ওর ঝি, জিতেন চশমা খুলে বলে 'আশ্চর্যি'।
তুমি যত ভার দিয়েছ সে ভার করিয়া দিয়েছ সোজা, আমি যত ভার জমিয়ে তুলেছি সকলি হয়েছে বোঝা। এ বোঝা আমার নামাও বন্ধু, নামাও-- ভারের বেগেতে চলেছি, আমার এ যাত্রা তুমি থামাও। যে তোমার ভার বহে কভু তার সে ভারে ঢাকে না আঁখি, পথে বাহিরিলে জগৎ তারে তো দেয় না কিছুই ফাঁকি। অবারিত আলো ধরে আসি তার হাতে-- বনে পাখি গায়, নদীধারা ধায়, চলে সে সবার সাথে। তুমি কাজ দিলে কাজেরই সঙ্গে দাও যে অসীম ছুটি, তোমার আদেশ আবরণ হয়ে আকাশ লয় না লুটি। বাসনায় মোরা বিশ্বজগৎ ঢাকি-- তোমা-পানে চেয়ে যত করি ভোগ তত আরো থাকে বাকি। আপনি যে দুখ ডেকে আনি সে যে জ্বালায় বজ্রানলে-- অঙ্গার করে রেখে যায়, সেথা কোনো ফল নাহি ফলে। তুমি যাহা দাও সে যে দুঃখের দান, শ্রাবণধারায় বেদনার রসে সার্থক করে প্রাণ। যেখানে যা-কিছু পেয়েছি কেবলি সকলি করেছি জমা-- যে দেখে সে আজ মাগে যে হিসাব, কেহ নাহি করে ক্ষমা। এ বোঝা আমার নামাও বন্ধু, নামাও। ভারের বেগেতে ঠেলিয়া চলেছে, এ যাত্রা মোর থামাও।