চন্দননগর, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৩৪২


 

গীতচ্ছবি (gitochchhobi)


তুমি যবে গান কর অলৌকিক গীতমূর্তি তব

ছাড়ি তব অঙ্গসীমা আমার অন্তরে অভিনব

ধরে রূপ, যজ্ঞ হতে উঠে আসে যেন যাজ্ঞসেনী--

ললাটে সন্ধ্যার তারা, পিঠে জ্যোতিবিজড়িত বেণী,

চোখে নন্দনের স্বপ্ন, অধরের কথাহীন ভাষা

মিলায়ে গগনে মৌন নীলিমায়, কী সুধাপিপাসা

অমরার মরীচিকা রচে তব তনুদেহ ঘিরে।

অনাদিবীণায় বাজে যে রাগিণী গভীরে গম্ভীরে

সৃষ্টিতে প্রস্ফুটি উঠে পুষ্পে পুষ্পে, তারায় তারায়,

উত্তুঙ্গ পর্বতশৃঙ্গে, নির্ঝরের দুর্দম ধারায়,

জন্মমরণের দোলে ছন্দ দেয় হাসিক্রন্দনের,

সে অনাদি সুর নামে তব সুরে, দেহবন্ধনের

পাশ দেয় মুক্ত করি,বাধাহীন চৈতন্য এ মম

নিঃশব্দে প্রবেশ করে নিখিলের সে অন্তরতম

প্রাণের রহস্যলোকে--যেখানে বিদ্যুতসুক্ষ্ণছায়া

করিছ রূপের খেলা, পরিতেছে ক্ষণিকের কায়া,

আবার ত্যজিয়া দেহ ধরিতেছে মানসী আকৃতি--

সেই তো কবির কাব্য, সেই তো তোমার কণ্ঠে গীতি।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •