ভোজনবীর (bhojonbir)


অসংকোচে করিবে ক'ষে ভোজনরসভোগ,

    সাবধানতা সেটা যে মহারোগ।

        যকৃৎ যদি বিকৃত হয়

        স্বীকৃত রবে, কিসের ভয়,

           নাহয় হবে পেটের গোলযোগ।

কাপুরুষেরা করিস তোরা দুখভোগের ডর,

    সুখভোগের হারাস অবসর।

        জীবন মিছে দীর্ঘ করা

        বিলম্বিত মরণে মরা

           শুধুই বাঁচা না খেয়ে ক্ষীর সর।

দেহের তামসিকতা ছিছি মাংস হাড় পেশি,

    তাহারি পরে দরদ এত বেশি।

        আত্মা জানে রসের রুচি,

        কামনা করে কোফ্‌তা লুচি,

           তারেও হেলা বলো তো কোন্‌ দেশী।

ওজন করি ভোজন করা, তাহারে করি ঘৃণা

    মরণভীরু, এ কথা বুঝিবি না।

        রোগে মরার ভাবনা নিয়ে

        সাবধানীরা রহে কি জিয়ে--

           কেহ কি কভু মরে না রোগ বিনা।

মাথা ধরায় মাথার শিরা হোক-না ঝংকৃত,

    পেটের নাড়ি ব্যথায় টংকৃত।

        ওডিকলোনে ললাট ভিজে--

        মাদুলি আর তাগা-তাবিজে

           সারাটা দেহ হবে অলংকৃত।

যখন আধিভৌতিকের বাজিবে শেষ ঘড়ি,

    গলায় যমদৌতিকের দড়ি।

        হোমিয়োপ্যাথি বিমুখ যবে,

        কবিরাজিও নারাজ হবে,

           তখন আবধৌতিকের বড়ি।

তাহার পরে ছেলে তো আছে বাপেরই পথে ঢুকে

    অম্লশূলসাধনকৌতুকে।

        কাঁচা আমের আচার যত

        রহিবে হয়ে বংশগত,

           ধরাবে জ্বালা পারিবারিক বুকে।

খাওয়া বাঁচায়ে বাঙালিদের বাঁচিতে হলে ঝোঁক

    এ দেশে তবে ধরিত না তো লোক।

        অপরিপাকে মরণভয়

        গৌড়জনে করেছে জয়,

           তাদের লাগি কোরো না কেহ শোক।

লঙ্কা আনো, সর্ষে আনো, সস্তা আনো ঘৃত,

    গন্ধে তার হোয়ো না শঙ্কিত।

        আঁচলে ঘেরি কোমর বাঁধো,

        ঘণ্ট আর ছেঁচকি রাঁধো,

           বৈদ্য ডাকো-- তাহার পরে মৃত।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •