বাহির হলেম আমি আপন ভিতর হতে,
                 নীল আকাশে পাড়ি দেব খ্যাপা হাওয়ার স্রোতে।।
             আমের মুকুল ফুটে ফুটে যখন পড়ে ঝ’রে ঝ’রে
                     মাটির আঁচল ভ’রে ভ’রে–
             ঝরাই আমার মনের কথা ভরা ফাগুন-চোতে।।
                 কোথা তুই     প্রাণের দোসর বেড়াস ঘুরি ঘুরি–
                      বনবীথির আলোছায়ায় করিস লুকোচুরি।
             আমার   একলা বাঁশি পাগলামি তার পাঠায় দিগন্তরে
                          তোমার গানের তরে–
             কবে   বসন্তেরে জাগিয়ে দেব আমাতে আর তোতে।।

সে যে   মনের মানুষ, কেন তারে বসিয়ে রাখিস নয়নদ্বারে?
          ডাক্‌-না রে তোর বুকের ভিতর, নয়ন ভাসুক নয়নধারে ॥
যখন    নিভবে আলো, আসবে রাতি,   হৃদয়ে দিস আসন পাতি--
          আসবে সে যে সঙ্গোপনে বিচ্ছেদেরই অন্ধকারে ॥
                   তার              আসা-যাওয়ার গোপন পথে
                   সে                আসবে যাবে আপন মতে।
তারে   বাঁধবে ব'লে যেই করো পণ       সে থাকে না, থাকে বাঁধন--
          সেই বাঁধনে মনে মনে বাঁধিস কেবল আপনারে ॥

     তুমি    যেয়ো না এখনি।
          এখনো আছে রজনী
          পথ বিজন    তিমিরসঘন,
     কানন কণ্টকতরুগহন-- আঁধারা ধরণী।
বড়ো সাধে জ্বালিনু দীপ, গাঁথিনু মালা--
     চিরদিনে, বঁধু, পাইনু হে তব দরশন।
              আজি যাব অকূলের পারে,
          ভাসাব প্রেমপারাবারে    জীবনতরণী।