তোতাকাহিনী
Stories
এক-যে ছিল পাখি। সে ছিল মূর্খ। সে গান গাহিত, শাস্ত্র পড়িত না। লাফাইত, উড়িত, জানিত না কায়দাকানুন কাকে বলে।
রাজা বলিলেন, 'এমন পাখি তো কাজে লাগে না, অথচ বনের ফল খাইয়া রাজহাটে ফলের বাজারে লোকসান ঘটায়।'
আরো দেখুন
দর্পহরণ
Stories
কী করিয়া গল্প লিখিতে হয়, তাহা সম্প্রতি শিখিয়াছি। বঙ্কিমবাবু এবং সার্‌ ওয়াল্‌টার স্কট পড়িয়া আমার বিশেষ ফল হয় নাই। ফল কোথা হইতে কেমন করিয়া হইল, আমার এই প্রথম গল্পেই সেই কথাটা লিখিতে বসিলাম।
আমার পিতার মতামত অনেকরকম ছিল; কিন্তু বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কোনো মত তিনি কেতাব বা স্বাধীনবুদ্ধি হইতে গড়িয়া তোলেন নাই। আমার বিবাহ যখন হয় তখন সতেরো উত্তীর্ণ হইয়া আঠারোয় পা দিয়াছি; তখন আমি কলেজে থার্ডইয়ারে পড়ি-- এবং তখন আমার চিত্তক্ষেত্রে যৌবনের প্রথম দক্ষিণবাতাস বহিতে আরম্ভ করিয়া কত অলক্ষ্য দিক হইতে কত অনির্বচনীয় গীতে এবং গন্ধে, কম্পনে এবং মর্মরে আমার তরুণ জীবনকে উৎসুক করিয়া তুলিতেছিল, তাহা এখনো মনে হইলে বুকের ভিতরে দীর্ঘনিশ্বাস ভরিয়া উঠে।
আরো দেখুন
পুরোনো বাড়ি
Stories
অনেক কালের ধনী গরিব হয়ে গেছে, তাদেরই ঐ বাড়ি।
দিনে দিনে ওর উপরে দুঃসময়ের আঁচড় পড়ছে।
আরো দেখুন
ধূলি
Verses
অয়ি ধূলি, অয়ি তুচ্ছ, অয়ি দীনহীনা,
সকলের নিম্নে থাক নীচতম জনে
বক্ষে বাঁধিবার তরে; সহি সর্ব ঘৃণা
কারে নাহি কর ঘৃণা। গৈরিক বসনে
হে ব্রতচারিণী তুমি সাজি উদাসীনা
বিশ্বজনে পালিতেছ আপন ভবনে।
নিজেরে গোপন করি, অয়ি বিমলিনা,
সৌন্দর্য বিকশি তোল বিশ্বের নয়নে।
বিস্তারিছ কোমলতা হে শুষ্ক কঠিনা--
হে দরিদ্রা, পূর্ণা তুমি রত্নে ধান্যে ধনে।
হে আত্মবিস্মৃতা, বিশ্বচরণবিলীনা,
বিস্মৃতেরে ঢেকে রাখ অঞ্চল-বসনে।
নূতনেরে নির্বিচারে কোলে লহ তুলি,
পুরাতনে বক্ষে ধর হে জননী ধূলি।
আরো দেখুন
ঘুম
Verses
ঘুমিয়ে পড়েছে শিশুগুলি,
       খেলাধুলা সব গেছে ভুলি।
ধীরে নিশীথের বায় আসে খোলা জানালায়,
     ঘুম এনে দেয় আঁখিপাতে,
শয্যায় পায়ের কাছে খেলেনা ছড়ানো আছে,
     ঘুমিয়েছে খেলাতে-খেলাতে।
এলিয়ে গিয়েছে দেহ, মুখে দেবতার স্নেহ
     পড়েছে রে ছায়ার মতন,
কালো কালো চুল তার বাতাসেতে বার বার
     উড়ে উড়ে ঢাকিছে বদন।
তারার আলোর মতো হাসিগুলি আসে কত,
     আধো-খোলা অধরেতে তার
     চুমো খেয়ে যায় কত বার।
সারা রাত স্নেহসুখে তারাগুলি চায় মুখে,
     যেন তারা করে গলাগলি,
     কত কী যে করে বলাবলি!
যেন তারা আঁচলেতে আঁধারে আলোতে গেঁথে
     হাসিমাখা সুখের স্বপন,
ধীরে ধীরে স্নেহভরে শিশুর প্রাণের 'পরে
     একে একে করে বরিষন।
কাল যবে রবিকরে কাননেতে থরে থরে
     ফুটে ফুটে উঠিবে কুসুম,
ওদোরো নয়নগুলি ফুটিয়া উঠিবে খুলি,
     কোথায় মিলায়ে যাবে ঘুম।
প্রভাতের আলো জাগি যেন খেলাবার লাগি
     ওদের জাগায়ে দিতে চায়,
আলোতে ছেলেতে ফুলে এক সাথে আঁখি খুলে
     প্রভাতে পাখিতে গান গায়।
আরো দেখুন
আগমনী
Stories
আয়োজন চলেইছে। তার মাঝে একটুও ফাঁক পাওয়া যায় না যে ভেবে দেখি, কিসের আয়োজন।
তবুও কাজের ভিড়ের মধ্যে মনকে এক-একবার ঠেলা দিয়ে জিজ্ঞাসা করি, 'কেউ আসবে বুঝি?'
আরো দেখুন
The Parrot`s Training
Stories
ONCE UPON A time there was a bird. It was ignorant. It sang all right, but never recited scriptures. It hopped pretty frequently, but lacked manners.
Said the Raja to himself: ‘Ignorance is costly in the long run. For fools consume as much food as their betters, and yet give nothing in return.’
আরো দেখুন
নূতন ও সনাতন
Verses
রাজা ভাবে, নব নব আইনের ছলে
ন্যায় সৃষ্টি করি আমি। ন্যায়ধর্ম বলে,
আমি পুরাতন, মোরে জন্ম কেবা দেয়--
যা তব নূতন সৃষ্টি সে শুধু অন্যায়।
আরো দেখুন
মাল্যদান
Stories
সকালবেলায় শীত-শীত ছিল। দুপুরবেলায় বাতাসটি অল্প-একটু তাতিয়া উঠিয়া দক্ষিণ দিক হইতে বহিতে আরম্ভ করিয়াছে।
যতীন যে বারান্দায় বসিয়া ছিল সেখান হইতে বাগানের এক কোণে এক দিকে একটি কাঁঠাল ও আর-এক দিকে একটি শিরীষগাছের মাঝখানের ফাঁক দিয়া বাহিরের মাঠ চোখে পড়ে। সেই শূন্য মাঠ ফাল্গুনের রৌদ্রে ধুধু করিতেছিল। তাহারই একপ্রান্ত দিয়া কাঁচা পথ চলিয়া গেছে -- সেই পথ বাহিয়া বোঝাই-খালাস গোরুর গাড়ি মন্দগমনে গ্রামের দিকে ফিরিয়া চলিয়াছে, গাড়োয়ান মাথায় গামছা ফেলিয়া অত্যন্ত বেকারভাবে গান গহিতেছে।
আরো দেখুন
মেঘ ও রৌদ্র
Stories
পূর্বদিনে বৃষ্টি হইয়া গিয়াছে। আজ ক্ষান্তবর্ষণ প্রাতঃকালে ম্লান রৌদ্র ও খণ্ড মেঘে মিলিয়া পরিপক্কপ্রায় আউশ ধানের ক্ষেত্রের উপর পর্যায়ক্রমে আপন আপন সুদীর্ঘ তুলি বুলাইয়া যাইতেছিল; সুবিস্তৃত শ্যাম চিত্রপট একবার আলোকের স্পর্শে উজ্জ্বল পাণ্ডুবর্ণ ধারণ করিতেছিল আবার পরক্ষণেই ছায়াপ্রলেপে গাঢ় স্নিগ্ধতায় অঙ্কিত হইতেছিল।
যখন সমস্ত আকাশরঙ্গভূমিতে মেঘ এবং রৌদ্র, দুইটি মাত্র অভিনেতা, আপন আপন অংশ অভিনয় করিতেছিল তখন নিম্নে সংসাররঙ্গভূমিতে কত স্থানে কত অভিনয় চলিতেছিল তাহার আর সংখ্যা নাই।
আরো দেখুন
কী সুর বাজে
Songs
কী সুর বাজে আমার প্রাণে   আমিই জানি, মনই জানে॥
     কিসের লাগি সদাই জাগি,   কাহার কাছে কী ধন মাগি--
                        তাকাই কেন পথের পানে॥
দ্বারের পাশে প্রভাত আসে,   সন্ধ্যা নামে বনের বাসে।
     সকাল-সাঁঝে বাঁশি বাজে,   বিকল করে সকল কাজে--
                        বাজায় কে যে কিসের তানে॥
আরো দেখুন