206
Verses
LET ME not put myself wrongly to my world and set it against me.
আরো দেখুন
পয়লা নম্বর
Stories
আমি তামাকটা পর্যন্ত খাই নে। আমার এক অভ্রভেদী নেশা আছে, তারই আওতায় অন্য সকল নেশা একেবারে শিকড় পর্যন্ত শুকিয়ে মরে গেছে। সে আমার বই-পড়ার নেশা। আমার জীবনের মন্ত্রটা ছিল এই--
              যাবজ্জীবেৎ নাই-বা জীবেৎ
আরো দেখুন
বেদ: সংহিতা ও উপনিষৼ
Verses
                  ১
পিতা নোহসি
         পিতা নো বোধি
                  নমস্তেহস্তু
                         মা মা হিংসীঃ।
                         --শুক্লযজুর্বেদ, ৩৭. ২০
বিশ্বানি দেব সবিতর্দুরিতানি পরাসুব
যদ্ভদ্রং তন্ন আসুব॥  
                         --শুক্লযজুর্বেদ, ৩০. ৩
নমঃ শম্ভবায় চ ময়োভবায় চ
নমঃ শংকরায় চ ময়স্করায় চ
নমঃ শিবায় চ শিবতরায় চ॥
                         --শুক্লযজুর্বেদ, ১৬. ৪১
                 ১
        তুমি আমাদের পিতা,
তোমায় পিতা বলে যেন জানি,
তোমায়  নত হয়ে যেন মানি,
তুমি  কোরো না কোরো না রোষ
হে পিতা, হে দেব, দূর করে দাও
        যত পাপ যত দোষ--
যাহা ভালো তাই দাও আমাদের
        যাহাতে তোমার তোষ।
তোমা হতে সব সুখ হে পিতা,
        তোমা হতে সব ভালো--
তোমাতেই সব সুখ হে পিতা,
        তোমাতেই সব ভালো।
তুমিই ভালো হে, তুমিই ভালো,
        সকল ভালোর সার--
তোমারে নমস্কার হে পিতা,
        তোমারে নমস্কার!
                         ২
যো দেবোহগ্নৌ যোহপ্‌সু
যো বিশ্বং ভুবনমাবিবেশ।
যা ওষধীষু যো বনস্পতিষু
তস্মৈ দেবায় নমো নমঃ॥
                        --শ্বেতাশ্বতর উপনিষৎ, ২. ১৭
             ২
যিনি অগ্নিতে যিনি জলে,
যিনি সকল ভুবনতলে,
যিনি বৃক্ষে যিনি শস্যে,
      তাঁহারে নমস্কার--
তাঁরে নমি নমি বার বার।
                            ৩
ভূর্ভুবঃ স্বঃ তৎ সবিতুর্বরেণ্যং
ভর্গো দেবস্য ধীমহি
ধিয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ॥
                        --শুক্লযজুর্বেদ, ৩৬. ৩
               ৩
যাঁ হতে বাহিরে ছড়ায়ে পড়িছে
      পৃথিবী আকাশ তারা,
যাঁ হতে আমার অন্তরে আসে
      বুদ্ধি চেতনা ধারা--
তাঁরি পূজনীয় অসীম শক্তি
      ধ্যান করি আমি লইয়া ভক্তি।
                             ৪
সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্রহ্ম।
                        --তৈত্তিরীয় উপনিষৎ, ২. ১. ১
আনন্দরূপমমৃতং যদ্‌বিভাতি।
                         --মুণ্ডক, ২. ২. ৭
শান্তং শিবমদ্বৈতম্‌।
                           --মাণ্ডুক্য, ৭
                  ৪
সত্য রূপেতে আছেন সকল ঠাঁই,
জ্ঞান রূপে তাঁর কিছু অগোচর নাই,
দেশে কালে তিনি অন্তহীন অগম্য--
      তিনিই ব্রহ্ম, তিনিই পরম ব্রহ্ম।
তাঁরই আনন্দ দিকে দিকে দেশে দেশে
প্রকাশ পেতেছে কত রূপে কত বেশে--
      তিনি প্রশান্ত, তিনি কল্যাণহেতু,
তিনি এক, তিনি সবার মিলনসেতু।
                     ৫
য আত্মদা বলদা যস্য বিশ্ব উপাসতে প্রশিষং যস্য দেবাঃ।
যস্য ছায়ামৃতং যস্য মৃত্যুঃ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম॥
যাঃ প্রাণতো নিমিষতো মহিত্বৈক ইদ্রাজা জগতো বভূব।
য ঈশে অস্য দ্বিপদশ্চতুষ্পদঃ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম॥
যস্যেমে হিমবন্তো মহিত্বা যস্য সমুদ্রং রসয়া সহাহুঃ।
যস্যেমাঃ প্রদিশো যস্য বাহূ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম॥
যেন দ্যৌরুগ্রা পৃথিবী চ দৃল্‌হা যেন স্বঃ স্তভিতং যেন নাকঃ।
যো অন্তরিক্ষে রজসো বিমানঃ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম॥
যং ক্রন্দসী অবসা তস্তভানে অভ্যৈক্ষেতাং মনসা রেজমানে।
যত্রাধি সূর উদিতো বিভাতি কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম॥
মা নো হিংসীজ্জনিতা যঃ পৃথিব্যা যো বা দিবং সত্যধর্মা জজান।
যশ্চাপশ্চন্দ্রা বৃহতীর্জজান কস্মৈ দেবায় হরিষা বিধেম॥
                                                       --ঋগ্‌বেদ, ১০. ১২১. ২-৬, ৯
                        ৫
আপনারে দেন যিনি,
        সদা যিনি দিতেছেন বল,
বিশ্ব যাঁর পূজা করে,
        পূজে যাঁরে দেবতা সকল,
অমৃত যাঁহার ছায়া,
        যাঁর ছায়া মহান্‌ মরণ,
সেই কোন্‌ দেবতারে
        হবি মোরা করি সমর্পণ!
যিনি মহামহিমায়
        জগতের একমাত্র পতি,
দেহবান্‌ প্রাণবান্‌
        সকলের একমাত্র গতি,
যেথা যত জীব আছে
        বহিতেছে যাঁহার শাসন,
সেই কোন্‌ দেবতারে
        হবি মোরা করি সমর্পণ!
এই-সব হিমবান্‌
        শৈলমালা মহিমা যাঁহার,
মহিমা যাঁহার এই
        নদী-সাথে মহাপারাবার,
দশ দিক যাঁর বাহু
        নিখিলেরে করিছে ধারণ,
সেই কোন্‌ দেবতারে
        হবি মোরা করি সমর্পণ!
দ্যুলোক যাঁহাতে দীপ্ত,
        যাঁর বলে দৃঢ় ধরাতল,
স্বর্গলোক সুরলোক
        যাঁর মাঝে রয়েছে অটল,
শূন্য অন্তরীক্ষে যিনি
        মেঘরাশি করেন সৃজন,
সেই কোন্‌ দেবতারে
        হবি মোরা করি সমর্পণ!
দ্যুলোক ভূলোক এই
        যাঁর তেজে স্তব্ধ জ্যোতির্ময়
নিরন্তর যাঁর পানে
        একমনে তাকাইয়া রয়,
যাঁর মাঝে সূর্য উঠি
        কিরণ করিছে বিকিরণ,
সেই কোন্‌ দেবতারে
        হবি মোরা করি সমর্পণ!
সত্যধর্মা দ্যুলোকের
        পৃথিবীর যিনি জনয়িতা,
মোদের বিনাশ তিনি
        না করুন, না করুন পিতা!
যাঁর জলধারা সদা
        আনন্দ করিছে বরিষণ,
সেই কোন্‌ দেবতারে
        হবি মোরা করি সমর্পণ!
            পাঠান্তর  ৫
আত্মদা বলদা যিনি; সর্ব বিশ্ব সকল দেবতা
বহিছে শাসন যাঁর; মৃত্যু ও অমৃত যাঁর ছায়া;
        আর কোন্‌ দেবতারে দিব মোরা হবি?
যিনি স্বীয় মহিমায় বিরাজেন একমাত্র রাজা
প্রাণবান্‌ জগতের, চতুষ্পদ দ্বিপদ প্রাণীর;
        আর কোন্‌ দেবতারে দিব মোরা হবি?
এই হিমবন্ত গিরি, নদীসহ এই অম্বুনিধি
বিশাল মহিমা যাঁর; এই সর্ব দিক্‌ যাঁর বাহু;
        আর কোন্‌ দেবতারে দিব মোরা হবি?
যাঁর দ্বারা দীপ্ত এই দ্যুলোক, পৃথিবী দৃঢ়তর;
যিনি স্থাপিলেন স্বর্গ, অন্তরীক্ষে রচিলেন মেঘ;
        আর কোন্‌ দেবতারে দিব মোরা হবি?
মহাশক্তি-প্রতিষ্ঠিত দীপ্যমান দ্যুলোক ভূলোক
যাঁরে করে নিরীক্ষণ; সূর্য যাঁহে লভিছে প্রকাশ;
        আর কোন্‌ দেবতারে দিব মোরা হবি?
যিনি সত্যধর্মা, যিনি স্বর্গ পৃথিবীর জনয়িতা,
আমাদের না করুন নাশ! স্রষ্টা যিনি মহাসমুদ্রের;
        আর কোন্‌ দেবতারে দিব মোরা হবি?
                          ৬
যদেমি প্রস্ফুরন্নিব দৃতি র্ন ধ্‌মাতো অদ্রিবঃ।
        মৃড়া সুক্ষত্র মৃড়য়॥
ক্রত্বঃ সমহ দীনতা প্রতীপং জগমা শুচে।
        মৃড়া সুক্ষত্র মৃড়য়॥
অপাং মধ্যে তস্থিবাংসং তৃষ্ণাবিদজ্জরিতারম্‌।
        মৃড়া সুক্ষত্র মৃড়য়॥
                          --ঋগ্‌বেদ, ৭. ৮৯. ২-৪
                         ৬
যদি   ঝড়ের মেঘের মতো আমি ধাই
             চঞ্চল-অন্তর
তবে  দয়া কোরো হে, দয়া কোরো হে,
             দয়া কোরো ঈশ্বর।
ওহে  অপাপপুরুষ, দীনহীন আমি
             এসেছি পাপের কূলে--
প্রভু  দয়া কোরো হে, দয়া কোরো হে,
          দয়া করে লও তুলে।
আমি জলের মাঝারে বাস করি তবু
          তৃষায় শুকায়ে মরি--
প্রভু  দয়া কোরো হে, দয়া করে দাও
          হৃদয় সুধায় ভরি॥
                          ৭
যৎ কিং চেদং বরুণ দৈব্যে
জনেহভিদ্রোহং মনুষ্যাশ্চরামসি।
অচিত্তী যত্তব ধর্মা যুযোপিম
মা নস্তস্মাদেনসো দেব রীরিষঃ॥
                  --ঋগ্‌বেদ, ৭. ৮৯. ৫
                         ৭
হে বরুণদেব,
         মানুষ আমরা দেবতার কাছে
                 যদি থাকি পাপ ক'রে,
         লঙ্ঘন করি তোমার ধর্ম
                 যদি অজ্ঞানঘোরে--
         ক্ষমা কোরো তবে, ক্ষমা কোরো হে,
                 বিনাশ কোরো না মোরে।
                           ৮
অপো সু ম্যক্ষ বরুণ ভিয়সং
মৎসম্রাড়ৃতা বোহনু মা গৃভায়।
দামেব বৎসাদ্ধি মুমুগ্‌ধ্যংহো
নহি ত্বদারে নিমিশশ্চনেশে॥
মা নো বধৈর্বরুণ যে ত ইষ্টা-
বেনঃ কৃণ্‌বন্তমসুর ভ্রীণন্তি।
মা জ্যোতিষঃ প্রবসথানি গন্ম
বি ষু মৃধঃ শিশ্রথো জীবসে নঃ॥
নমঃ পুরা তে বরুণোত নূনম্‌
উতাপরং তু বিজাত ব্রবাম।
ত্বে হি কং পর্বতে শ্রিতান্য-
প্রচ্যুতানি দূলভ ব্রতানি॥
পর ঋণা সাবীরধ মৎকৃতানি
মাহং রাজন্নন্যকৃতেন ভোজম্‌।
আব্যুষ্টা ইন্নু ভূয়সীরুষাস
আ নো জীবান্‌ বরুণ তাসু শাধি॥
                     --ঋগ্‌বেদ, ২. ২৮. ৬-৯
                     ৮
হে বরুণ, তুমি দূর কর হে, দূর করো মোর ভয়--
ওহে ঋতবান্‌, ওহে সম্রাট্‌, মোরে যেন দয়া হয়।
বাঁধন-ঘুচানো বৎসের মতো ঘুচাও পাপের দায়--
তুমি না রহিলে একটি নিমেষও কেহ কি রক্ষা পায়।
বিদ্রোহী যারা তাদের, হে দেব, যে দণ্ড কর দান--
আমার উপরে, হে বরুণ, তুমি হানিয়ো না সেই বাণ।
জ্যোতি হতে মোরে দূরে পাঠায়ো না, রাখো রাখো মোর প্রাণ--।
তব গুণ আমি গেয়েছি নিয়ত, আজও করি তব গান--
আগামী কালেও, সর্বপ্রকাশ, গাব আমি তব গান।
হে অপরাজিত, যত সনাতন বিধান তোমার কৃত
স্খলনবিহীন রয়েছে অটল পর্বতে-আশ্রিত।
ওহে মহারাজ, দূর করে দাও নিজে করেছি যে পাপ!
অন্যের কৃত পাপফল যেন আমারে না দেয় তাপ!
বহু উষা আজও হয় নি উদিত, সে-সব উষার মাঝে
আমার জীবন করিয়া পালন লাগাও তোমার কাজে॥
              ৯
তমীশ্বরাণাং পরমং মহেশ্বরং
তং দেবতানাং পরমং চ দৈবতম্‌।
পতিং পতীনাং পরমং পরস্তাদ্‌
বিদাম দেবং ভুবনেশমীড্যম্‌॥
ন তস্য কার্যং করণং চ বিদ্যতে
ন তৎসমশ্চাভ্যধিকশ্চ দৃশ্যতে।
পরাস্য শক্তির্বিবিধৈব শ্রূয়তে
স্বাভাবিকী জ্ঞানবলক্রিয়া চ॥
ন তস্য কশ্চিৎ পতিরস্তি লোকে
ন চেশিতা নৈব চ তস্য লিঙ্গম্‌।
স কারণং করণাধিপাধিপো
ন চাস্য কশ্চিজ্জনিতা ন চাধিপঃ॥
                   --শ্বেতাশ্বতর উপনিষৎ, ৬. ৭-৯
এষ দেবো বিশ্বকর্মা মহাত্মা
সদা জনানাং হৃদয়ে সন্নিবিষ্টঃ।
হৃদা মনীষা মনসাভিক৯প্তো
য এতদ্‌বিদুরমৃতাস্তে ভবন্তি॥
                   --শ্বেতাশ্বতর উপনিষৎ, ৪. ১৭
                   ৯
সকল ঈশ্বরের পরমেশ্বর,
        সব দেবতার পরমদেব,
সকল পতির পরমপতি,
        সব পরমের পরাৎপর।
তাঁরে জানি তিনি নিখিলপূজ্য
        তিনি ভুবনেশ্বর।
কর্ম-বাঁধনে নহেন বাঁধা,
        বাঁধা না তাঁহারে দেহ--
সমান তাঁহার কেহ না, তাঁ হতে
        বড়ো নাই নাই কেহ।
তাঁর বিচিত্র পরমাশক্তি
        প্রকাশে জলে স্থলে
তাঁহার জ্ঞানের বলের ক্রিয়া।
        আপনা-আপনি চলে।
জগতে তাঁহার পতি নাই কেহ,
        কলেবর নাই কভু--
তিনিই কারণ, মনের চালন
        নাই পিতা, নাই প্রভু।
ইনি দেব ইনি মহান্‌ আত্মা
        আছেন বিশ্বকাজে,
সকল জানের হৃদয়ে হৃদয়ে
        ইঁহারই আসন রাজে।
সংশয়হীন বোধের বিকাশে
        ইঁহাকে জানেন যাঁরা
        জগতে অমর তাঁরা।
                    ১০
স পর্যগাচ্ছুক্রমকায়মব্রণমস্নাবিরং শুদ্ধমপাপবিদ্ধম্॥
কবির্মনীষী পরিভূঃ স্বয়ম্ভূর্যাথাতথ্যতোহর্থান্‌
ব্যদধাৎ শাশ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ॥
                              --ঈশোপনিষৎ, ৮
                   ১০
শুভ্র কায়াহীন নির্বিকার
নাহি তাঁর আশ্রয় আধার--
তিনি শুদ্ধ, পাপ তাঁহে নাই।
তিনি বিরাজেন সর্ব ঠাঁই।
তিনি কবি বিশ্বরচনের,
তিনি পতি মানবমনের,
তিনি প্রভু নিখিল জনার--
আপনিই প্রভু আপনার।
বাধাহীন বিধান তাঁহার
চলিছে অনন্তকাল ধরি,
প্রয়োজন যতটুকু যার
সকলই উঠিছে ভরি ভরি।
             ১১
অভয়ং নঃ করত্যন্তরিক্ষ--
মভয়ং দ্যাবাপৃথিবী উভে ইমে।
অভয়ং পশ্চাদভয়ং পুরস্তা-
দুত্তরাদধরাদভয়ং নো অস্তু॥
অভয়ং মিত্রাদভয়মমিত্রা-
দভয়ং জ্ঞাতাদভয়ং পরোক্ষাৎ।
অভয়ং নক্তমভয়ং দিবা নঃ
সর্বা আশা মম মিত্রং ভবন্তু॥
                   --অথর্ববেদ, ১৯. ১৫. ৫-৬
                   ১১
অন্তরীক্ষ আমাদের হউক অভয়,
দ্যুলোক ভূলোক উভে হউক অভয়।
পশ্চাৎ অভয় হোক সম্মুখ অভয়,
ঊর্ধ্ব নিম্ন আমাদের হউক অভয়।
বান্ধব অভয় হোক শত্রুও অভয়,
জ্ঞাত যা অভয় হোক অজ্ঞাত অভয়।
রজনী অভয় হোক দিবস অভয়,
সর্বদিক আমাদের মিত্র যেন হয়।
               ১২
শৃন্বন্তু বিশ্বে অমৃতস্য পুত্রা
আ যে ধামানি দিব্যানি তস্থূঃ॥
                   --শ্বেতাশ্বতর উপনিষৎ, ২. ৫
বেদাহমেতং পুরুষং মহান্তম্‌
আদিত্যবর্ণং তমসঃ পরস্তাৎ।
তমেব বিদিত্বাতিমৃত্যুমেতি
নান্যঃ পন্থা বিদ্যতে অয়নায়॥
                   --শ্বেতাশ্বতর উপনিষৎ, ৩. ৮
                   ১২
                         শোনো বিশ্বজন,
শোনো অমৃতের পুত্র যত দেবগণ
দিব্যধামবাসী, আমি জেনেছি তাঁহারে
মহান্ত পুরুষ যিনি আঁধারের পারে
জ্যোতির্ময়। তাঁরে জেনে তাঁর পানে চাহি
মৃত্যুরে লঙ্ঘিতে পারো, অন্য পথ নাহি।
                   ১৩
সত্যকামোহজাবালো জবালাং মাতরমামন্ত্রয়াঞ্চক্রে
ব্রহ্মচর্যং ভবতি বিবৎস্যামি কিংগোত্রোহন্বহমস্মীতি।
সা হৈনমুবাচ নাহমেতদ্‌ বেদ তাত যদ্‌গোত্রস্‌ত্‌বমসি
বহ্বহং চরন্তী পরিচারিণী যৌবনে ত্বামলভে
সাহমেতন্ন বেদ যদ্‌গোত্রস্‌ত্‌বমসি
জবালা তু নামাহমস্মি সত্যকামো নাম ত্বমসি
স সত্যকাম এব জাবালো ব্রুবীথা ইতি।
স হ হারিদ্রুমতং গৌতমমেত্যোবাচ
ব্রহ্মচর্যং ভগবতি বৎস্যাম্যুপেয়াং ভগবন্তমিতি।
তং হোবাচ কিং গোত্রো নু সোম্যাসীতি।
স হোবাচ নাহমেতদ্‌ বেদ ভো যদ্‌গোত্রোহস্মি
অপৃচ্ছং মাতরং
সা মা প্রত্যব্রবীদ্‌ বহ্বহং চরন্তী পরিচারিণী যৌবনে ত্বামলভে
সাহমেতন্ন বেদ যদ্‌গোত্রস্‌ত্‌বমসি
জবালা তু নামাহমস্মি সত্যকামো নাম ত্বমসীতি সোহহং
সত্যকামো জাবালোহস্মি ভো ইতি।
তং হোবাচ নৈতদব্রাহ্মণো বিবক্তুমর্হতি
সমিধং সোম্যাহরোপ ত্বা নেষ্যে
ন সত্যাদগা ইতি।
                       --ছান্দোগ্যোপনিষৎ, ৪. ৪
                       ১৩
সত্যকাম জাবাল মাতা জবালাকে বললেন,
     "ব্রহ্মচর্য গ্রহণ করব, কী গোত্র আমার?'
তিনি  বললেন, "জানি নে, তাত, কী গোত্র তুমি।
            যৌবনে বহুপরিচর্যাকালে তোমাকে পেয়েছি;
            তাই জানি নে তোমার গোত্র।
জবালা আমার নাম, তোমার নাম সত্যকাম,
            তাই বোলো তুমি সত্যকাম জাবাল।'
সত্যকাম বললে হারিদ্রুমত গৌতমকে,
     "ভগবান্‌, আমাকে ব্রহ্মচর্যে উপনীত করুন।'
তিনি বললেন, "সৌম্য, কী গোত্র তুমি?'
সে বললে, "আমি তা জানি নে।
     মাকে জিজ্ঞাসা করেছি আমার গোত্র কী।
তিনি বলেছেন-- যৌবনে যখন বহুপরিচারিণী ছিলেম
                             তোমাকে পেয়েছি।
আমার নাম জবালা, তোমার নাম সত্যকাম,
     বোলো আমি সত্যকাম জাবাল।'
তিনি তখন বললেন, "এমন কথা অব্রাহ্মণ বলতে পারে না।
            সত্য থেকে নেমে যাও নি তুমি।
সমিধ আহরণ করো সৌম্য, তোমাকে উপনীত করি।'
                     ১৪
মা মিৎ কিল ত্বং বনাঃ শাখাং মধুমতীমিব।
                             --অথর্ববেদ, ১. ৩৪. ৪
যথা সুপর্ণঃ প্রপতন্‌ পক্ষৌ নিহন্তি ভূম্যাম্‌
            এবা নি হন্মি তে মনঃ।
                             --অথর্ববেদ, ৬. ৮. ২
                ১৪
     ফুল্ল শাখা যেমন মধুমতী
মধুরা হও তেমনি মোর প্রতি।
     বিহঙ্গ যথা উড়িবার মুখে
          পাখায় ভূমিরে হানে,
তেমনি আমার অন্তরবেগ
     লাগুক তোমার প্রাণে।
                     ১৫
যথেমে দ্যাবাপৃথিবী সদ্যঃ পর্যেতি সূর্যঃ
            এবা পর্যেমি তে মনঃ।
                             --অথর্ববেদ, ৬. ৮. ৩
                ১৫
আকাশ-ধরা রবিরে ঘেরি
     যেমন করি ফেরে,
আমার মন ঘিরিবে ফিরি
     তোমার হৃদয়েরে।
                    ১৬
অক্ষ্যৌ নৌ মধুসংকাশে অনীকং নৌ সমঞ্জনম্॥
অন্তঃ কৃণুষ্ব মাং হৃদি মন ইন্নৌ সহাসতি।
                             --অথর্ববেদ, ৭. ৩৬. ১
                ১৬
আমাদের আঁখি   হোক মধুসিক্ত,
অপাঙ্গ হয়   যেন প্রেমে লিপ্ত।
হৃদয়ের ব্যবধান হোক মুক্ত,
আমাদের মন   হোক যোগযুক্ত।
                    ১৭
অহমস্মি সহমানাথো ত্বমসি সাসহিঃ।...........
      মামনু প্র তে মনঃ........
             পথা বারিব ধাবতু॥
                       --অথর্ববেদ,৩. ১৮. ৫-৬
                ১৭
যেমন আমি
     সর্বসহা শক্তিমতী,
তেমনি হও
     সর্বসহ আমার প্রতি।
আপন পথে
     যেমন হয় জলের গতি,
তোমার মন
     আসুক ধেয়ে আমার প্রতি।
আরো দেখুন
পায়ে চলার পথ
Stories
এই তো পায়ে চলার পথ।
এসেছে বনের মধ্যে দিয়ে মাঠে, মাঠের মধ্যে দিয়ে নদীর ধারে, খেয়াঘাটের পাশে বটগাছেরতলায়। তার পরে ও পারের ভাঙা ঘাট থেকে বেঁকে চলে গেছে গ্রামের মধ্যে; তার পরে তিসির খেতের ধার দিয়ে, আমবাগানের ছায়া দিয়ে, পদ্মদিঘির পাড় দিয়ে, রথতলার পাশ দিয়ে কোন্‌ গাঁয়ে গিয়ে পৌঁচেছে জানি নে।
আরো দেখুন
অস্পষ্ট
Stories
জানলার ফাঁকে ফাঁকে দেখা যায় সামনের বাড়ির জীবনযাত্রা। রেখা আর ছেদ, দেখা আর না-দেখা দিয়ে সেই ছবি আঁকা।
একদিন পড়ার বই পড়ে রইল, বনমালীর চোখ গেল সেই দিকে।
আরো দেখুন
অনধিকার প্রবেশ
Stories
একদা প্রাতঃকালে পথের ধারে দাঁড়াইয়া এক বালক আর-এক বালকের সহিত একটি অসমসাহসিক অনুষ্ঠান সম্বন্ধে বাজি রাখিয়াছিল। ঠাকুরবাড়ির মাধবীবিতান হইতে ফুল তুলিয়া আনিতে পারিবে কি না, ইহাই লইয়া তর্ক। একটি বালক বলিল 'পারিব', আর-একটি বালক বলিল 'কখনোই পারিবে না'।
কাজটি শুনিতে সহজ অথচ করিতে কেন সহজ নহে তাহার বৃত্তান্ত আর-একটু বিস্তারিত করিয়া বলা আবশ্যক।
আরো দেখুন
ঠাকুরদা
Stories
নয়নজোড়ের জমিদারেরা এককালে বাবু বলিয়া বিশেষ বিখ্যাত ছিলেন। তখনকার কালের বাবুয়ানার আদর্শ বড়ো সহজ ছিল না। এখন যেমন রাজা-রায়বাহাদুর খেতাব অর্জন করিতে অনেক খানা নাচ ঘোড়দৌড় এবং সেলাম-সুপারিশের শ্রাদ্ধ করিতে হয়, তখনো সাধারণের নিকট হইতে বাবু উপাধি লাভ করিতে বিস্তর দুঃসাধ্য তপশ্চরণ করিতে হইত।
আমাদের নয়নজোড়ের বাবুরা পাড় ছিঁড়িয়া ফেলিয়া ঢাকাই কাপড় পরিতেন, কারণ পাড়ের কর্কশতায় তাঁহাদের সুকোমল বাবুয়ানা ব্যথিত হইত। তাঁহারা লক্ষ টাকা দিয়া বিড়ালশাবকের বিবাহ দিতেন এবং কথিত আছে, একবার কোনো উৎসব উপলক্ষে রাত্রিকে দিন করিবার প্রতিজ্ঞা করিয়া অসংখ্য দীপ জ্বলাইয়া সূর্যকিরণের অনুকরণে তাঁহারা সাচ্চা রুপার জরি উপর হইতে বর্ষণ করিয়াছিলেন।
আরো দেখুন
যজ্ঞেশ্বরের যজ্ঞ
Stories
এক সময় যজ্ঞেশ্বরের অবস্থা ভালোই ছিল। এখন প্রাচীন ভাঙা কোঠাবাড়িটাকে সাপব্যাঙ-বাদুড়ের হস্তে সমর্পণ করিয়া খোড়ো ঘরে ভগবদগীতা লইয়া কালযাপন করিতেছেন।
এগারো বৎসর পূর্বে তাঁহার মেয়েটি যখন জন্মিয়াছিল তখন বংশের সৌভাগ্যশশী কৃষ্ণপক্ষের শেষকলায় আসিয়া ঠেকিয়াছে। সেইজন্য সাধ করিয়া মেয়ের নাম রাখিয়াছিলেন কমলা। ভাবিয়াছিলেন, যদি এই কৌশলে ফাঁকি দিয়া চঞ্চলা লক্ষ্মীকে কন্যারূপে ঘরে ধরিয়া রাখিতে পারেন। লক্ষ্মী সে ফন্দিতে ধরা দিলেন না, কিন্তু মেয়েটির মুখে নিজের শ্রী রাখিয়া গেলেন। বড়ো সুন্দরী মেয়ে।
আরো দেখুন
মণিহারা
Stories
সেই জীর্ণপ্রায় বাঁধাঘাটের ধারে আমার বোট লাগানো ছিল। তখন সূর্য অস্ত গিয়াছে।
বোটের ছাদের উপরে মাঝি নমাজ পড়িতেছে। পশ্চিমের জ্বলন্ত আকাশপটে তাহার নীরব উপাসনা ক্ষণে ক্ষণে ছবির মতো আঁকা পড়িতেছিল। স্থির রেখাহীন নদীর জলের উপর ভাষাতীত অসংখ্য বর্ণচ্ছটা দেখিতে দেখিতে ফিকা হইতে গাঢ় লেখায়, সোনার রঙ হইতে ইস্পাতের রঙে, এক আভা হইতে আর-এক আভায় মিলাইয়া আসিতেছিল।
আরো দেখুন
সংস্কার
Stories
চিত্রগুপ্ত এমন অনেক পাপের হিসাব বড়ো অক্ষরে তাঁর খাতায় জমা করেন যা থাকে পাপীর নিজের অগোচরে। তেমনি এমন পাপও ঘটে যাকে আমিই চিনি পাপ বলে, আর-কেউ না। যেটার কথা লিখতে বসেছি সেটা সেই জাতের। চিত্রগুপ্তের কাছে জবাবদিহি করবার পূর্বে আগে-ভাগে কবুল করলে অপরাধের মাত্রাটা হাল্‌কা হবে।
ব্যাপারটা ঘটেছিল কাল শনিবার দিনে। সেদিন আমাদের পাড়ায় জৈনদের মহলে কী একটা পরব ছিল। আমার স্ত্রী কলিকাকে নিয়ে মোটরে করে বেরিয়েছিলুম-- চায়ের নিমন্ত্রণ ছিল বন্ধু নয়নমোহনের বাড়িতে।
আরো দেখুন