বাঁশি
Stories
বাঁশির বাণী চিরদিনের বাণী--শিবের জটা থেকে গঙ্গার ধারা, প্রতি দিনের মাটির বুক বেয়ে চলেছে; অমরাবতীর শিশু নেমে এল মর্ত্যের ধূলি দিয়ে স্বর্গ-স্বর্গ খেলতে।
পথের ধারে দাঁড়িয়ে বাঁশি শুনি আর মন যে কেমন করে বুঝতে পারি নে। সেই ব্যথাকে চেনা সুখদুঃখের সঙ্গে মেলাতে যাই, মেলে না। দেখি, চেনা হাসির চেয়ে সে উজ্জ্বল, চেনা চোখের জলের চেয়ে সে গভীর।
আরো দেখুন
পান্নালাল
Stories
দাদামশায়, তোমার পাগলের দলের মধ্যে পান্নালাল ছিল খুব নতুন রকমের।
জান, দিদি? তোমার পাগলরা প্রত্যেকেই নতুন, কারও সঙ্গে কারও মিল হয় না। যেমন তোমার দাদামশায়। বিধাতার নতুন পরীক্ষা। ছাঁচ তিনি ভেঙে ফেলেন। সাধারণ লোকের বুদ্ধিতে মিল হয়, অসাধারণ পাগলের মিল হয় না। তোমাকে একটা উদাহরণ দেখাই--
আরো দেখুন
রাসমণির ছেলে
Stories
কালীপদর মা ছিলেন রাসমণি-- কিন্তু তাঁহাকে দায়ে পড়িয়া বাপের পদ গ্রহণ করিতে হইয়াছিল। কারণ, বাপ মা উভয়েই মা হইয়া উঠিলে ছেলের পক্ষে সুবিধা হয় না। তাঁহার স্বামী ভবানীচরণ ছেলেকে একেবারেই শাসন করিতে পারেন না।
তিনি কেন এত বেশি আদর দেন তাহা জিজ্ঞাসা করিলে তিনি যে উত্তর দিয়া থাকেন তাহা বুঝিতে হইলে পূর্ব ইতিহাস জানা চাই।
আরো দেখুন
সতেরো বছর
Stories
আমি তার সতেরো বছরের জানা।
কত আসাযাওয়া, কত দেখাদেখি, কত বলাবলি; তারই আশেপাশে কত স্বপ্ন, কত অনুমান, কত ইশারা; তারই সঙ্গে সঙ্গে কখনো বা ভোরের ভাঙা ঘুমে শুকতারার আলো, কখনো বা আষাঢ়ের ভরসন্ধ্যায় চামেলিফুলের গন্ধ, কখনো বা বসন্তের শেষ প্রহরে ক্লান্ত নহবতের পিলুবারোয়াঁ; সতেরো বছর ধরে এই-সব গাঁথা পড়েছিল তার মনে।
আরো দেখুন
একটি দিন
Stories
মনে পড়ছে সেই দুপুরবেলাটি। ক্ষণে ক্ষণে বৃষ্টিধারা ক্লান্ত হয়ে আসে, আবার দমকা হাওয়া তাকে মাতিয়ে তোলে।
ঘরে অন্ধকার, কাজে মন যায় না। যন্ত্রটা হাতে নিয়ে বর্ষার গানে মল্লারের সুর লাগালেম।
আরো দেখুন
দৃষ্টিদান
Stories
শুনিয়াছি, আজকাল অনেক বাঙালির মেয়েকে নিজের চেষ্টায় স্বামী সংগ্রহ করিতে হয়। আমিও তাই করিয়াছি, কিন্তু দেবতার সহায়তায়। আমি ছেলেবেলা হইতে অনেক ব্রত এবং অনেক শিবপূজা করিয়াছিলাম।
আমার আটবৎসর বয়স উত্তীর্ণ না হইতেই বিবাহ হইয়া গিয়াছিল। কিন্তু পূর্বজন্মের পাপবশত আমি আমার এমন স্বামী পাইয়াও সম্পূর্ণ পাইলাম না। মা ত্রিনয়নী আমার দুইচক্ষু লইলেন। জীবনের শেষমুহূর্ত পর্যন্ত স্বামীকে দেখিয়া লইবার সুখ দিলেন না।
আরো দেখুন
ভারত রে, তোর কলঙ্কিত পরমাণুরাশি
Songs
              ভারত রে, তোর কলঙ্কিত পরমাণুরাশি
        যত দিন সিন্ধু না ফেলিবে গ্রাসি  তত দিন তুই কাঁদ্‌ রে ।
        এই হিমগিরি স্পর্শিয়া আকাশ  প্রাচীন হিন্দুর কীর্তি-ইতিহাস
        যত দিন তোর শিয়রে দাঁড়ায়ে  অশ্রুজলে তোর বক্ষ ভাসাইবে
                    তত দিন তুই কাঁদ্‌ রে ।।
        যে দিন তোমার গিয়াছে চলিয়া  সে দিন তো আর আসিবে না ।
        যে রবি পশ্চিমে পড়েছে ঢলিয়া  সে আর পুরবে উঠিবে না ।
        এমনি সকল নীচ হীনপ্রাণ  জনমেছে তোর কলঙ্কী সন্তান
        একটি বিন্দু অশ্রুও কেহ  তোমার তরে দেয় না ঢালি ।
      যে দিন তোমার তরে শোণিত ঢালিত  সে দিন যখন গিয়াছে চলি
                    তখন, ভারত, কাঁদ্‌ রে ।।
        তবে বিধি কেন এত অলঙ্কারে  রেখেছ সাজায়ে ভারতকায় ।
        ভারতের বনে পাখি গায় গান,  স্বর্ণমেঘ-মাখা ভারতবিমান—
        হেথাকার লতা ফুলে ফুলে ভরা,  স্বর্ণশস্যময়ী হেথাকার ধরা—
                    প্রফুল্ল তটিনী বহিয়ে যায় ।
        কেন লজ্জাহীনা অলঙ্কার পরি    রোগশুষ্কমুখে হাসিরাশি ভরি
                    রূপের গরব করিস্‌ হায় ।
                যে দিন গিয়াছে সে তো ফিরিবে না,
                    তবে, রে ভারত, কাঁদ্‌ রে ।।
        ভারত, তোর এ কলঙ্ক দেখিয়া  শরমে মলিন মুখ লুকাইয়া
        আমরা যে কবি বিজনে কাঁদিব,  বিজনে বিষাদে বীণা ঝঙ্কারিব,
                    তাতেও যখন স্বাধীনতা নাই
                           তখন, ভারত, কাঁদ্‌ রে ।।
আরো দেখুন
29
Verses
এ জীবনে সুন্দরের পেয়েছি মধুর আশীর্বাদ,
মানুষের প্রীতিপাত্রে পাই তাঁরি সুধার আস্বাদ!
দুঃসহ দুঃখের দিনে
অক্ষত অপরাজিত আত্মারে লয়েছি আমি চিনে।
আসন্ন মৃত্যুর ছায়া যেদিন করেছি অনুভব
সেদিন ভয়ের হাতে হয় নি দুর্বল পরাভব।
মহত্তম মানুষের স্পর্শ হতে হই নি বঞ্চিত,
তাঁদের অমৃতবাণী অন্তরেতে করেছি সঞ্চিত।
জীবনের বিধাতার যে দাক্ষিণ্য পেয়েছি জীবনে
তাহারি স্মরণলিপি রাখিলাম সকৃতজ্ঞমনে।
আরো দেখুন
ঘাটের কথা
Stories
পাষাণে ঘটনা যদি অঙ্কিত হইত তবে কতদিনকার কত কথা আমার সোপানে সোপানে পাঠ করিতে পারিতে। পুরাতন কথা যদি শুনিতে চাও, তবে আমার এই ধাপে বইস; মনোযোগ দিয়া জলকল্লোলে কান পাতিয়া থাকো, বহুদিনকার কত বিস্মৃত কথা শুনিতে পাইবে।
আমার আর-একদিনের কথা মনে পড়িতেছে। সেও ঠিক এইরূপ দিন। আশ্বিন মাস পড়িতে আর দুই-চারি দিন বাকি আছে। ভোরের বেলায় অতি ঈষৎ মধুর নবীন শীতের বাতাস নিদ্রোত্থিতের দেহে নূতন প্রাণ আনিয়া দিতেছে। তরু-পল্লব অমনি একটু একটু শিহরিয়া উঠিতেছে।
আরো দেখুন
মুনশি
Stories
আচ্ছা দাদামশায়, তোমাদের সেই মুনশিজি এখন কোথায় আছেন।
এই প্রশ্নের জবাব দিতে পারব তার সময়টা বুঝি কাছে এসেছে, তবু হয়তো কিছুদিন সবুর করতে হবে।
আরো দেখুন