উৎসর্গ
Stories
শেষ পারানির খেয়ায় তুমি
    দিনশেষের নেয়ে
আরো দেখুন
দেনাপাওনা
Stories
পাঁচ ছেলের পর যখন এক কন্যা জন্মিল তখন বাপমায়ে অনেক আদর করিয়া তাহার নাম রাখিল নিরুপমা। এ গোষ্ঠীতে এমন শৌখিন নাম ইতিপূর্বে কখনো শোনা যায় নাই। প্রায় ঠাকুরদেবতার নামই প্রচলিত ছিল-- গণেশ, কার্তিক, পার্বতী, তাহার উদাহরণ।
এখন নিরুপমার বিবাহের প্রস্তাব চলিতেছে। তাহার পিতা রামসুন্দর মিত্র অনেক খোঁজ করেন কিন্তু পাত্র কিছুতেই মনের মতন হয় না। অবশেষে মস্ত এক রায়বাহাদুরের ঘরের একমাত্র ছেলেকে সন্ধান করিয়া বাহির করিয়াছেন। উক্ত রায়বাহাদুরের পৈতৃক বিষয়-আশয় যদিও অনেক হ্রাস হইয়া আসিয়াছে কিন্তু বনেদি ঘর বটে।
আরো দেখুন
43
Verses
I.82. pani vic min piyasi
I LAUGH WHEN I hear that the fish in the water is thirsty:
You do not see that the Real is in your home, and you wander from forest to forest listlessly!
Here is the truth! Go where you will, to Benares or to Mathura; if you do not find your soul, the world is unreal to you.
আরো দেখুন
তপস্বিনী
Stories
বৈশাখ প্রায় শেষ হইয়া আসিল। প্রথমরাত্রে গুমট গেছে, বাঁশগাছের পাতাটা পর্যন্ত নড়ে না, আকাশের তারাগুলো যেন মাথা-ধরার বেদনার মতো দব্‌ দব্‌ করিতেছে। রাত্রি তিনটের সময় ঝির্‌ঝির্‌ করিয়া একটুখানি বাতাস উঠিল। ষোড়শী শূন্য মেঝের উপর খোলা জানলার নীচে শুইয়া আছে, একটা কাপড়ে-মোড়া টিনের বাক্স তার মাথার বালিশ। বেশ বোঝা যায়, খুব উৎসাহের সঙ্গে সে কৃচ্ছসাধন করিতেছে।
প্রতিদিন ভোর চারটের সময় উঠিয়া স্নান সারিয়া ষোড়শী ঠাকুরঘরে গিয়া বসে। আহ্নিক করিতে বেলা হইয়া যায়। তার পরে বিদ্যারত্নমশায় আসেন; সেই ঘরে বসিয়াই তাঁর কাছে সে গীতা পড়ে। সংস্কৃত সে কিছু কিছু শিখিয়াছে। শঙ্করের বেদান্তভাষ্য এবং পাতঞ্জলদর্শন মূল গ্রন্থ হইতে পড়িবে, এই তার পণ। বয়স তার তেইশ হইবে।
আরো দেখুন
11
Verses
মাঝরাতে ঘুম এল, লাউ কেটে দিতে
ছিঁড়ে গেল ভুলুয়ার ফতুরায় ফিতে।
খুদু বলে, মামা আসে, এই বেলা লুকো।
কানাই কাঁদিয়া বলে, কোথা গেল হুঁকো।
নাতি আসে হাতি চড়ে, খুড়ো বলে, আহা,
মারা বুঝি গেল আজ সনাতন সাহা।
তাঁতিনীর নাতিনীর সাথিনী সে হাসে;
বলে, আজ ইংরেজি মাসের আঠাশে।
তাড়া খেয়ে ন্যাড়া বলে, চলে যাব রাঁচি।
ঠাণ্ডায় বেড়ে গেল বাঁদরের হাঁচি।
কুকুরের লেজে দেয় ইন্‌জেক্‌শ্যান,
মান্থলি টিকিট কেনে জলধর সেন।
পাঁজি লেখে, এ বছরে বাঁকা এ কালটা,
ত্যাড়াবাঁকা বুলি তার উলটা-পালটা--
ঘুলিয়ে গিয়েছে তার বেবাক খবর--
জানি নে তো কে যে কারে দিচ্ছে কবর।
আরো দেখুন
প্রকাশ
Verses
খুঁজতে যখন এলাম সেদিন কোথায় তোমার গোপন অশ্রুজল,
           সে পথ আমায় দাও নি তুমি বলে।
বাহির-দ্বারে অধীর খেলা, ভিড়ের মাঝে হাসির কোলাহল,
                    দেখে এলেম চলে।
              এই ছবি মোর ছিল মনে--
              নির্জনমন্দিরের কোণে
                    দিনের অবসানে
সন্ধ্যাপ্রদীপ আছে চেয়ে ধ্যানের চোখে সন্ধ্যাতারার পানে।
              নিভৃত ঘর কাহার লাগি
              নিশীত-রাতে রইল জাগি,
                    খুলল না তার দ্বার।
              হে চঞ্চলা, তুমি বুঝি
              আপনিও পথ পাও নি খুঁজি,
                    তোমার কাছে সে ঘর অন্ধকার।
জানি তোমার নিকুঞ্জে আজ পলাশ-শাখায় রঙের নেশা লাগে,
           আপন গন্ধে বকুল মাতোয়ারা।
কাঙাল সুরে দখিন বাতাস বনে বনে গুপ্ত কী ধন মাগে,
                    বেড়ায় নিদ্রাহারা।
              হায় গো তুমি জান না যে
              তোমার মনের তীর্থমাঝে
                         পূজা হয় নি আজও।
দেব্‌তা তোমার বুভুক্ষিত, মিথ্যা-ভূষায় কী সাজ তুমি সাজো।
              হল সুখের শয়ন পাতা,
              কণ্ঠহারের মানিক গাঁথা,
                       প্রমোদ-রাতের গান,
              হয় নি কেবল চোখের জলে
              লুটিয়ে মাথা ধুলার তলে
        আপন-ভোলা সকল-শেষের দান।
ভোলাও যখন তখন সে কোন্‌ মায়ার ঢাকা পড়ে তোমার 'পরে --
           ভুলবে যখন তখন প্রকাশ পাবে;
উষার মতো অমল হাসি জাগবে তোমার আঁখির নীলাম্বরে
                    গভীর অনুভাবে।
              ভোগ সে নহে, নয় বাসনা,
                  নয় আপনার উপাসনা,
                    নয়কো অভিমান--
সরল প্রেমের সহজ প্রকাশ, বাইরে যে তার নাই রে পরিমাণ।
              আপন প্রাণের চরম কথা
              বুঝবে যখন, চঞ্চলতা
                    তখন হবে চুপ।
              তখন দুঃখসাগর-তীরে
                  লক্ষ্মী উঠে আসবে ধীরে
                        রূপের কোলে পরম অপরূপ।
আরো দেখুন
পুনরাবৃত্তি
Stories
সেদিন যুদ্ধের খবর ভালো ছিল না। রাজা বিমর্ষ হয়ে বাগানে বেড়াতে গেলেন।
দেখতে পেলেন, প্রাচীরের কাছে গাছতলায় বসে খেলা করছে একটি ছোটো ছেলে আর একটি ছোটো মেয়ে।
আরো দেখুন
173
Verses
MY OFFERINGS are not for the temple at the end of the road,
but for the wayside shrines
that surprise me at every bend.
আরো দেখুন
ভিখারিনী
Stories
কাশ্মীরের দিগন্তব্যাপী জলদস্পর্শী শৈলমালার মধ্যে একটি ক্ষুদ্র গ্রাম আছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কুটিরগুলি আঁধার আঁধার ঝোপঝাপের মধ্যে প্রচ্ছন্ন। এখানে সেখানে শ্রেণীবদ্ধ বৃক্ষচ্ছায়ার মধ্য দিয়া একটি-দুইটি শীর্ণকায় চঞ্চল ক্রীড়াশীল নির্ঝর গ্রাম্য কুটিরের চরণ সিক্ত করিয়া, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপলগুলির উপর দ্রুত পদক্ষেপ করিয়া এবং বৃক্ষচ্যুত ফুল ও পত্রগুলিকে তরঙ্গে তরঙ্গে উলটপালট করিয়া, নিকটস্থ সরোবরে লুটাইয়া পড়িতেছে। দূরব্যাপী নিস্তরঙ্গ সরসী--লাজুক উষার রক্তরাগে, সূর্যের হেমময় কিরণে, সন্ধ্যার স্তরবিন্যস্ত মেঘমালার প্রতিবিম্বে, পূর্ণিমার বিগলিত জ্যোৎস্নাধারায় বিভাসিত হইয়া শৈললক্ষ্মীর বিমল দর্পণের ন্যায় সমস্ত দিনরাত্রি হাস্য করিতেছে। ঘনবৃক্ষবেষ্টিত অন্ধকার গ্রামটি শৈলমালার বিজন ক্রোড়ে আঁধারের অবগুণ্ঠন পরিয়া পৃথিবীর কোলাহল হইতে একাকী লুকাইয়া আছে। দূরে দূরে হরিৎ শস্যময় ক্ষেত্রে গাভী চরিতেছে, গ্রাম্য বালিকারা সরসী হইতে জল তুলিতেছে, গ্রামের আঁধার কুঞ্জে বসিয়া অরণ্যের ম্রিয়মাণ কবি বউকথাকও মর্মের বিষণ্ন গান গাহিতেছে। সমস্ত গ্রামটি যেন একটি কবির স্বপ্ন।
এই গ্রামে দুইটি বালক-বালিকার বড়োই প্রণয় ছিল। দুইটিতে হাত ধরাধরি করিয়া গ্রাম্যশ্রীর ক্রোড়ে খেলিয়া বেড়াইত; বকুলের কুঞ্জে কুঞ্জে দুইটি অঞ্চল ভরিয়া ফুল তুলিত; শুকতারা আকাশে ডুবিতে না ডুবিতে, উষার জলদমালা লোহিত না হইতে হইতেই সরসীর বক্ষে তরঙ্গ তুলিয়া ছিন্ন কমলদুটির ন্যায় পাশাপাশি সাঁতার দিয়া বেড়াইত। নীরব মধ্যাহ্নে স্নিগ্ধতরুচ্ছায় শৈলের সর্বোচ্চ শিখরে বসিয়া ষোড়শবর্ষীয় অমরসিংহ ধীর মৃদুলস্বরে রামায়ণ পাঠ করিত, দুর্দান্ত রাবণ-কর্তৃক সীতাহরণ পাঠ করিয়া ক্রোধে জ্বলিয়া উঠিত। দশমবর্ষীয়া কমলদেবী তাহার মুখের পানে স্থির হরিণনেত্র তুলিয়া নীরবে শুনিত, অশোকবনে সীতার বিলাপকাহিনী শুনিয়া পক্ষ্ণরেখা অশ্রুসলিলে সিক্ত করিত। ক্রমে গগনের বিশাল প্রাঙ্গণে তারকার দীপ জ্বলিলে, সন্ধ্যার অন্ধকার-অঞ্চলে জোনাকি ফুটিয়া উঠিলে, দুইটিতে হাত ধরাধরি করিয়া কুটিরে ফিরিয়া আসিত। কমলদেবী বড়ো অভিমানিনী ছিল; কেহ তাহাকে কিছু বলিলে সে অমরসিংহের বক্ষে মুখ লুকাইয়া কাঁদিত। অমর তাহাকে সান্ত্বনা দিলে, তাহারঅশ্রুজল মুছাইয়া দিলে, আদর করিয়া তাহার অশ্রুসিক্ত কপোল চুম্বন করিলে, বালিকার সকল যন্ত্রণা নিভিয়া যাইত। পৃথিবীর মধ্যে তাহার আর কেহই ছিল না; কেবল একটি বিধবা মাতা ছিল আর স্নেহময় অমরসিংহ ছিল, তাহারাই বালিকাটির অভিমান সান্ত্বনা ও ক্রীড়ার স্থল।
আরো দেখুন
হৈমন্তী
Stories
কন্যার বাপ সবুর করিতে পারিতেন, কিন্তু বরের বাপ সবুর করিতে চাহিলেন না। তিনি দেখিলেন,মেয়েটির বিবাহের বয়স পার হইয়া গেছে, কিন্তু আর কিছুদিন গেলে সেটাকে ভদ্র বা অভদ্র কোনো রকমে চাপা দিবার সময়টাও পার হইয়া যাইবে। মেয়ের বয়স অবৈধ রকমে বাড়িয়া গেছে বটে, কিন্তু পণের টাকার আপেক্ষিক গুরুত্ব এখনো তাহার চেয়ে কিঞ্চিৎ উপরে আছে, সেইজন্যই তাড়া।
আমি ছিলাম বর। সুতরাং, বিবাহসম্বন্ধে আমার মত যাচাই করা অনাবশ্যক ছিল। আমার কাজ আমি করিয়াছি, এফ.এ. পাস করিয়া বৃত্তি পাইয়াছি। তাই প্রজাপতির দুই পক্ষ, কন্যাপক্ষ ও বরপক্ষ ঘন ঘন বিচলিত হইয়া উঠিল।
আরো দেখুন
ভালোমানুষ
Stories
ছিঃ, আমি নেহাত ভালোমানুষ।
কুসমি বললে, কী যে তুমি বল তার ঠিক নেই। তুমি যে ভালোমানুষ সেও কি বলতে হবে। কে না জানে, তুমি ও পাড়ার লোটনগুণ্ডার দলের সর্দার নও। ভালোমানুষ তুমি বল কাকে।
আরো দেখুন