গ্রামে (graame)
নবীন প্রভাত কনক-কিরণে
নীরবে দাঁড়ায়ে গাছপালা--
কাঁপে মৃদু মৃদু কী যেন আরামে,
বায়ু বহে যায় সুধা-ঢালা।
নীল আকাশেতে নারিকেল-তরু,
ধীরে ধীরে তার পাতা নড়ে--
প্রভাত আলোতে কুঁড়েঘরগুলি,
জলে ঢেউগুলি ওঠে পড়ে।
দুয়ারে বসিয়া তপনকিরণে
ছেলেরা মিলিয়া করে খেলা,
মনে হয় সবি কী যেন কাহিনী
শুনেছিনু কোন্ ছেলেবেলা।
প্রভাতে যেন রে ঘরের বাহিরে
সে কালের পানে চেয়ে আছি,
পুরাতন দিন হোথা হতে এসে
উড়িয়ে বেড়ায় কাছাকাছি।
ঘর-দ্বার সব মায়া-ছায়া-সম,
কাহিনীতে গাঁথা খেলা-ধূলি--
মধুর তপন, মধুর পবন,
ছবির মতন কুঁড়েগুলি।
কেহ বা দোলায় কেহ বা দোলে,
গাছতলে মিলে করে মেলা,
বাঁশি হাতে নিয়ে রাখাল বালক
কেহ নাচে-গায় করে খেলা।
এমনি যেন রে কেটে যায় দিন,
কারো যেন কোনো কাজ নাই,
অসম্ভব যেন সকলি সম্ভব--
পেতেছে যেন রে যাহা চাই।
কেবলি যেন রে প্রভাততপনে,
প্রভাতপবনে, প্রভাতস্বপনে
বিরামে কাটায়, আরামে ঘুমায়
গাছপালা বন, কুঁড়েগুলি।
কাহিনীতে ঘেরা ছোটো গ্রামখানি,
মায়াদেবীর মায়া-রাজধানী,
পৃথিবী-বাহিরে কলপনা-তীরে
করিছে যেন রে খেলা-ধূলি।