গোধূলিলগ্ন
Verses
আমার গোধূলিলগন এল বুঝি কাছে--
গোধূলিলগন রে।
বিবাহের রঙে রাঙা হয়ে আসে
সোনার গগন রে।
শেষ করে দিল পাখি গান গাওয়া,
নদীর উপরে প'ড়ে এল হাওয়া,
ও পারের তীর, ভাঙা মন্দির
আঁধারে মগন রে।
আসিছে মধুর ঝিল্লিনূপুরে
গোধূলিলগন রে।
আমার দিন কেটে গেছে কখনো খেলায়,
কখনো কত কী কাজে।
এখন কি শুনি পূরবীর সুরে
কোন্ দূরে বাঁশি বাজে।
বুঝি দেরি নাই, আসে বুঝি আসে,
আলোকের আভা লেগেছে আকাশে,
বেলাশেষে মোরে কে সাজাবে ওরে
নবমিলনের সাজে।
সারা হল কাজ, মিছে কেন আজ
ডাক মোরে আর কাজে।
এখন নিরিবিলি ঘরে সাজাতে হবে রে
বাসকশয়ন যে।
ফুলশেজ লাগি রজনীগন্ধা
হয় নি চয়ন যে।
সারা যামিনীর দীপ সযতনে
জ্বালায়ে তুলিতে হবে বাতায়নে,
যূথীদল আনি গুণ্ঠনখানি
করিব বয়ন যে।
সাজাতে হবে রে নিবিড় রাতের
বাসকশয়ন যে।
প্রাতে এসেছিল যারা কিনিতে বেচিতে
চলে গেছে তারা সব।
রাখালের গান হল অবসান,
না শুনি ধেনুর রব।
এই পথ দিয়ে প্রভাতে দুপুরে
যারা এল আর যারা গেল দূরে
কে তারা জানিত আমার নিভৃত
সন্ধ্যার উৎসব।
কেনাবেচা যারা করে গেল সারা
চলে গেল তারা সব।
আমি জানি যে আমার হয়ে গেছে গণা
গোধূলিলগন রে।
ধূসর আলোকে মুদিবে নয়ন
অস্তগগন রে--
তখন এ ঘরে কে খুলিবে দ্বার,
কে লইবে টানি বাহুটি আমার,
আমায় কে জানে কী মন্ত্রে গানে
করিবে মগন রে--
সব গান সেরে আসিবে যখন
গোধূলিলগন রে।
আরো দেখুন