১৪ (nodir ekta kone shushko mora)

নদীর একটা কোণে শুষ্ক মরা ডাল

স্রোতের ব্যাঘাত যদি করে,

সৃষ্টিশক্তি ভাসমান আবর্জনা নিয়ে

সেখানে প্রকাশ করে আপনার রচনাচাতুরী--

ছোটো দ্বীপ গড়ে তোলে, টেনে আনে শৈবালের দল,

তীরের যা পরিত্যক্ত নেয় সে কুড়ায়ে,

দ্বীপসৃষ্টি-উপাদানে যাহা-তাহা জোটায় সম্বল।

আমার রোগীর ঘরে আবদ্ধ আকাশে

তেমনি চলেছে সৃষ্টি

চৌদিকের সব হতে স্বতন্ত্র স্বরূপে।

তাহার কর্মের আবর্তন

ছোটো সীমাটিতে।

কপালেতে হাত দিয়ে দেখে

তাপ আছে কি না;

উদ্‌বিগ্ন চক্ষুর দৃষ্টি প্রশ্ন করে, ঘুম নেই কেন।

চুপিচুপি পা টিপিয়া

ঘরে আনে প্রভাতের আলো।

পথ্যের থালাটি নিয়ে হাতে

বার বার উপরোধে

রুচির বিরোধ লয় জিনি।

এলোমেলো যত-কিছু সযত্নে গুছায়ে রাখে

আঁচলে ধুলার রেশ ঝাড়ি।

দু হাতে সমান করি শয্যার কুঞ্চন

আসন প্রস্তুত রাখে শিয়রের কাছে

বিনিদ্র সেবার লাগি।

কথা হেথা ধীর স্বরে

দৃষ্টি হেথা বাষ্প দিয়ে ছোঁওয়া,

স্পর্শ হেথা কম্পিত করুণ--

জীবনের এই রুদ্ধ স্রোত

আপনার কেন্দ্রে আবর্তিত,

বাহিরের সংবাদের

ধারা হতে বিচ্ছিন্ন সুদূর।

একদিন বন্যা নামে, শৈবালের দ্বীপ যায় ভেসে;

পূর্ণ জীবনের যবে নামিবে জোয়ার

সেইমতো ভেসে যাবে সেবার বাসাটি,

সেথাকার দুঃখপাত্রে সুধাভরা এই ক'টা দিন।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

Rendition

Please Login first to submit a rendition. Click here for help.